কাশ্মীরের ‘গাজায়’ কঠোর প্রতিরোধ  

দমননীতি জোরদার করার পরও কাশ্মীরের ‘গাজায়’ কঠোর প্রতিরোধের মুখে পড়েছে ভারতীয় আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী। অধিকৃত কাশ্মীরে গত শুক্রবার জুমার নামাজের পর সেখানে তুমুল বিক্ষোভ হয়। যদিও বিক্ষোভ দমাতে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে মোদি প্রশাসন।

এদিন বিক্ষোভকারীদের ওপর টিয়ারশেল নিক্ষেপসহ ব্যাপক ধরপাকড় চালানো হয়। তবে কাশ্মীরের ‘গাজাখ্যাত’ সৌরাপাড়ায় তেমন কিছুই করতে পারেনি প্রশাসন। সেখানে গত তিন সপ্তাহ ধরে টানা বিক্ষোভ চলছে। বিক্ষোভ দমাতে শুক্রবার সেখানে পুলিশ ঢুকতে চাইলেও উপত্যকাবাসীদের প্রবল প্রতিরোধের মুখে তারা পিছু হটে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, উপত্যাকার একটি পাহাড়কে আন্দোলনের কেন্দ্রস্থল হিসেবে বেছে নিয়েছে সৌরাপাড়াবাসী। সেখান থেকে সব বয়সী মানুষ মোদি সরকারের ৩৭০ ধারা বাতিলের প্রতিবাদে শুরু থেকেই আন্দোলন করে আসছে। শুক্রবারও যখন শত শত স্থানীয় ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেন তখন পুলিশ সেখানে ঢোকার চেষ্টা করে। তবে স্থানীয়রা তাদের রুখে দেয়।

পুলিশের প্রবেশ ঠেকাতে স্থানীয়রা ধাতুর পাত ও পাথর স্তূপ করে সৌরাপাড়ার সরু গলিগুলি বন্ধ করে দেন।শুক্রবার জুমার পর স্থানীয় মসজিদ এলাকায় তারা বিক্ষোভ করতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। তখন পুলিশের দিকে পাথর ছুড়ে প্রতিবাদ জানান তারা।

পুলিশও টিয়ার গ্যাস ও মরিচের গুঁড়ার গ্রেনেড(চিলি গ্রেনেড) নিক্ষেপ করে। কিন্তু প্রতিরোধের মুখে পড়ে পিছু হটে। তবে পুলিশের ছররা গুলিতে বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারী আহত হয়েছেন।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, নিরাপত্তা বাহিনী বারবার সৌরাপাড়ার ভেতরে ঢুকতে চেয়েছে। তারা টিয়ার গ্যাস ও ছররা গুলি ব্যবহার করেছ।

রৌফ নামের এক কাশ্মীরি বলেন, আমরা বাড়িতে কিংবা বাইরে-কোথাও নিরাপদ না। টিয়ার গ্যাসের ঝাঁজ থেকে রক্ষা পেতে তিনি নাকে-মুখে লবণ ঘষছিলেন।

শুক্রবার সকালে পাড়াটি শান্তই ছিল। দুপুরে নারী ও পুরুষরা দলবেঁধে স্থানীয় সবচেয়ে বড় মসজিদটিতে জুমা পড়তে যান। এরপর শুরু হয় বিক্ষোভ।

চলতি সপ্তাহে ভারত ও পাকিস্তানের জাতিসংঘের সামরিক পর্যবেক্ষক গোষ্ঠীর (ইউএনএমওজিআইপি) কার্যালয়ের দিকে বিক্ষোভের আহ্বান করে পোস্টার সাঁটানো হয়েছে। ভারত থেকে কাশ্মীরকে আলাদা করতে চাওয়া বিচ্ছিন্নতাবাদীদের এই প্রথম কোনো এমন আহ্বান।

কাশ্মীর নিয়ে দুই প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে প্রথম যুদ্ধ হয় ১৯৪৯ সালে। এরপরেই ইউএনএমওজিআইপি প্রতিষ্ঠা করা হয়।

 

টাইমস/এমএস 

 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
মেসিকে পেছনে ফেলে নতুন রেকর্ড গড়লেন ইয়ামাল Dec 26, 2025
img
নাতনিকে কাছে পেয়ে আবেগাপ্লুত নানি, উচ্ছ্বসিত জাইমা রহমান Dec 26, 2025
img
বিদ্যুৎস্পর্শে প্রাণ গেল ছাত্রদল নেতার Dec 26, 2025
img
বিয়ের পাত্রী দেখে ফেরার সময় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ কর্মী গ্রেপ্তার Dec 26, 2025
img
শরীয়তপুর-চাঁদপুর নৌ রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ ঘোষণা Dec 26, 2025
img
বিএনপির নতুন কর্মসূচি ঘোষণা Dec 26, 2025
img
কুষ্টিয়ায় বিএসএফের পুশইন চেষ্টায় বিজিবির বাঁধাতে ১৪ ভারতীয়কে ফেরত Dec 26, 2025
img
নোয়াখালীর প্রথম ম্যাচে নেই সৌম্য, সিলেট পর্বে অনিশ্চয়তা Dec 26, 2025
img

৩০০ ফিট মহাসড়কে

স্বেচ্ছাশ্রমে বর্জ্য অপসারণ করবে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি Dec 26, 2025
img
তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে আনন্দ মিছিল শেষে প্রাণ গেল বিএনপি নেতার Dec 26, 2025
img
অবসরের যাচ্ছেন বার্সেলোনার রাফিনিয়া আলকান্তারা Dec 26, 2025
img
বিপিএলের পর্দা উঠছে আজ, উদ্বোধনী ম্যাচে মুখোমুখি মিরাজ-শান্ত Dec 26, 2025
img
ঝালকাঠিতে হাদী ইস্যুতে একই মঞ্চে জামায়াত-এনসিপি-বৈছায়াসহ সব ইসলামি দল Dec 26, 2025
img
হিন্দু দেবতার মূর্তি ভাঙার কারণ নিয়ে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি থাইল্যান্ড সরকারের Dec 26, 2025
img
৪ স্তরের নিরাপত্তায় আজ জাতীয় স্মৃতিসৌধে যাচ্ছেন তারেক রহমান Dec 26, 2025
img
দাদা-দাদির কবর জিয়ারত করে নির্বাচনি কার্যক্রম শুরু রুমিন ফারহানার Dec 26, 2025
img
শুক্রবার দেশজুড়ে কর্মসূচির ডাক ইনকিলাব মঞ্চের Dec 26, 2025
img
২২ বছর পর ইউপি চেয়ারম্যানের পদ ছাড়লেন জামায়াতের এমপি প্রার্থী Dec 26, 2025
img
বিশ্ব গণমাধ্যমে ‘সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী’ হিসেবে আলোচনায় তারেক রহমান Dec 26, 2025
img
উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন Dec 26, 2025