মুসলিমদের বিশ্বাস জয় করতে হবে: মোদি

ভারতীয় পার্লামেন্টের সেন্ট্রাল হলে নরেন্দ্র মোদি পা রাখার ঠিক আগে ফুল দিয়ে সাজিয়ে রাখা সংবিধানের ওপরের আস্তরণটা সরিয়ে নেয়া হলো। তৈরি হলো দিনের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ছবির প্রেক্ষাপট।

বিজেপি সংসদীয় দলের নেতা, তারপরে আনুষ্ঠানিকভাবে এনডিএ-র সংসদীয় দলনেতা নির্বাচিত হওয়ার পরে সেই সংবিধানেই মাথা ছোঁয়ালেন নরেন্দ্র মোদি। এবং ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’-এর সঙ্গে নতুন মন্ত্র যোগ করলেন, ‘সবকা বিশ্বাস’।

কাদের বিশ্বাস? সংখ্যালঘুদের। স্পষ্ট করে বললে, মুসলমানদের। যারা বিজেপি-কে ভোট দেন না ধরে নিয়েই এ দেশের রাজনীতির হিসাব কষা হয়। বিজেপি নেতারাও মুসলমানদের ভোট মিলবে না ধরে নিয়েই অংক কষেন। রাষ্ট্রপতির কাছে নতুন সরকার গঠনের দাবি জানাতে যাওয়ার আগে আজ নরেন্দ্র মোদির প্রতিজ্ঞা, ‘ওদের(মুসলিমদের) বিশ্বাস জয় করতে হবে।’

রোববার সংসদের সেন্ট্রাল হলে বিজেপি সাংসদদের উদ্দেশে নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে সংখ্যালঘুদের সঙ্গে ছলনা করে তাদের আতঙ্কিত করে রাখা হয়েছে। তার থেকে ভালো হত, যদি সংখ্যালঘুদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করা হত। ২০১৯ সালে আমি আপনাদের থেকে আশা করব যে এই ছলনায় ছিদ্র করতে হবে। আমাদের বিশ্বাস জিততে হবে।’

রোববার সংবিধানে মাথা ছুঁইয়ে মোদি বলেন, ‘সংবিধানকে সাক্ষী রেখে আমরা প্রতিজ্ঞা করছি যেসব বর্গের মানুষকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে হবে। ধর্ম-জাতির ভিত্তিতে কোনো ভেদাভেদ হবে না। সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, এবং তার সঙ্গে সবকা বিশ্বাস আমাদের মন্ত্র হবে।’

মুসলিমদের ওপর গত পাঁচ বছর গোরক্ষক বাহিনীর হামলার ঘটনায় বারবার মোদির দিকে আঙুল উঠেছে। লোকসভা ভোটের আগে মার্কিন পত্রিকা তাকে ভারতের ‘ডিভাইডার ইন চিফ’ তকমা দিয়েছিল। আজ মোদির কথা শুনে বিজেপি নেতাদের মনে হয়েছে, তিনি এ বার বিজেপির ‘সংখ্যালঘু বিরোধী’ তকমা ঝেড়ে ফেলতে চান।

নরেন্দ্র মোদির দাবি, গরিবরা তার ওপর বিশ্বাস রেখেছেন। গরিবরাই নতুন সরকার গড়েছেন। এ বার সমাজের বাকি সব বর্গের বিশ্বাস জিততে হবে।

‘দেশে গরিবরা রাজনৈতিক তর্ক-বিতর্কের বিষয় হয়ে গিয়েছিল। পাঁচ বছর সরকারে থাকার পর বলতে পারি, গরিবদের সঙ্গে যে ছলনা চলছিল, তাতে ছিদ্র করে আমরা সোজাসুজি গরিবদের কাছে পৌঁছে গিয়েছি। গরিবদের সঙ্গে যে প্রতারণা হয়েছে, সেই একই প্রতারণা সংখ্যালঘুদের সঙ্গেও হয়েছে।’

৩০৩ আসনে বিজেপির এবং ৩৫৩ আসনে এনডিএর জয়কে অমিত শাহ ‘প্রচণ্ড বহুমত’ আখ্যা দিয়েছেন। তবে গুরুত্ব কমার আশঙ্কায় ভুগছে বিজেপির শরিক দলগুলো। সেই আশঙ্কা দূর করতে মোদি আজ বুকে হাত রেখে বলেছেন, এনডিএ-কেও আরও মজবুত করতে হবে। আরও অনেককে এনডিএ-র সঙ্গে জুড়তে হবে।

ভারতের প্রয়াত সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর মৃত্যুর পরে সংসদের সেন্ট্রাল হলে তার বিশাল ছবি টাঙানো হয়েছে। তার দিকে তাকিয়ে মোদি বলেন, ‘অটলজি যেমন এনডি-র সম্প্রসারণ করেছিলেন, আমাদেরও সেই পথে হাঁটতে হবে। আমাদের সাফল্য দেখে অটলজি আজ হাসছেন।’

 

 

টাইমস/এসআই

 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটে যাচ্ছে বেসরকারি অফডক, ব্যবসা-বাণিজ্যে বড় ক্ষতির আশঙ্কা! Dec 10, 2025
জোভান ও তটিনীর অভিনয়ে নতুন ত্রিকোণ প্রেম Dec 10, 2025
img
আইপিএলে ২ বছরের জন্য নিষিদ্ধ হ্যারি ব্রুক! Dec 10, 2025
img
শাকিব নির্ভরতা ‘সুসংবাদ নয়’ মন্তব্য অপু বিশ্বাসের Dec 10, 2025
img
ইতিহাস গড়ে টানা দ্বিতীয়বার সেরা খেলোয়াড় মেসি Dec 10, 2025
img
চ্যাম্পিয়নস লিগে রাতে মাঠে নামছে রিয়াল মাদ্রিদ-ম্যান সিটি Dec 10, 2025
img
বাড়ির বাথরুম পরিষ্কার করতে রাজি, রাজনীতিতে না: পৌষালী ব্যানার্জি Dec 10, 2025
img
ভারতের ২য় বোলার হিসেবে ১০০ উইকেটের মাইলফলক বুমরাহর Dec 10, 2025
img
জেলেনস্কিকে কঠোর সমালোচনা, ইউক্রেনে নির্বাচনের দাবি ট্রাম্পের Dec 10, 2025
img
সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটাচ্ছেন মামদানি Dec 10, 2025
img
নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী মাচাদোর অনুষ্ঠানে আসা নিয়ে নিশ্চিত নয় কমিটি Dec 10, 2025
img
দেশ ও দেশের মানুষ বিএনপির কাছেই নিরাপদ: ড. জালাল Dec 10, 2025
img
আমার সাফল্য আমার সিদ্ধান্তের ফল: প্রিয়াঙ্কা চোপড়া Dec 10, 2025
img
কাজের প্রতি শৃঙ্খলা ও ইতিবাচক মনোভাব অক্ষয়ের শক্তি Dec 10, 2025
img
বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সিইসির সাক্ষাৎ আজ Dec 10, 2025
img
ইউরোপকে ‘ক্ষয়িষ্ণু’ ও নেতাদের ‘দুর্বল’ বলে সমালোচনা করলেন ট্রাম্প Dec 10, 2025
img
তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস Dec 10, 2025
img
ঢাকায় বাড়ছে শীত, তাপমাত্রা ১৬ ডিগ্রির ঘরে Dec 10, 2025
img
আজ বায়ুদূষণের শীর্ষে লাহোর, তালিকার ৬ষ্ঠ অবস্থানে ঢাকা Dec 10, 2025
img
৩য় অ্যাশেজের জন্য দল ঘোষণা করল অস্ট্রেলিয়া Dec 10, 2025