এই শীতে কে না চায় একটু বেশি সময় উষ্ণ কম্বলের নিচে থাকতে। তবে এটা কি শুধু একটু বাড়তি আরামের জন্যে নাকি এর সাথে স্বাস্থ্যের কোনো সম্পর্ক রয়েছে?
হ্যাঁ, গবেষণা বলছে, এই শীতে আপনি কেবল আরামের জন্যই বেশি সময় ঘুমাবেন তা নয়। বরং শীতে আপনার স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে হলে অতিরিক্ত সময় ঘুমানো উচিত।
সম্প্রতি “স্লিপ” জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, শীতকালে ছয় ঘণ্টার কম ঘুমালে দেহে পানিশূন্যতা বেড়ে যায়।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, স্বল্প বা দীর্ঘ ঘুমের সাথে কিডনির কার্যকারিতার সম্পর্ক রয়েছে, তবে ঘুমের সাথে পানিশূন্যতার সম্পর্ক কিভাবে রয়েছে তা নিয়ে খুব কম গবেষণা হয়েছে।
চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের ২৫ হাজারের বেশি মানুষের উপর গবেষণাটি পরিচালিত হয়।
ঘুমের সাথে পানিশূন্যতার সম্পর্ক জানতে ওই গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের ঘুমের অভ্যাস ও প্রস্রাবের নমুনা থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে যে, যারা রাতে গড়ে ছয় ঘণ্টা ঘুমায় তাদের ঘন ঘন প্রস্রাব হয়। যারা দৈনিক রাতে আট ঘণ্টা ঘুমায় এমন লোকদের তুলনায় তাদের শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দেয়ার সম্ভাবনা ১৬-৫৯ শতাংশ বেশি।
উল্লেখ্য, পিটুইটারি গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত এক প্রকার হরমোন- “ভেসোপ্রেসিন”, যা প্রস্রাব ক্রিয়া কমায় এবং রক্তচাপ বাড়ায়।
গবেষকরা বলছেন, দেহের অভ্যন্তরীণ তারল্য ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করতে ভূমিকা রাখে এই হরমোন।
পেনসিল্ভেনিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষক অ্যাশার রোজিনগার বলেন, “ঘুমন্ত অবস্থায় পিটুইটারি গ্রন্থি থেকে দ্রুত “ভেসোপ্রেসিন” হরমোন নিঃসৃত হয়। তাই ঘুম কম হলে এই হরমোনের নিঃসরণ কম হবে যা দেহে পানিশূন্যতা তৈরি করবে”।
তাই ঘুম কম হলে এবং এ কারণে শরীর খারাপ লাগলে বা ক্লান্তি লাগলে বেশি করে পানি খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন গবেষক রোজিনগার।
গবেষণায় বলা হয়, পানিশূন্যতার কারণে নেতিবাচক মনোভাব, দুশ্চিন্তা, মাথা ব্যথা, মাথা ঘোরা ও কিডনির কার্যক্ষমতা হ্রাসসহ নানা শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
তাই পানিশূন্যতা দূর করতে পানীয় ও খনিজ লবণ গ্রহণের পাশাপাশি অতিরিক্ত সময় ঘুমানো উচিত বলে গবেষণায় পরামর্শ দেয়া হয়।