সদরঘাটে শতাধিক কুলির একসঙ্গে ইফতার

রাজধানীর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল। প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী নৌ পথে যাতায়াত করেন এই টার্মিনাল দিয়ে। আর এসব যাত্রীদের মালামাল লঞ্চে উঠানামার কাজ করেন 'হলুদ বাহিনী' হিসবে পরিচিত শতাধিক কুলি। পবিত্র রমজান মাসেও তাদের ব্যস্ততা থাকে চোখে পড়ার মতো। রোজার শেষের দিকে শুরু হয় ঈদের ঘরমুখো মানুষের ভিড়। তখন আরও বেড়ে যায় কুলিদের ব্যস্ততা। 

তবে এখানে ইফতারের সময় তৈরি হয় অন্যরমক এক পরিবেশ। বিকাল ৫টার পর মালামাল টানা বন্ধ করে দেন তারা। জমায়েত হন ১৩ নম্বর পন্টুনে। শুরু হয় ইফতার সামগ্রী গোছানোর পর্ব। আজান পড়ার আগেই ইফতার নিয়ে বসে পড়েন তারা। সাধারণ যাত্রীদেরও আহ্বান করেন তাদের সঙ্গে ইফতার যোগ দেয়ার।

গত বুধবার সদরঘাটে সরেজমিন দেখা গেছে, বিকাল ৫টায় সদরঘাটের ১৩ নাম্বার পন্টুনের প্রবেশ পথের পাশে ৬-৭ জন করে আলাদা আলাদা বসে ইফতারির আয়োজন করছে। তিন ভাগে ভাগ হয়ে ইফতারির আয়োজন করছেন তারা। নদীর পাশে বাঁশের চাটাই বিছিয়ে আবার কেউ কেউ গামছা বিছিয়ে বসে পড়েছে। আর এদিকে বড় গামলায় পেঁয়াজু, ছোলা, বেগুনি, আলুর চপ ইত্যাদি মেখে বানানো হচ্ছে মজাদার ইফতার।

বাংলাদেশ টাইমসকে কুলিরা জানায়, তাদের একজন সুপারভাইজার রয়েছে। তার দায়িত্বে ইফতার কেনা হয়। প্রতিদিন প্রায় হাজার টাকার ইফতার কেনা হয়। তিন ভাগে ইফতার করা হয়। ইফতারের সময় সবাই মিলে টাকা তুলে ইফতার করেন তারা।

তারা আরও জানান, ২০০১ সাল থেকে এভাবে ইফতারের আয়োজন করছেন তারা। শুধু হলুদ বাহিনী নয়, ইফতারের সময় বিভিন্ন লঞ্চ যাত্রী, আনসার, লঞ্চের কর্মচারীসহ নানা শ্রেণির মানুষজন এসে জড়ো হন ইফতারের জন্য। সবাই একসঙ্গে বসে ইফতার করেন। গড়ে তোলেন সৌহার্দ্য।

ইউসুফ নামের এক কুলি জানান, সদরঘাটে থাকা টোকাই, ভবঘুরে আর ভিক্ষুকদেরও ইফতার করান তারা। ইফতার শেষে একসঙ্গে তারা লঞ্চ টার্মিনালে নামাজ পড়েন।

আসাদুল হক নামের আরেক কুলি জানান, রোজার মাসে তারা ভালো ভালো খাবার খায়। প্রথম থেকেই রোজায় উন্নতমানের ইফতার করছেন। বিভিন্ন নামিদামি ইফতার সামগ্রী কেনেন তারা। ইফতারের ২০-২৫ মিনিট পর তারা পুনরায় চলে যান যাত্রীদের মালামাল টানতে।

 

টাইমস/টিআর/এসআই

Share this news on:

সর্বশেষ

img
নির্বাচনী হলফনামায় বিদেশি সম্পদের বিবরণীও দিতে হবে: দুদক চেয়ারম্যান Nov 23, 2025
img
পেরুর সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেতসি চাভেসের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা Nov 23, 2025
img
২ দিনে টেস্ট জিতে অস্ট্রেলিয়ার ক্ষতি ২৪ কোটি টাকা! Nov 23, 2025
img
‘চিরদিনই তুমি যে আমার’- এর সেটে ফিরলেন জিতু কমল Nov 23, 2025
img
নিজের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ চিত্রনায়িকা পপির Nov 23, 2025
img
প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে টেস্টে তাইজুলের ২৫০ উইকেট Nov 23, 2025
img
আমার বাবা ও মা অসমের বড় সঙ্গীতশিল্পী ছিলেন: পাপন Nov 23, 2025
img
বায়োপিক একেবারেই পছন্দ করি না: আবির চ্যাটার্জি Nov 23, 2025
img
রৌমারী শুল্ক স্থলবন্দরে পাথরবোঝাই ট্রাক থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ Nov 23, 2025
img
একসময় বাড়ি ভাড়া চোকানোর মতো ক্ষমতাও আমার ছিল না: কার্তিক আরিয়ান Nov 23, 2025
img
সাবেক এমপি এসএ খালেকের ছেলে সাজুকে বিএনপির শোকজ Nov 23, 2025
img
ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এনসিপি নেতাদের সাক্ষাৎ Nov 23, 2025
img
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্লট জালিয়াতির মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপন আজ Nov 23, 2025
img
ত্রিদেশীয় সিরিজে মাঠে নামছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল Nov 23, 2025
img
তাইজুলের মাইলফলকে উচ্ছ্বসিত সাকিব আল হাসান, শুভকামনায় ৪০০ উইকেট Nov 23, 2025
img
সশরীরে নয়, গুমের মামলায় ভার্চুয়ালি হাজিরা দিতে চান সেনা কর্মকর্তারা Nov 23, 2025
img

মন্ত্রী স্টিভেন সিম

‘শ্রমিক শোষণের বিরুদ্ধে আমরা কঠোর অবস্থানে রয়েছি’ Nov 23, 2025
img
দেবের সঙ্গে রোম্যান্স হবে, ভাবতেও পারিনি: জ্যোতির্ময়ী Nov 23, 2025
img
অডিয়েন্সকে দেখলে অন্য কোনো চিন্তা আর মাথায় থাকে না: জোজো Nov 23, 2025
img
পরবর্তী ম্যাচ থেকেই ঘুরে দাঁড়াবে রিয়াল মাদ্রিদ, বিশ্বাস আলোনসোর Nov 23, 2025