চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলায় শান্তি ফেরাতে সমঝোতা বৈঠক করেছে উপজেলা প্রশাসন। রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে পৌনে ৬টা পযর্ন্ত উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
এতে সংঘাতে জড়ানো হাটহাজারী মাদরাসা ও সুন্নিদের পক্ষের ১০ জন করে উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে শনিবারের সংঘাতে হতাহতের চিকিৎসা এবং ভবনসহ ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দেয় প্রশাসন। এছাড়া হাটহাজারী মাদরাসা এলাকা অর্থাৎ চারিয়া থেকে বাসস্ট্যান্ড এলাকায় শব্দদূষণের বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। সবমিলিয়ে উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে উভয় পক্ষকে শান্ত থাকতে বলা হয়েছে।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকালে চট্টগ্রামের আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলামের (হাটহাজারী মাদ্রাসা) সামনে আপত্তিকর অঙ্গভঙ্গি করে ফেসবুকে পোস্ট দেন আরিয়ান ইব্রাহিম নামে এক যুবক। এ ঘটনায় কওমি মহলে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ফটিকছড়ি থানা পুলিশ পৌর সদর থেকে আরিয়ান ইব্রাহিম নামে ওই যুবককে আটক করে। আটক আরিয়ান ইব্রাহিম পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড়ের মুহাম্মদ মুছার ছেলে। আটকের পর তিনি ভিডিও বার্তায় ওই কর্মাকাণ্ডের জন্য ক্ষমা চান।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিকেল থেকে হাটহাজারী পৌর এলাকায় বিক্ষোভ করেছেন হাটহাজারী মাদ্রাসার ছাত্র ও স্থানীয়রা। পৌরসভার গোল চত্বরে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন তারা। সেখানে একটি বাস ভাঙচুরের খবর পাওয়া যায়। এরপর মাদরাসা শিক্ষার্থী ও সুন্নি মতাদর্শদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া যায়।
একপর্যায়ে শনিবার রাতে হাটহাজারীতে ১৪৪ ধারা জারি করে উপজেলা প্রশাসন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মুমিনের সই করা এক আদেশে হাটহাজারী উপজেলার মীরের হাট থেকে এগারো মাইল সাবস্টেশন পর্যন্ত এবং উপজেলা গেট থেকে কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, হাটহাজারী পর্যন্ত রাস্তার উভয়পাশে এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় শনিবার রাত ১০টা থেকে রোববার বিকেল ৩টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।
হাটহাজারী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী তারেক আজিজ জানান, আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে উভয়পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করা হয়েছে। এতে ক্ষতিপূরণ ও ভুক্তভোগীদের চিকিৎসার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
বৈঠকে হাটহাজারী মাদরাসার সিনিয়র মুহাদ্দিস মুফতি জসিম উদ্দিন, সুন্নিদের পক্ষে অ্যাডভোকেট মোসাহেব উদ্দিন বখতিয়ার, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ মাহবুবুল হক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মুমিনসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
এসএস/টিকে