চলে গেলেন মীনা কার্টুনের রূপদানকারী রাম মোহন

দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় কার্টুন চরিত্র মীনার রূপদানকারী রাম মোহন মারা গেছেন। ভারতীয় অ্যানিমেশনের জনক বলে খ্যাত এ কার্টুনিস্ট ৮৮ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেছেন।

শুক্রবার ভারতভিত্তিক অ্যানিমেশনবিষয়ক ওয়েবসাইট অ্যানিমেশন এক্সপ্রেস এ তথ্য জানিয়েছেন। এর আগে বৃহস্পতিবার তিনি মারা যান।

রাম মোহনকে বলা হয় ‘ফাদার অফ ইন্ডিয়ান অ্যানিমেশন’। ইন্ডিয়ার অ্যানিমেশন ইন্ডাস্ট্রির যাত্রা একরকম তার হাত ধরেই শুরু। বাংলাদেশের মানুষ তাকে চেনেন তার সৃষ্টি মীনা চরিত্রটি দিয়ে।

জানা যায়, খ্যাতনামা এ কার্টুনিস্টের ভারতীয় চলচ্চিত্রের জগতে কর্মজীবন শুরু হয়েছিল ১৯৫৬ সালে। ১৯৬৮ সালে তিনি চলচ্চিত্র বিভাগ থেকে সরে দাঁড়ান, কাজ শুরু করেন প্রসাদ প্রোডাকশনের অ্যানিমেশন বিভাগের প্রধান হিসেবে। ১৯৭২ সালে নিজের প্রতিষ্ঠান রাম মোহন বায়োগ্রাফিক্স চালু করেন, যা বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপনে কাজ করেছিল। জাপানের ইউগো সাকোর সহযোগিতায় যৌথভাবে জনপ্রিয় অ্যানিমেটেড ছবি ‘রামায়ণ: দ্য লিজেন্ড প্রিন্স রামা’ পরিচালনা করেছিলেন রামমোহন। সত্যজিৎ রায়ের ‘শতরঞ্জ কি খিলাড়ি’, মৃণাল সেনের ‘ভুবন সোম’ ইত্যাদি চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন।

১৯৯০-এর দশকে উপমহাদেশের মেয়েদের অধিকার সুংসহত করার লক্ষ্যে মীনা কার্টুন প্রচারের উদ্যোগ নেয় ইউনিসেফ। সেসময় সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি মুখাবয়ব সৃষ্টির জন্য তারা দ্বারস্থ হয় রাম মোহনের কাছে। পরে, তার রং-তুলিতেই ফুটে ওঠে মীনা কার্টুনের সবার পছন্দের রূপটি।

ফিলিপাইনের ম্যানিলাতে অবস্থিত হান্না-বারবারা স্টুডিওতেও মীনার প্রথম দিককার বেশ কিছু পর্ব নির্মিত হয়। পরে ভারতের রাম মোহন স্টুডিওতে মীনার বাকি পর্বগুলো নির্মাণ করা হয়। সিরিজগুলো পরিচালনা করেছিলেন রামমোহন নিজেই।

রামমোহনের মৃত্যুর খবরে ভারতে অ্যানিমেশনশিল্পীরা শোক জানিয়ে টুইট করেছেন। প্রবীণ শিল্পী আশীষ কুলকার্নি লিখেছেন, ‘রামমোহন স্যার ভারতীয় অ্যানিমেশনের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন। তিনি সব ধরনের অ্যানিমেশনে বিপুল শিল্পী তৈরি করেছিলেন। তারা বেশ কয়েক দশক ধরে শিল্পের শক্ত স্তম্ভ হয়ে উঠেছেন।

 

টাইমস/এইচইউ

Share this news on: