‘সোনার আগুনে’ পুড়ছে আমাজন

‘পৃথিবীর ফুসফুস’ হিসেবে খ্যাত আমাজনে এ বছর রেকর্ডসংখ্যক আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৯ সালে আমাজনে যতগুলো অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, আর কখনো তা হয়নি।

ব্রাজিলের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা দ্য ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্পেস রিসার্চ (ইনপে) জানিয়েছে, ২০১৯ সালের প্রথম আট মাসে আমাজনে রেকর্ডসংখ্যক আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। ২০১৮ সালের এই সময়ের তুলনায় ২০১৯ সালে ৮৫ শতাংশ বেশি আগুন লেগেছে।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত আট মাসে আমাজনে ৭৫ হাজারেরও বেশি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। ২০১৮ সালের আগস্ট পর্যন্ত এই সংখ্যা ছিল প্রায় ৪০ হাজার।

জানা গেছে, আমাজনের লেলিহান শিখার পেছনে রয়েছে এর ভিতর লুকিয়ে থাকা সোনার খনি। অবৈধ উপায়ে সোনার খনির খোঁজ করছে স্থানীয় বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ। হাজার হাজার অবৈধ খনির সন্ধানকারী সোনার খোঁজে খননকাজ পরিচালনা করছেন।

গভীর জঙ্গলে শত শত হাইড্রলিক খনন মেশিন বসিয়ে সোনা উত্তোলন করা হচ্ছে। এই কাজের জন্য বনের ভেতরই চোরাকারবারিরা গড়ে তুলেছেন নিজেদের আস্তানা আর চলার পথ। এ জন্য তারা আমাজনের গাছ কাটছেন, নদীদূষণ এবং আদিবাসীদের জমি দখল করছেন।

পরিবেশবিদসহ বিশ্লেষকরা বলছেন, আমাজনে রয়েছে ২৪৫টি এলাকায় ২ হাজার ৩১২টি অবৈধ খনি। এসব খনি থেকে সোনা উত্তোলন করা হচ্ছে। অবৈধ উপায়ে সোনার খনির খোঁজ করাই আমাজনে আগুন লাগার পেছনে দায়ী।

আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- ব্রাজিলের ডানপন্থী প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারো সরকারের সঙ্গে শিল্পকারখানা ও সোনার খনির সন্ধানকারীদের মিত্র সম্পর্ক রয়েছে। তিনি খনিজ পদার্থ সমৃদ্ধ আদিবাসীদের ভূমি আইনের মাধ্যমে খনি খননকে বৈধ করে দেয়ার অঙ্গীকার করেছেন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে- ট্যাপাজোস নদীর অববাহিকাই খনি খনন সংকটের প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। হালকা একটি বিমানে করে আমাজনের ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা দেখা সম্ভব হয়েছে। সেখানে বন সাবাড় হচ্ছে এবং নদীর তীর উপচে বাদামি রঙের কাদার স্তূপ জমছে। প্রতিবছর এখানে অন্তত ৩০ টন স্বর্ণ অবৈধভাবে কেনাবেচা হয়।

এপ্রিলে ব্রাজিলের জাতীয় খনি সংস্থার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈধ উপায়ে প্রত্যেক বছর যে পরিমাণ সোনা বেচাকেনা হয়, তার চেয়ে ছয় গুণ বেশি হয় অবৈধভাবে। অবৈধ এই খনি শ্রমিকদের অধিকাংশ দরিদ্র শ্রেণির, যাদের কোনো শিক্ষা নেই। তারা স্বপ্ন দেখেন হঠাৎ ধনবান হয়ে যাবেন।

 

টাইমস/জিএস

Share this news on:

সর্বশেষ

img
পোস্টাল ব্যালটে প্রবাসীদের নিবন্ধন ছাড়াল ২ লাখ ৭৪ হাজার Dec 09, 2025
img
বাগেরহাটের চারটি সংসদীয় আসন নিয়ে আপিলে শুনানি চলছে Dec 09, 2025
img
পাথর ছোঁড়ার মধ্যেও নিজস্ব মাইলস্টোন গড়ার পরামর্শ শচীন টেন্ডুলকারের Dec 09, 2025
img
দুর্নীতিবাজদের নির্বাচিত করবেন না : দুদক চেয়ারম্যান Dec 09, 2025
ঈদে কার সিনেমা দর্শকপ্রিয়তা ও রেটিংয়ে শীর্ষে? Dec 09, 2025
শাহরুখপুত্রের বিনয়ী আচরণ দেখলেন তৃণা Dec 09, 2025
img
আপাতত ঢাকায় রেখেই চলবে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা Dec 09, 2025
img
ফার্নান্দেজের জোড়া গোলে জয় পেল ইউনাইটেড Dec 09, 2025
img
বিপিএলে তুষার ইমরানকে মেন্টর হিসেবে নিযুক্ত করল চট্টগ্রাম রয়্যালস Dec 09, 2025
img
ভারতের পণ্যে নতুন শুল্ক আরপের হুমকি দিলেন ট্রাম্প Dec 09, 2025
img
তফসিলের কাউন্টডাউন শুরু হতেই ফুটে উঠছে পুরনো রাজনৈতিক পুনরাবৃত্তি: জিল্লুর রহমান Dec 09, 2025
img
এমপি প্রার্থীকে ‘আল্লাহর পাঠানো ফেরেশতা’ আখ্যা দিলেন বিএনপি নেতা Dec 09, 2025
img
শেফিল্ড শিল্ড থেকে অবসরের ঘোষণা দিলেন মিচেল মার্শ Dec 09, 2025
img
গ্রামে গ্রামে বল প্রয়োগকারী বাহিনী তৈরি করেছিল হাসিনা: জি কে গউছ Dec 09, 2025
img

গুমের মামলায়

হাসিনাসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে শুনানি আজ Dec 09, 2025
img
ক্যানসার প্রতিরোধে সামাজিক সচেতনতা বাড়াতে হবে : মেয়র শাহাদাত Dec 09, 2025
img
জেনে নিন দেশের বাজারে আজ প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম Dec 09, 2025
img
যুক্তরাষ্ট্রের কাছে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চাইছেন জেলেনস্কি Dec 09, 2025
img
লয়্যালিটির বিনিময়ে আমি আরও বেশি দিই: স্বস্তিকা দত্ত Dec 09, 2025
img
রাজধানীতে শীতের আমেজ, কমছে তাপমাত্রা Dec 09, 2025