ফেনীর দগ্ধ মাদ্রাসাছাত্রীর চিকিৎসায় মেডিকেল বোর্ড গঠন

ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার  ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার দগ্ধ ছাত্রীর চিকিৎসার জন্য নয় সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করেছে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট। রোববার সকাল ১০টায় এই বোর্ড গঠন করা হয়।

ছাত্রীর শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সহকারী অধ্যাপক নাসির উদ্দিন বলেন, মেডিকেল বোর্ডের মতামতের ভিত্তিতে চিকিৎসা শুরু হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী আজ থেকে নল দিয়ে তাকে খাবার দেওয়া হচ্ছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। যেকোনো সময় পরিস্থিতি যেকোনো দিকে মোড় নিতে পারে।

শনিবার মাদ্রাসার প্রশাসনিক ভবনের ছাদে বান্ধবীকে মারধর করা হচ্ছে—এমন খবর পেয়ে সেখানে গিয়েছিলেন ছাত্রীটি। যাওয়ার পরই তাকে ঘিরে ধরেন বোরকা পরা চার-পাঁচজন ছাত্রী। তারা শাসাতে থাকেন, অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে কেন মিথ্যা অভিযোগ এনেছেন। জবাবে মেয়েটি বলেছিলেন, তিনি যে অভিযোগ করেছেন, তা সত্য এবং ‘শেষনিশ্বাস’ পর্যন্ত তিনি এর প্রতিবাদ করবেন। এরপর ওই ছাত্রীদের কেউ তার হাত, কেউ পা ধরেন এবং গায়ে আগুন ধরিয়ে দেন।

শনিবার চিকিৎসকেরা বলেছিলেন, আগুনে মেয়েটির শরীরের ৭৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। এর মধ্যে ৪০-৪৫ শতাংশই গভীর। সোনাগাজী থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনার পরপরই তার একটি অস্ত্রোপচার হয়েছে। এখন নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন। জরুরি বিভাগ থেকে আইসিইউতে স্ট্রেচারে করে নিয়ে যাওয়ার সময় মেয়েটির পরিবার জানায়, গত ২৭ মার্চ ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজ উদদৌলা নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে এই ছাত্রীর শ্লীলতাহানি করেন। এ ঘটনায় তার মায়ের করা মামলায় অধ্যক্ষ এখন কারাগারে।

কারাবন্দী অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা একসময় জামায়াতের রোকন ছিলেন বলে জানিয়েছেন ফেনী জেলা জামায়াতের আমির এ কে এম শামসুদ্দিন। বিভিন্ন অভিযোগে ২০১৬ সালে তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া নাশকতা ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগের ঘটনায় ফেনী সদর ও সোনাগাজী মডেল থানায় তার বিরুদ্ধে তিনটি মামলা রয়েছে। তখন তিনি গ্রেপ্তার হয়ে কারাভোগের পর জামিনে ছাড়া পান।

ছাত্রীর চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের মধ্যে রয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের জাতীয় সমন্বয়ক অধ্যাপক সামন্ত লাল সেন, অধ্যাপক আবুল কালাম, অধ্যাপক রাইহানা আউয়াল, অধ্যাপক নওয়াজেশ খান, অধ্যাপক লুৎফর কাদের, অধ্যাপক বিধান সরকার, অধ্যাপক মহিউদ্দিন, ডাক্তার জাহাঙ্গীর আলম ও জহিরুল ইসলাম।

 

 

টাইমস/এসআই

Share this news on:

সর্বশেষ

img
কেমন আছে কনটেন্ট ক্রিয়েটর আল আমিন! Dec 02, 2025
img
ইসলামপন্থিরা ক্ষমতায় গেলে চাঁদাবাজি থাকবে না: রেজাউল করীম Dec 02, 2025
img
বেগম জিয়ার উন্নত চিকিৎসায় ব্রিটিশ চিকিৎসক টিম আসবে বুধবার Dec 02, 2025
img
ব্যাপারটাকে ভীষণ এনজয় করি : সৌরভ Dec 02, 2025
img
নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন শিবিরের সাবেক নেতা Dec 02, 2025
img
নায়িকাদের চোখে নিরাপদ এবং সম্মানজনক নায়ক জিৎ: রবি কিনাগী Dec 02, 2025
img
বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী গণতান্ত্রিক পশ্চাৎ যাত্রার ধারা ঘুরিয়ে দিতে পারে : ইইউ রাষ্ট্রদূত Dec 02, 2025
img
কুকুরছানার ঘটনায় অপরাধীর সর্বোচ্চ শাস্তি চাইলেন নিলয় Dec 02, 2025
img

ফেডারেশন কাপ

ফর্টিজকে হারিয়ে গ্রুপের শীর্ষে মোহামেডান Dec 02, 2025
img
অপরাধীর কঠোরতম শাস্তি দাবি করলেন অভিনেত্রী জয়া আহসান Dec 02, 2025
img
এবার কমপ্লিট শাটডাউনে যাচ্ছেন প্রাথমিক শিক্ষকরা Dec 02, 2025
img

৮টি কুকুরছানা হত্যা

নিউজটা দেখার পর থেকে স্বাভাবিক হতে পারছি না: তৌসিফ মাহবুব Dec 02, 2025
img
খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় চীনের পর এবার যুক্তরাজ্যের বিশেষজ্ঞ দল আসছে Dec 02, 2025
img
নোংরা মানসিকতার উত্তর দেব কেন: মানসী সেনগুপ্ত Dec 02, 2025
img
১০ ফেব্রুয়ারি ভোটের ইঙ্গিত দিল ইসি Dec 02, 2025
আমরা চাইলে খেলা হবে, বোর্ড চাইলে খেলা হবে না Dec 02, 2025
img
বেগম জিয়াকে নিয়ে উৎকণ্ঠার মধ্যেও আলোর রেখা দেখতে পাচ্ছি: রিজভী Dec 02, 2025
img
ফের ভূমিকম্প, উৎপত্তিস্থল কোথায়? Dec 02, 2025
দেশবাসীর সম্মিলিত সমর্থনই আমাদের শক্তির উৎস: তারেক রহমান Dec 02, 2025
মাদুরোকে পদত্যাগের আল্টিমেটাম, উত্তেজনা বাড়ল ওয়াশিংটন-কারাকাসে Dec 02, 2025