আন্দোলনের নামে দেশজুড়ে লুটপাট এবং হামলা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন নেপালের সেনাপ্রধান জেনারেল অশোক রাজ সিগদেল। সেই সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সড়কে বিক্ষোভ কর্মসূচির সমাপ্তি টেনে আলোচনার টেবিলে আসতে বলেছেন জেনারেল সিগদেল।
শিক্ষার্থী ও তরুণ প্রজন্মের তীব্র আন্দোলনের মুখে গতকাল পদত্যাগ করেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি এবং প্রেসিডেন্ট ও সরকারপ্রধান রাম কুমার পৌদেল। তাদের দু’জনের পদত্যাগের পর ক্ষমতা গ্রহণ করে সেনাবাহিনী।
গতকাল মঙ্গলবার টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে জাতির উদ্দেশে জেনারেল সিগদেল বলেন, “আমরা কঠিন একটি সময় পার করছি এবং কিছু গোষ্ঠী এ পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে লুটপাট, হামলা সরকারি-বেসরকারি সম্পদ ধ্বংস করছে।”
“আমরা আন্দোলনকারীদের অনুরোধ করছি— আপনারা প্রতিবাদ কর্মসূচি থামান এবং দেশে শান্তি স্থাপনের স্বার্থে আলোচনার জন্য এগিয়ে আসুন। আমাদের এখন বর্তমান কঠিন পরিস্থিতিকে স্বাভাবিক করতে হবে; সেই সঙ্গে রক্ষা করতে হবে আমাদের ঐতিহাসিক এবং জাতীয় ঐতিহ্য, জনগণ এবং তাদের সহায়-সম্পদ এবং বিদেশি কূটনীতিকদের।”
ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রামসহ ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে শিক্ষার্থী ও তরুণ প্রজন্মের মাত্র দুই দিনের তীব্র আন্দোলনে নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলির নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন হয়েছে। তবে আন্দোলনের দুই দিন ব্যাপক সহিংসতাও হয়েছে নেপালে।
নিরপত্তা বাহিনীর গুলিতে ৮ সেপ্টেম্বর ১৯ জন আন্দোলনকারী নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আর ও শতাধিক। পরের দিন ৯ সেপ্টেম্বর বিক্ষোভ ভয়াবহ সহিংস রূপ নেয়। আন্দোলনকারীরা পার্লামেন্ট, মন্ত্রি এমপিরেদ বাসভবনসহ বিভিন্ন স্থাপনায় ভাঙচুর-লুটপাট-অগ্নিসংযোগ করা শুরু করেন। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে গতকাল দুপুরের পর পদত্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি, সন্ধ্যায় পদত্যাগ করেন প্রেসিডেন্ট ও সরকারপ্রধান রামচন্দ্র পাওদেল।
টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ভাষণে সেনাপ্রধান বলেন, “পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে দেশজুড়ে কারফিউ জারি আছে। আমি সবপক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। গত দুই দিনে যথেষ্ট ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আরও ক্ষতি করা থেকে বিরত থাকুন এবং আলোচনার টেবিলে আসুন। একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় জনগণের সব দাবি আলোচনার ভিত্তিতে সমাধান সম্ভব।”
“আর যারা সেনাবাহিনীর এ আহ্বান উপেক্ষা করে প্রতিবাদ, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, হামলা প্রভৃতি চালিয়ে যেতে চান, তাদের উদ্দেশে বলছি— এখন থেকে এ ধরণের কর্মকাণ্ডকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হবে এবং যারা এসব কার্যক্রমে লিপ্ত থাকবেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর পদক্ষেপ নেবে।”
সূত্র : এনডিটিভি ওয়ার্ল্ড
এবি/এসএন