২০২২ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিলের বিদায়ের পর আর জাতীয় দলে দেখা যায়নি অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার থিয়েগো সিলভাকে। ইতোমধ্যে বয়সটাও ৪০ এর কোটায় পৌঁছায় তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শেষ বলেই মনে করেন অনেকে। তবে ব্রাজিলের প্রধান কোচ যে এখন কার্লো আনচেলত্তি, যার কাছে দলে ডাক পাওয়ার জন্য পারফরম্যান্স এবং ফিটনেসই আসল। তাই তো তিনি সিলভাকে নিয়ে আশার বাণী শুনিয়েছেন।
ব্রাজিল জাতীয় দলের হয়ে ১১৩টি ম্যাচ খেলা এই সেন্টারব্যাক ইউরোপীয় ফুটবল ছেড়ে বর্তমানে খেলছেন শৈশবের ঠিকানা ফ্লুমিনেন্সের হয়ে। ২০২৪ সালে চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর চেলসি ছাড়েন সিলভা। এরপর গত জুনে ফ্লুমিনেন্সের হয়ে ক্লাব বিশ্বকাপের সেমিফাইনালেও উঠেছিলেন। দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার পাশাপাশি ৪০ বছর বয়সেও পারফরম্যান্সের কারণে ফের আলোচনায় আসেন সিলভা।
এদিকে, ব্রাজিলের বর্তমান কোচ আনচেলত্তির অধীনে এর আগে ইতালিয়ান ক্লাব এসি মিলান এবং ফরাসি জায়ান্ট প্যারিস সেইন্ট জার্মেইয়ের (পিএসজি) খেলেছেন এই ব্রাজিলিয়ান তারকা। ফলে কাছ থেকে পরস্পরের চেনা-জানা ও পরিচিতি আছে। আগের সংযোগ এবং বর্তমানেও মাঠের ফুটবলে ফুরিয়ে না যাওয়ার মনোভাব পুনরায় সিলভাকে কাছাকাছি এনেছে আনচেলত্তির। সাম্প্রতিক সময়ে কথা হয়েছে দুজনের। এরপর ইতালিয়ান কোচ জানিয়েছেন, ফ্লুমিনেন্স তারকাকে জাতীয় দলের স্কোয়াডে পেলে ভালো লাগবে তার। একইসঙ্গে ক্লাবের হয়ে পারফরম্যান্সে ধারাবাহিকতা রক্ষারও পরামর্শ দিয়েছেন।

বয়স বাড়লেও কেন সিলভাকে সেলেসাও স্কোয়াডে দেখতে চান সেই ব্যাখ্যাও দিয়েছেন আনচেলত্তি। গত মৌসুম শেষে রিয়াল মাদ্রিদ ছেড়ে এসি মিলানে যোগ দিয়েছেন লুকা মদ্রিচ। তার পাশাপাশি ক্লাবটির আরেক কিংবদন্তি পাউলো মালদিনির উদাহরণ টেনে ব্রাজিল কোচ বলেন, ‘থিয়েগো সিলভাকে আমি খুব ভালোভাবে জানি। আমিই তাকে এসি মিলান ও পিএসজি সাইনিং করাই। ১০ দিন আগে তার সঙ্গে কথা হয়েছে, তাকে জাতীয় দলে ডাকার বিষয়ে আমার কোনো পাসপোর্ট কিংবা বয়স দেখার প্রয়োজন নেই। যদি সিলভা অন্য কারও চেয়ে ভালো খেলে, তাকে নিতে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়।’
‘গত বছরও রিয়াল মাদ্রিদের জার্সিতে খেলেছে ক্লাবটির (অন্যতম) সেরা ফুটবলার মদ্রিচ, যার বয়স ছিল ৪০ বছর। ২০০৭ সালে আমি যখন চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছি, তখন এসি মিলানের অধিনায়ক ছিল মালদিনি। ওই সময় তার বয়সও ৪০ বছর ছিল’, আরও যোগ করেন আনচেলত্তি। ব্রাজিল কোচের কথার সূত্র ধরে যদি অদূর ভবিষ্যতে সিলভাকে জাতীয় দলের আইকনিক হলুদ জার্সিতে ফের দেখার ভাবনা কারও মাথায় আসে, তাও অমূলক হবে না!
কনমেবল (লাতিন ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা) বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে পাঁচ নম্বরে থেকে মেগা টুর্নামেন্টটির প্রস্তুতি সেরেছে ব্রাজিল। যদিও তাদের সাফল্যের পরিসংখ্যান নিজেদের ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ। তবে আনচেলত্তির ছোঁয়ায় বিশ্বকাপের আগেই ব্রাজিল দল গোছানো ও ফেভারিটের তকমা পাওয়ার উপযোগী হয়ে উঠবে সেটাই প্রত্যাশা ফুটবলভক্তদের। আগামী অক্টোবরে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে প্রীতি ম্যাচ খেলবে ব্রাজিল। আসন্ন এশিয়া সফরে সিলভা আনচেলত্তির স্কোয়াডে ডাক পান কি না সেটাই দেখার বিষয়!
এমকে/এসএন