আমার ছেলে সম্রাট ষড়যন্ত্রের শিকার: মা সায়েরা খাতুন

রাজনৈতিক প্রতিহিংসা এবং ব্যক্তিগত আক্রোশের কারণে যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ক্যাসিনোকাণ্ডে জড়ানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন তার মা সায়েরা খাতুন চৌধুরী।

রোববার সম্রাটের মুক্তির দাবিতে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন সায়েরা খাতুন। সেখানে লিখিত বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সায়েরা খাতুন অসুস্থ থাকায় তার পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সম্রাটের বোন ফারহানা চৌধুরী শিরিন।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘ঢাকা শহরে প্রতিটি ক্লাব পরিচালনা করার জন্য কমিটি রয়েছে। এসকল ক্লাব থেকে সুন্দরভাবে খেলা পরিচালনার জন্য ক্লাব কর্তৃক প্রকাশ্যে ডাক (ইজারার দর আহ্বান) দেয়া হয়। আমার সন্তান সম্রাট কোনো ক্লাবের পরিচালনা কমিটির সদস্য নয়, এমনকি ডাক গ্রহণকারীও নয়। শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে এবং ব্যক্তিগত আক্রোশে তাকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে জড়ানো হয়েছে।’

গত ৬ অক্টোবর কুমিল্লা থেকে গ্রেপ্তারের পর সম্রাটকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকার কাকরাইলের ভূইয়া ট্রেড সেন্টারে তার কার্যালয়ে অভিযান চালায় র‍্যাব। সেখানে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা অভিযান শেষে গুলিসহ একটি বিদেশি পিস্তল, ১১৬০টি ইয়াবা, ১৯ বোতল বিদেশি মদ, দুটি ক্যাঙ্গারুর চামড়া এবং ‘নির্যাতন করার’ বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম পাওয়ার কথা জানায় র‍্যাব।

এ প্রসঙ্গে সম্রাটের মা বলেন, ‘গত ৬ অক্টোবর রোববার আমার সন্তানকে গ্রেপ্তার করা হয়। যে স্থান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় সেই স্থানে কোনো প্রকার অস্ত্র কিংবা মাদক পাওয়া যায় নাই। কিন্তু আমরা মিডিয়ার মাধ্যমে দেখতে পেলাম তাকে কাকরাইল অফিসে নিয়ে আসা হয় এবং প্রায় চার ঘণ্টা ১৭ মিনিট তার অফিস তল্লাশি করা হয়। তল্লাশি চলাকালীন সময়ে কোনো গণমাধ্যমকর্মীকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি।’

সায়েরা খাতুন বলেন, ‘সম্রাটকে নিয়ে অফিসের ভেতরে প্রবেশের সময় বিভিন্ন মিডিয়ায় লাইভ সম্প্রচারে দেখা গেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু লোক কাঁধে ব্যাগ নিয়ে প্রবেশ করে এবং অফিস থেকে বের হওয়ার সময় ওই সকল ব্যাগ লক্ষ্য করা যায়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক মদ্যপান তার মৃত্যুর কারণ হতে পারে। তাই সে জেনে-শুনে কখনও মদ পান করবে না। সম্রাট গ্রেপ্তারের ১০ দিন আগ থেকে অফিসেই ছিল না, অফিস ছিল অরক্ষিত। শরীর খারাপ থাকায় অন্যত্র অবস্থান করছিল।’

ক্যাঙ্গারুর চামড়া পাওয়ার কারণে সম্রাটকে সাজা দেয়া হলেও বিষয়টি বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ) আইনের আওতায় পড়ে না বলেও দাবি করা হয় লিখিত বক্তব্যে।

‘ক্যাঙ্গারু বাংলাদেশি বন্যপ্রাণী নয় এবং বাংলাদেশে এই প্রাণীটির বিচরণ দেখা যায় না। যেহেতু ক্যাঙ্গারুটি বাংলাদেশে শিকার করা হয়নি, এটি বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ) আইনের মধ্যে পড়ে না।’

ক্যাঙ্গারুর চামড়াটি এক প্রবাসী বাংলাদেশি সম্রাটকে উপহার দিয়েছিলেন বলে জানান তিনি।

সম্রাটের মুক্তির জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানিয়ে সায়েরা খাতুন চৌধুরী বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনার সন্তানতুল্য সম্রাট, আপনার সংগঠনে অনুপ্রবেশকারী নয়। আমি একজন মা হিসেবে আপনার কাছে আকুতি করছি সম্রাটের ভুল-ত্রুটি ক্ষমা করে মুক্ত করে দিন এবং তাকে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দিয়ে আমার সন্তানের জীবন রক্ষা করুন।’

 

টাইমস/এসআই

Share this news on: