বাংলাদেশে একমাত্র নারী ফিফা রেফারি জয়া চাকমা। তার উত্তরসুরি হওয়ার পথে শারাবান তহুরা। ৬ সেপ্টেম্বর ফিফা রেফারির ফিটনেস টেস্ট পরীক্ষায় তহুরা পাশ করেছেন।
বাংলাদেশে ফিফা নারী রেফারির কোটা একটি। জয়া চাকমা ৬ সেপ্টেম্বর পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেননি। সেপ্টেম্বরে শেষ সপ্তাহে আরেকবার পরীক্ষা গ্রহণ করবে বাফুফের রেফারিজ কমিটি। সেই পরীক্ষায় জয়া যদি অনুত্তীর্ণ হলে তহুরার নাম ফিফায় পাঠাবে ফেডারেশন। জয়া গত বছর ফিটনেস পরীক্ষায় পাশ করতে পারেননি।
বাফুফের রেফারিজ কমিটির ডেপুটি চেয়ারম্যান সুজিত ব্যানার্জি চন্দন বলেন, ‘আমাদের নারী ফিফা রেফারি কোটা একটা। জয়া পরবর্তী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হলে তখন দুই জনই যোগ্য হবেন ৷ সেক্ষেত্রে রেফারিজ কমিটি সভার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিয়ে একজনের নাম ফিফায় প্রেরণ করবে।’
জয়া চাকমা ফিটনেস পরীক্ষায় পাশ না করতে পারলে তহুরার নামই পাঠাতে হবে ফেডারেশনকে। জয়া যে বছর ফিফা রেফারি হয়েছিলেন সেই বছর সহকারী ফিফা রেফারি পরীক্ষায় পাশ করেছিলেন সালমা আক্তার। বাফুফে ফিফায় সালমার নাম পাঠালেও বয়স ২৩ না হওয়ায় ঐ বছর ফিফা ব্যাজ পাননি সালমা। নারী ফিফা রেফারি হওয়ার জন্য ২৫ বছর পুর্ণ হয়েছে তহুরার।
২০২১ সাল থেকে রেফারিং শুরু করেন তহুরা। চার বছরের মধ্যেই ফিফা হওয়ার পথে। সম্প্রতি জাতীয় রেফারি হয়েছেন। ঘরোয়া পর্যায়ে নারী লিগ, জুনিয়র বিভাগের খেলা কম হওয়ায় রেফারিংয়ের সুযোগ কম নারী রেফারিদের। তহুরার সম্ভাবনা থাকায় রেফারিজ কমিটি তাকে ভুটানে সাফ অ-১৭ নারী টুর্নামেন্টে মনোনীত করেছিল। বাংলাদেশে রেফারিংয়ের পাশাপাশি রেফারিরা অন্য পেশায় নিযুক্ত। তহুরা সানবীমস স্কুলে শিক্ষকতা করেন।
তহুরার আরেকটি পরিচয় তিনি বাংলাদেশ নারী খো খো দলের অধিনায়ক। ২০১৬ সাল থেকে খো খো খেলছেন। খো খো খেললেও ফিফা রেফারি হতে পারলে সেই পরিচয় তহুরার কাছে হবে বড়, ‘ফুটবল ও খো খো একসঙ্গে খেলতাম। জাতীয় ফুটবল দলে ডাক পেলেও সেটা জেনেছিলাম পড়ে। খো খো জাতীয় দলে থাকায় আর ফুটবলে যোগ দেয়া হয়নি। ফুটবলে ফিফা রেফারি হতে পারলে সেটাই বড় পরিচয় হবে।’
স্থানীয় পর্যায়ে খেললেও জাতীয় পর্যায়ে খেলা হয়নি তহুরার। এরপরও রেফারিংয়ে আসার গল্পটা এ রকম, ‘ফুটবল ছোট থেকেই ভালোবাসি। পেশাদার ফুটবলার না হলেও সি লাইসেন্স কোচিং কোর্স করি। সেই কোর্স করার সময় জয়া দি, আজাদ স্যার, আমার চাচা ও অন্যদের অনুপ্রেরণায় রেফারিংয়ে আগ্রহী হই। নারী লিগ সহ বিভিন্ন পর্যায়ের টুর্নামেন্টের পর সম্প্রতি সাফ অ- ১৭ নারী টুর্নামেন্টে তিনটি ম্যাচে রেফারি ও দুই ম্যাচে চতুর্থ রেফারি ছিলাম।’
ফুটবলারদের মতো রেফারিদেরও ফিটনেস পরীক্ষা দিতে হয়। ৬ সেপ্টেম্বরের পরীক্ষায় সহকারী নারী ফিফা রেফারি হিসেবে পাশ করেছেন সালমা আক্তার। তিনি এএফসি এলিট প্যানেলেও রয়েছেন। বাংলাদেশে পুরুষ ফিফা রেফারি কোটা ৪ জনের। গতবারের মতো এবারও কোটার চেয়ে বেশি পাশ করেছে। সহকারী রেফারি কোটা ৬ জনের ৬ জনই পাশ করেছে।
তবে সিনিয়র সহকারী রেফারি মনির ঢালী ও নুরুজ্জামান ঐ দিন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেননি। সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহের পরীক্ষায় তারা অংশগ্রহণ করে পাশ করলে তখন রেফারিজ কমিটিকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ফিফায় তালিকা পাঠায় ফেডারেশন। বিগত সময়ে ফেল করা রেফারিদের নামও ফিফায় পাঠিয়েছিল বাফুফে।
ইএ/টিকে