শ্রীলঙ্কায় মুখমণ্ডল ঢাকা নিষিদ্ধ

শ্রীলঙ্কায় ইস্টার সানডেতে ভয়াবহ আত্মঘাতী হামলায় আড়াইশ জনের বেশি নিহত হওয়ার পর দেশটির প্রেসিডেন্ট পোশাক নিয়ে বিধিনিষেধ ঘোষণা করেছেন। প্রকাশ্য স্থানে মুখমণ্ডল ঢাকা থাকে এমন পোশাক পরিধান নিষিদ্ধ করেছে শ্রীলঙ্কা। খবর বিবিসির।

শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা জানিয়েছেন, জরুরি আইনের বিধিমালা প্রয়োগ করে তিনি এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন।

প্রেসিডেন্টের কার্যালয় বলছে, চিহ্নিত করার জন্য মুখ দেখা যায় না এমন যে কোনো পোশাকের ওপর নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে এবং এটি করা হয়েছে জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য।

মুসলিম নারীরা মুখ ঢেকে রাখতে যে বোরকা বা নিকাব পরিধান করেন সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কিছু বলা হয়নি। যদিও এ ধরনের পোশাককে টার্গেট করেই এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কায় গত রোববার ধারাবাহিক বোমা বিস্ফোরণে ২৫৩ জন নিহত হয়েছেন। আহত অন্তত ৫০০ জন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৩৯ জন বিদেশি নাগরিক। রোববার তিনটি গির্জা ও তিনটি বড় হোটেলে একযোগে বিস্ফোরণ ঘটে। ওই দিন খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব ইস্টার সানডে উপলক্ষে গির্জায় প্রার্থনা চলছিল। ওই সময় এসব বিস্ফোরণ ঘটে। ওই দিনই পরে আরও দুটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।

বেশ কিছু ব্যক্তিকে আটক করেছে কর্তৃপক্ষ যদিও স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বলছে আরও অনেক জঙ্গি ধরা-ছোঁয়ার বাইরে আছে।

পোশাকে নিষেধাজ্ঞা মানুষের ওপর প্রভাব পড়বে?

শ্রীলঙ্কায় শতাধিক বছর থেকেই মুসলিমরা বসবাস করছে এবং এখন মুসলিমদের সংখ্যাও সেখানে উল্লেখযোগ্য। তবে দেশটির মোট দুই কোটি দশ লাখ জনসংখ্যার মধ্যে মুসলিমদের সংখ্যা দশ শতাংশের নিচে।

শ্রীলঙ্কান মুসলিম নারীদের মধ্যে খুব অল্প সংখ্যকই শরীর ও মুখমণ্ডল ঢেকে এমন নিকাব বা বোরকা পরিধান করে থাকে। গত সপ্তাহে শ্রীলঙ্কার একজন এমপিও নিরাপত্তাজনিত কারণে বোরকা পরিধানে নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তাব তুলেছিলেন।

দেশটির মুসলিম ধর্মীয় নেতাদের সংগঠন অল সেলন জামিয়াতুল উলামাও মুখ ঢাকা পড়ে যায় এমন পোশাক পরিধান থেকে বিরত থাকার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বলে খবর প্রকাশ করেছে ইন্ডিয়া টুডে। এদিকে সপ্তাহ শেষে গির্জা ও মসজিদের নিরাপত্তায় বহু সৈন্য মোতায়েন করা হয়েছে। বন্ধ করা হয়েছিল গির্জার কার্যক্রমও।

শ্রীলঙ্কা কর্তৃপক্ষ কথিত ইসলামিক স্টেটের অন্তত ১৪০ জন অনুসারিকে খুঁজছে। শুক্রবার জঙ্গি হামলার জন্য অভিযুক্ত জাহরান হাশিমের বাবা ও দুই ভাই পুলিশি অভিযানে নিহত হয়েছে।

কলম্বোতে আত্মঘাতী হামলায় নিহত জাহরান হাশিম ন্যাশনাল তাওহীদ জামাত নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠান করেছিলেন। এবারের হামলার জন্য এ সংগঠনকেই দায়ী করছে শ্রীলঙ্কা কর্তৃপক্ষ।

 

টাইমস/এসআই

Share this news on: