রাজধানী ঢাকার কাকরাইল জামে মসজিদ। ওই মসজিদ থেকে সারা দেশে তাবলীগ জামাত পরিচালিত হয়। তাই মসজিদটিতে সব সময় মুসল্লিদের আনাগোনা থাকতো। কিন্তু শনিবার টঙ্গি ইজতেমা ময়দানে তাবলীগের দুপক্ষের সংঘর্ষের পর থেকে ওই মসজিদে মুসল্লিদের উপস্থিতি কমেছে।
সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ওই মসজিদে অবস্থান করে এমন তথ্য জানা গেছে।
সোমবার সকালে কাকরাইল জামে মসজিদে দেখা গেছে, মসজিদের প্রবেশ পথে কয়েকজন পুলিশ সদস্য বসে আছেন। মসিজের আঙ্গিনায় রয়েছে কয়েকটি মাইক্রোবাস। আর মসজিদের ভেতেরে হাতেগোনা কয়েকজন মুসল্লি রয়েছেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ ঘুমাচ্ছেন আবার কেউ কেউ ইবাদ-বন্দেগি করছেন।
এক পর্যায়ে মুসল্লিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সম্প্রতি তাবলীগের দুপক্ষের সংঘর্ষের পর থেকে তাদের মধ্যে ভয় ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। কিন্তু তাদের নিয়মিত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। তবে মসজিদে মাওলানা যুবায়েরপন্থিরা অবস্থান করলেও সাদপন্থিরা এখনও সেখানে অবস্থান করতে পারেন নাই।
তবে তাবলীগের দ্বন্দ্বের ব্যাপারে কেউ কথা বলতে রাজি হননি। কবির নামের একজন বলেন, দ্বন্দ্বের ব্যাপারে আমাদের কথা বলতে মানা করা হয়েছে। বিষয়টি মুরব্বিরা জানেন। তবে মুরব্বিতের কাছে কাকরাইল মাদ্রসায় যাওয়া হয়। কিন্তু সেখানেও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে, কাকরাইল মসজিদে দায়িত্বরত আশিক মিয়া নামের এক পুলিশ সদস্য বাংলাদেশ টাইমসকে বলেন, কাকরাইল মসজিদে কোনো ধরনের সমস্যা নেই। শান্তিপূর্ণভাবেই মুসল্লিরা অবস্থান করছেন। যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতির জন্য পুলিশি পাহারা অব্যাহত রয়েছে।
পরবর্তীতে মসজিদের আশেপাশে দেখা গেছে, মসজিদের দক্ষিণ পাশে ফুটপাতে কয়েকটি দোকান রয়েছে। ওই দোকানগুলোতে মুসল্লিদের জামা-কাপড় এবং তাবলিগ জামাতে ব্যবহৃত জিনিস রয়েছে।
পরে কথা হয় ভাসমান ওই ব্যবসায়ীদের সাথে। আবুল হোসেন নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘গত কয়েক দিন থেকে তাদের বেচাকেনা কমেছে। কারণ দুপক্ষের সংঘর্ষের পর থেকে কাকরাইলে মুসল্লির সংখ্যা কম লক্ষ্য করা গেছে। এছাড়াও যারা আছেন বা যারা সেখান থেকে চিল্লায় যাচ্ছে তাদের মধ্যে প্রায় সবাই পুরাতন। তাই তারা তাবলীগের জিনিসপত্র ক্রয় করছেন না।’
এদিকে সোমবার বিকেলে সাদপন্থিরা ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। এ সময় তারা কারাইল ও টঙ্গী ময়দানে তাদের জায়গা দেওয়ার জন্য দাবি জানান।
ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটির সাগর-রুনি হলে সংবাদ সম্মেলনে তাবলীগের মাওলানা সাদ আহমাদ কান্ধলভীর অনুসারীদের আমির মাওলানা আশরাফ আলী বক্তব্য রাখেন। এ সময় তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করে বলেন, বিদ্যমান সমস্যা নিরসন করে কাকরাইল মসজিদ এবং টঙ্গী মাঠে আলাদা আলাদা অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে।
টাইমস/কেআরএস/পিআর
আরও পড়ুন...
প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা সাদ অনুসারীদের
ইজতেমা মাঠ ভাগের দাবি সাদপন্থীদের
প্রশাসনের দখলে থাকবে ইজতেমা মাঠ: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
তাবলিগ জামাত সংঘর্ষে নিহত এক, আহত শতাধিক