খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে: ফখরুল

চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা।

বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় শুরু হয় এবং  এ কর্মসূচি এক ঘণ্টা পর্যন্ত চলে।

এই কর্মসূচিতে অংশ নিতে বেলা ১১টা থেকেই নেতা-কর্মীরা ব্যানার-প্ল্যাকার্ড নিয়ে প্রেস ক্লাবের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন। খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিভিন্ন শ্লোগান দেন তারা।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জ্যেষ্ঠ নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আবদুল মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, শামসুজ্জামান দুদু, এজেডএম জাহিদ হোসেন, আমানউল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, মফিকুল হাসান তৃপ্তি, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, কাজী আবুল বাশারসহ অঙ্গসংগঠনের নেতারা মানববন্ধনে অংশ নিয়েছেন।

মানববন্ধনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, 'সংগঠনকে শক্তিশালী করে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। তবেই দেশনেত্রীকে আমরা মুক্ত করতে পারব। জনগণকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে খালেদা জিয়ার মুক্তি, চিকিৎসা এবং গণতন্ত্র উদ্ধারে রাজপথে নামতে হবে।’

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘খালেদা জিয়ার চিকিৎসা তার মৌলিক অধিকার। আজকে তাকে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। আমরা বারবার বলছি, খালেদা জিয়ার যেখানে পছন্দ সেখানে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হোক। কিন্তু সরকার সেটা করছে না।’

তিনি বলেন, 'এই দখলবাজ সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে এক বছরের বেশি সময় ধরে সম্পন্ন বেআইনিভাবে খালেদা জিয়াকে আটকে রেখেছে। আমরা জানি, খালেদা জিয়ার প্রত্যেকটি মামলা মিথ্যা  ও জামিনযোগ্য। কেননা, মামলার অন্যান্য আসামিরা জামিন পেয়েছেন। কিন্তু রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে খালেদা জিয়াকে আটক রাখা হয়েছে। কারণ একটাই— তিনি গণতন্ত্রের মা।’

ফখরুল বলেন, 'গত নির্বাচনে কেউ ভোট দিতে পারেনি। আগের রাতে সব ভোট দখল করে নিয়েছে। ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচন হয়েছে। সেখানে কেউ ভোট দিতে যায়নি। এতে প্রমাণ হয়, দেশের মানুষ তাদের ওপর আস্থা হারিয়েছে। নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা হারিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘পরিষ্কারভাবে বলছি, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আমরা প্রত্যাখান করেছি। নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করতে হবে। পুনরায় নিরপেক্ষ কমিশনের তত্ত্বাবধায়নে, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আবার নির্বাচন দিতে হবে।’

মানববন্ধন কর্মসূচি ঘিরে সকাল থেকেই জাতীয় প্রেস ক্লাব এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট ও জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১৭ বছরের দণ্ড নিয়ে ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ঢাকার পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

সেখানে খালেদার স্বাস্থ্যের ‘চরম অবনতি’ হয়েছে দাবি করে উদ্বেগ জানিয়ে আসছেন বিএনপি নেতারা। তাদের অভিযোগ, কারাগারে তাদের নেত্রীর সুচিকিৎসা হচ্ছে না।

খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার দাবি নিয়ে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল মঙ্গলবার সচিবালয়ে গিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল পরে সাংবাদিকদের বলেন, মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য কারাবন্দি খালেদা জিয়াকে ‘শিগগিরই’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে নেওয়া হবে।

তার মুক্তির দাবিতে ঢাকাসহ সারাদেশে ধারাবাহিকভাবে বিক্ষোভ সমাবেশ, মানববন্ধন, অবস্থান ধর্মঘট, প্রতীক অনশন, গণস্বাক্ষর সংগ্রহ ও স্মারকলিপি প্রদানের মত কর্মসূচি পালন করে আসছে বিএনপি।

 

টাইমস/এসআই

Share this news on: