আলোচিত ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির হত্যা মামলার রায় বৃহস্পতিবার ঘোষণা হতে পারে।
ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ এ রায় ঘোষণা করবেন। এর আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর ওই বিচারক রায়ের তারিখ ঘোষণা করেন। রায় ঘিরে ফেনীর সোনাগাজীতে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ।
নুসরাতের হত্যাকারীদের কঠিন শাস্তি দেখে যেতে চান নুসরাতের মা শিরিন আক্তার।
তিনি বলেন, ‘ঘুরে-ফিরে চোখের সামনে ভাসে ঝলসে যাওয়া নুসরাতের সেই বীভৎস ছবি, মেয়ের শরীরের পোড়া গন্ধ এখনও নাকে এসে লাগে। আমি ঘুমাতে পারি না।’
শিরিন আক্তার আরও বলেন, ‘আমার একমাত্র মেয়েকে ঘাতকরা যেভাবে হাত-পা বেঁধে পুড়িয়ে হত্যা করেছে, তেমন কঠিন সাজা যেন দেয়া হয় অভিযুক্ত প্রত্যেক আসামিকে। তাদের ফাঁসি দিলে তারা বিনা যন্ত্রণায় মরে যাবে। তাদেরও আমার মেয়ের মতো পুড়িয়ে সাজা কার্যকর করলে মৃত্যুর যন্ত্রণা বুঝতে পারত।’
মামলার বাদী ও নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান বলেন, ‘নুসরাতের কক্ষে তার কাপড়-চোপড়, বই-খাতা, আসবাবপত্র, সবই আছে; শুধু নেই আমার বোন। তার কক্ষে দিনের বেশিরভাগ সময় মা থাকেন। তিনি এ কক্ষেই নুসরাতকে বুকে জড়িয়ে ঘুমাতেন। নুসরাতের খাটে রাতেও থাকেন মা। সারা রাত দেখি, না ঘুমিয়ে জেগে আছেন। কোনো সান্ত্বনাতেও কিছু হয় না। আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি যেন হয়।’
গত ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়নের দায়ে অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলাকে আটক করে পুলিশ। পরে ৬ এপ্রিল ওই মাদরাসা কেন্দ্রের সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে নুসরাতের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয় অধ্যক্ষের অনুসারীরা।
৮ এপ্রিল নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান আট জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত চার জনসহ মোট ১২ জনের নামে সোনাগাজী মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে করা শ্লীলতাহানির মামলা তুলে না নেওয়ায় তার শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয় বলে বলা হয় মামলায়। ১০ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় নুসরাতের।
টাইমস/এসআই