মোদির বাংলাদেশ সফর কি বাতিল সম্ভব?

স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কি অংশ নিতে পারবেন? কারণ মোদি যেন এ অনুষ্ঠানে আসতে না পারে সেজন্য জোরদার দাবি উঠেছে বাংলাদেশের ডান ও বামপন্থী বিভিন্ন সংগঠনের তরফে। সম্প্রতি ভারতের রাজধানী দিল্লিতে মুসলিমদের ওপর সহিংস হামলার প্রতিবাদে মোদি বিরোধী বিক্ষোভও হয়েছে ঢাকায়।

তবে বিভিন্ন সংগঠন মোদির ঢাকা সফর বাতিলের দাবি করলেও সরকার তাদের সিদ্ধান্তেই অনড়। কারণ সম্প্রতি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে ভারতের সরকার প্রধান মোদিসহ ভারতীয় প্রতিনিধিদল অবশ্যই আসবে। এর কোন অন্যথা হওয়ার সুযোগ নেই।

এছাড়া বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন বলেছেন, মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানে মোদি আসবেন। কারণ অনেক আগেই তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।

জানা গেছে, ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিশেষ ভাবে উপস্থিত থাকবেন। কিন্তু সাম্প্রতিক দিল্লি পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে মোদি বিরোধী যে বিরূপ অবস্থা তৈরি হয়েছে, তাতে কি নিশ্চিত হওয়া যায় যে, মোদি বাংলাদেশে আসবেন?

এসব ব্যাপারে বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন জানিয়েছেন, মোদির বাংলাদেশে আগমন কোনো ভাবেই ঠেকানোর সুযোগ নেই। কারণ সরকারের আমন্ত্রণ প্রত্যাহার করা যায় না।

তৌহিদ হোসেন আরও বলেন, ভারতের কিছু কিছু ইস্যুকে কেন্দ্র করে উভয় দেশের সম্পর্ক কিছুটা নাজুক হলেও তা শোধরানোর মত। ভারতের সঙ্গে যেন বাংলাদেশের সার্বিক সম্পর্ক ঠিক থাকে সরকার সেদিকেই বেশি গুরুত্ব দেবে।

দিল্লির দাঙ্গা বিষয়ে সাবেক এই পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ভারতের কোন একটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাদের সরকার প্রধানের সফর প্রত্যাহার করা সমীচীন নয়। কারণ যেকোন পদক্ষেপ নেয়ার আগে ভূতাত্ত্বিক রাজনীতির বিষয়টি মাথায় রেখেই বাংলাদেশের সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত।

এ ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জোবাইদা নাসরিন বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান সরকার নানা বিষয়ে ভারতের ওপর নির্ভরশীল। কাজেই ভারতের বিপক্ষে যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে এই সরকার সর্বোচ্চ চিন্তা ভাবনা করবে।

জোবাইদা নাসরিন আরও বলেন, দিল্লির সহিংসতা নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া প্রকাশ পায়নি। এতেই অনেকটা পরিষ্কার যে সরকার ভারত সম্পর্কে কি নীতি অবলম্বন করছে।

তবে সরকারের অনেক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের হাইপ্রোফাইল নেতারা মনে করছেন, দিল্লি ইস্যুতে মোদির বাংলাদেশ সফর আটকে গেলে রাজনৈতিক ভাবে পিছিয়ে যাবে আওয়ামী লীগ। এছাড়া উভয় দেশের সম্পর্কেও নতুন সংকট তৈরি হতে পারে। সূত্র: বিবিসি বাংলা

 

টাইমস/এসএন/এইচইউ

Share this news on: