নেপালে অন্তর্বর্তী সরকারের শপথে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত

নেপালের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সুশীলা কার্কির শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. শফিকুর রহমান দেন। শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতি ভবনে সুশীলা কার্কি এ শপথ নেন। তাকে শপথ বাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি রামচন্দ্র পৌডেল।

এদিকে নবনিযুক্ত প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ের সুযোগ গ্রহণ করেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. শফিকুর রহমান। নেপালে বাংলাদেশ দূতাবাস এ তথ্য জানিয়েছে।
শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নেপালের ভাইস প্রেসিডেন্ট রাম সহায় যাদব, প্রধান বিচারপতি প্রকাশ মান সিং রাওয়াত এবং সেনাপ্রধান অশোক রাজ সিগদেল।

ভারতীয় পত্রিকা এনডিটিভি জানায়, কার্কির শপথ গ্রহণের পরই নেপালে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত হয়েছে। ২০২৬ সালের ৫ মার্চে হবে নির্বাচন। নেপালের জেন-জি আন্দোলনকারী, প্রেসিডেন্ট রাম চন্দ্র পৌডেল এবং সেনাপ্রধান অশোক রাজ সিগদেলের মধ্যে আলোচনায় মতৈক্য হওয়ার পরই কার্কিকে প্রধানমন্ত্রী করার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। পরে প্রেসিডেন্টের কার্যালয় জানায়, কার্কিই হচ্ছেন নতুন প্রধানমন্ত্রী।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ থেকে নেপালে গত তিনদিনের টানা বিক্ষোভে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি সরকারের পতন হয়।

এরপর বুধবার আন্দোলনকারীরা কার্কিকে নতুন প্রধানমন্ত্রী করতে সমঝোতায় পৌঁছেছে বলে মনে হয়েছিল। কিন্তু এর ২৪ ঘণ্টা পরই আন্দোলনকারীদের মধ্যে মতপার্থক্যের খবর মেলে। শোনা যায়, প্রকৌশলী কুলমান ঘিসিংকে প্রধানমন্ত্রী পদে চাইছেন আন্দোলনকারীদের অনেকে, যিনি নেপালের বিদ্যুৎ সংকট সমাধান করে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন।

এক বিবৃতিতে তার নামও প্রস্তাব করেছিলেন আন্দোলনকারীরা। কুলমানের নাম উঠে আসায় কিছুটা অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল। আর এরও আগে ওলি সরকারের পতনের পরই প্রাথমিকভাবে নাম শোনা গিয়েছিল রাজধানী কাঠমাণ্ডুর নির্দল মেয়র ও জনপ্রিয় র‌্যাপার বলেন্দ্র শাহের। কিন্তু ৩৫ বছর বয়সী শাহ প্রধানমন্ত্রী হতে আগ্রহী ছিলেন না। বরং তিনি প্রকাশ্যে কার্কির পক্ষেই সমর্থন জানান।

৭২ বছর বয়সী সুশীলা কার্কি নেপালের প্রথম নারী প্রধান বিচারপতি ছিলেন। ২০১৬ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত এ পদে ছিলেন তিনি। সেটিও ছিল ইতিহাস। এখন আরো এক ইতিহাসের সাক্ষী হলো হিমালয়ের দেশ নেপাল।

জেন-জি (তরুণ প্রজন্ম)- যাদের নেতৃত্বে আন্দোলনে পতন ঘটেছে কেপি শর্মা ওলি সরকারের, তাদের মধ্যে সুশীলা কার্কির জনপ্রিয়তা আছে।

সততা, ন্যায়বিচার, নিরপেক্ষতা এবং বিশ্বাসযোগ্যতার জন্য পরিচিত তিনি। বিশেষ করে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্কির কঠোর অবস্থানের জন্য তিনি জনপ্রিয়।

বিচারপতি থাকাকালে ক্ষমতাসীন মন্ত্রীকে জেলে পাঠানো থেকে শুরু করে সরাসরি সরকারের সঙ্গে সংঘাতে জড়াতেও পিছপা হননি কার্কি।

তবে তার বিচারপতি জীবন ঝঞ্ঝাটমুক্ত ছিল না। দায়িত্ব নেওয়ার এক বছরের মধ্যেই তার বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রক্রিয়া শুরু হয়, যা ব্যাপকভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিসেবে দেখা হয়। জনমতের চাপে শেষ পর্যন্ত তা ভেস্তে যায়। যদিও ঘটনাটি কার্কিকে হতাশ করেছিল এবং তিনি পরে পদ থেকে সরে দাঁড়ান। এবার তার সামনে আরো বড় চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে।


ইউটি/টিএ



Share this news on:

সর্বশেষ

img
তারেক রহমানের সঙ্গে মান্নার পুরোনো ছবি হঠাৎ আলোচনায় Dec 25, 2025
img
সাইবেরিয়ান বিড়াল জেবু, বাংলাদেশের আবহাওয়ায় খাপ খাওয়া ও যত্ন Dec 25, 2025
তারেক রহমানের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অংশ নিতে ঢাকায় পৌঁছেছে পিরোজপুরের ৩০ হাজার নেতাকর্মী Dec 25, 2025
img
তারেক রহমানের আগমনে রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ হবে : প্রেস সচিব Dec 25, 2025
img
বিপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচ ও পারিশ্রমিক প্রসঙ্গে শান্তের মন্তব্য Dec 25, 2025
img
বুকে হল্টার মনিটর বসিয়ে ৪৮ ঘণ্টা শুটিং মিমির! Dec 25, 2025
img
জাইমা রহমানের সেলফিতে কোন বই নিয়ে আলোচনায় মেতেছে নেটিজেনরা? Dec 25, 2025
img
ফেসবুক ব্যবহারে মাউশির সতর্কতা জারি! Dec 25, 2025
img
প্রয়াত মোহাম্মদ বাকরি,চলচ্চিত্রজগতে শোক Dec 25, 2025
img
আগামী এপ্রিলে মাঠে ফেরার সম্ভাবনা ব্যালন ডি’অর জয়ী বনমাতির Dec 25, 2025
img
রণবীরের প্রশংসায় নওয়াজউদ্দিন Dec 25, 2025
img
তারেক রহমানের আদুরে বিড়াল জেবু কোন প্রজাতির? Dec 25, 2025
img
টাঙ্গাইলের শাড়ি পরে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের বড়দিন উদযাপন! Dec 25, 2025
img
দুস্থ বাচ্চাদের সিক্রেট সান্টা হতে চাই: অদ্রিজা রায় Dec 25, 2025
img
তারেক রহমান, সপরিবারে সুস্বাগতম : জামায়াত আমির Dec 25, 2025
গুলশানের বাড়িতে আসলেন জুবাইদা রহমান ও জাইমা রহমান Dec 25, 2025
img
না ফেরার দেশে মারাঠি অভিনেতা রঞ্জিত Dec 25, 2025
img
কৃতজ্ঞতা জানালেন তারেক রহমান Dec 25, 2025
img
পারিশ্রমিক পরিশোধে সমস্যা নিয়ে বিপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজিকে বিসিবির হুঁশিয়ারি Dec 25, 2025
img
ভারতে ট্রাক-বাসের ভয়াবহ সংঘর্ষে প্রাণ গেল ৭ জনের Dec 25, 2025