নেপালে বিক্ষোভের সুযোগে কারাগার থেকে পালালেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী

নেপালে বিক্ষোভ-অস্থিরতার সুযোগে কারাগার থেকে পালিয়েছেন দেশটির সাবেক প্রতিমন্ত্রী সঞ্জয় কুমার শাহ। ২০১২ সালে বোমা হামলা ও হত্যার দায়ে ললিতপুর জেলার নাক্কু কারাগারে যাবজ্জীবন কারাবাসের সাজা খাটছিলেন তিনি।

এক প্রতিবেদনে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, সঞ্জয় কুমার শাহ এর সঙ্গে আরও  কয়েকজন হাই প্রোফাইল কারবন্দি পালিয়েছেন, এদের মধ্যে দেশটির চতুর্থ বৃহত্তম রাজনৈতিক দল রাষ্ট্রীয় স্বতন্ত্র পার্টির প্রেসিডেন্ট রবি লামিচানেও আছেন।

ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রামসহ ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে শিক্ষার্থী ও তরুণ প্রজন্মের মাত্র দুই দিনের তীব্র আন্দোলনে নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলির নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন হয়েছে। তবে আন্দোলনের দুই দিন ব্যাপক সহিংসতাও হয়েছে নেপালে।

নিরপত্তা বাহিনীর গুলিতে ৮ সেপ্টেম্বর ১৯ জন আন্দোলনকারী নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আর ও শতাধিক। পরের দিন ৯ সেপ্টেম্বর বিক্ষোভ ভয়াবহ সহিংস রূপ নেয়।

আন্দোলনকারীরা পার্লামেন্ট, মন্ত্রি এমপিরেদ বাসভবনসহ বিভিন্ন স্থাপনায় ভাঙচুর-লুটপাট-অগ্নিসংযোগ করা শুরু করেন। কারাগারগুলোতেও শুরু হয় অস্থিরতা। কয়েদিরা বিদ্রোহ করেন এবং দলে দলে ফটক থেকে বের হয়ে যান। সঞ্জয় কুমার শাহও তাদের মধ্যে একজন।

নেপালের জনকপুর জেলার এই সাবেক এমপি এবং প্রতিমন্ত্রী দেশটির রাজনৈতিক দল সদ্ভাবনা পার্টির জেষ্ঠ্য নেতা। ২০০৮ সালের নির্বাচনে জিতে তিনি পার্লামেন্টে প্রবেশ করেন।

এর চার বছর পর ২০১২ সালের ৩০ এপ্রিল জনকপুরের রামানন্দ চক এলাকায় এক বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় ৫ জন নিহত হন। হামলার প্রধান পরিকল্পনাকারী হিসেবে গ্রেপ্তার হন সঞ্জয় কুমার শাহ। এছাড়া তার বিরুদ্ধে অরুন সিংহানিয়া নামের এক রেডিও সাংবাদিককে হত্যার অভিযোগও রয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, সঞ্জয় নিজে হত্যা না করলেও এই ষড়যন্ত্রের হোতা ছিলেন।

২০১৩ সাল থেকে কারাগারে ছিলেন সঞ্জয় কুমার শাহ। সেই হিসেবে প্রায় এক যুগেরও বেশি সময় ধরে কারাগারে ছিলেন তিনি।

শিক্ষার্থী জনতার ভয়াবহ বিক্ষোভের মুখে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে পদত্যাগ করেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি। দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র এক বছরের মাথায় পতন ঘটল তার নেতৃত্বাধীন সরকারের।

সূত্র : এনডিটিভি

কেএন/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
যে কোনো মূল্যে ফেয়ার নির্বাচন করতে হবে : রুমি Dec 22, 2025
img
বাঙালি সংস্কৃতিবিরোধীরা ছায়ানটের হামলা চালিয়েছে: ছায়ানট Dec 22, 2025
img
সাতক্ষীরার ৪টি আসনে ৮ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র সংগ্রহ Dec 22, 2025
img
অহংকার নয়, নম্রতাই আসল সৌন্দর্য: ক্যাটরিনা কাইফ Dec 22, 2025
img
সাকিবের ম্যাচসেরার দিনে জয় পেল এমআই এমিরেটস Dec 22, 2025
img
কূটনৈতিক সাংবাদিকতা পররাষ্ট্রনীতিকে শক্তিশালী করছে : পররাষ্ট্রসচিব Dec 22, 2025
img
বাবাকে দেখেই আমি কাজ আর সংসার ব্যালেন্স করা শিখেছি: কোয়েল মল্লিক Dec 21, 2025
img
বাজেভাবে হারলেও অধিনায়কত্ব ছাড়ছেন না স্টোকস Dec 21, 2025
img
কটু কথার জবাবে নীরবতাই সবচেয়ে বড় প্রতিরোধ: পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায় Dec 21, 2025
img
রিকশাচালকের করা মামলায় বিএনপির সাবেক এমপি কারাগারে Dec 21, 2025
img
ময়মনসিংহে দীপু চন্দ্রকে হত্যার ঘটনায় মাদারীপুরে প্রতিবাদ মিছিল Dec 21, 2025
img
ইনকিলাব মঞ্চের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা Dec 21, 2025
img
সুদানে মার্কেটে ড্রোন হামলায় নিহত ১০ Dec 21, 2025
img
মাইলি সাইরাস পেলেন বিশেষ সম্মাননা Dec 21, 2025
img
ভারতীয় আধিপত্যবাদের কবর রচিত হয়ে গেছে : পীর চরমোনাই Dec 21, 2025
img
কারাগারে বসে মনোনয়নপত্র নিলেন সাবেক এমপি Dec 21, 2025
img
তারেক রহমানের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের অনুমতি পেয়েছে বিএনপি Dec 21, 2025
img
হিন্দু সম্প্রদায়ের পাশে থাকবে বিএনপি : প্রিন্স Dec 21, 2025
img
প্রবৃদ্ধি ১৫ শতাংশ, তবু রাজস্বে ঘাটতি ২৪ হাজার কোটি Dec 21, 2025
img
২৫ ডিসেম্বরের মধ্যে পোস্টাল ভোটিং অ্যাপে নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হবে Dec 21, 2025