আবরার হত্যার অভিযোগপত্র গ্রহণ, চারজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা  

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার অভিযোগপত্র গ্রহণ করেছেন আদালত। একই সঙ্গে এই মামলার পলাতক চার আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছেন বিচারক।

সোমবার ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম কায়সারুল ইসলাম অভিযোগপত্র গ্রহণ করে এই আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) হেমায়েত উদ্দিন খান।

অভিযোগপত্রভুক্ত পলাতক আসামিরা হলেন- এহতেশামুল রাব্বি তানিম (সিই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), মাহমুদুল জিসান (ইইই বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ), মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম (এমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ) এবং মুজতবা রাফিদ (কেমিকৌশল)। এছাড়া এই মামলায় কারাগারে থাকা বুয়েটের বাকি ২১ আসামিকে আদালতে হাজির করে পুলিশ।

এর আগে ১৩ নভেম্বর আবরার ফাহাদ হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে ২৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

ওইদিন অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেওয়া আগে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, তদন্তকালে সিসিটিভি ফুটেজ ও প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া হয়েছে। তদন্তে উঠে এসেছে, রাত ১০টার পরে আবরারকে নির্যাতন করা শুরু হয় এবং রাত ২টা ৫০ মিনিটে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। এর আগে যদি তাকে হাসপাতালে নেওয়া হত তাহলে হয়তো এমন পরিণতি হত না।

তিনি বলেছিলেন, আবরারকে হত্যায় সরাসরি যুক্ত ছিলেন ১১ জন। তারাই আবরারকে কয়েক দফায় মারপিট করেন। বাকি ১৪ জন বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্নভাবে এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন।

অভিযুক্ত ২৫ জনের মধ্যে এজাহারে নাম রয়েছে ১৯ জনের। এছাড়া তদন্তে প্রাপ্ত এজাহারের বাইরে ছয়জন। এজাহারভুক্ত ১৯ জনের মধ্যে ১৬ জন ও এজাহারবহির্ভূত ছয়জনের মধ্যে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারদের মধ্যে আটজন বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

গ্রেপ্তার ২১ জন হলেন- মেহেদী হাসান রাসেল, মো. অনিক সরকার, ইফতি মোশাররফ সকাল, মো. মেহেদী হাসান রবিন, মো. মেফতাহুল ইসলাম জিওন, মুনতাসির আলম জেমি, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভির, মো. মুজাহিদুর রহমান, মুহতাসিম ফুয়াদ, মো. মনিরুজ্জামান মনির, মো. আকাশ হোসেন, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মাজেদুর রহমান, শামীম বিল্লাহ, মোয়াজ আবু হুরায়রা, এ এস এম নাজমুস সাদাত, ইসতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, অমিত সাহা, মো. মিজানুর রহমান ওরফে মিজান, শামসুল আরেফিন রাফাত ও এস এম মাহমুদ সেতু।

ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ার জেরে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে গত ৬ অক্টোবর রাতে ডেকে নিয়ে যায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। এরপর রাত ৩টার দিকে শেরেবাংলা হলের নিচতলা ও দোতলার সিঁড়ির করিডোর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

নিহত আবরার বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন।

ওই ঘটনায় আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে চকবাজার থানায় ১৯ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেন।

‘আবরার হত্যাকাণ্ড: উচ্ছৃঙ্খলতার চরম বহি:প্রকাশ’

আবরার হত্যাকাণ্ড: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বললেন, চার্জশীট ‘নির্ভুল’

‘শিবির’ সন্দেহেই আবরার হত্যা:মনিরুল

আবরার হত্যায় ১৯ আসামি বহিষ্কার, বুয়েটে রাজনীতি নিষিদ্ধ

 

টাইমস/এইচইউ

Share this news on: