নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার বাসিন্দাদের জন্য সুখবর দিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ। হাতিয়াবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে। চেয়ারম্যানঘাট থেকে নলচিরায় ফেরি সার্ভিস চালুর উদ্যোগে বড় অগ্রগতি হয়েছে। এ লক্ষ্যে ফেরিঘাট নির্মাণে টেন্ডার শিডিউল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) নিজের ফেসবুক আইডিতে এক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে তিনি বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
হান্নান মাসউদ তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, "আলহামদুলিল্লাহ, ছুম্মা আলহামদুলিল্লাহ। হাতিয়াবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন চেয়ারম্যানঘাট থেকে নলচিরায় ফেরি চলাচল। স্বপ্ন অবশেষে বাস্তবায়নের পথে। অবশেষে ফেরিঘাট নির্মাণের টেন্ডার শিডিউল ঘোষণা করলো বিআইডব্লিউটিএ।"
তিনি আরও জানান, এই কাজে সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা করেছে হাতিয়া উপজেলার সম্মিলিত সামাজিক সংগঠনসমূহ, যারা বিভিন্ন গোষ্ঠীর হুমকি সত্ত্বেও ঢাকায় এসে মানববন্ধন সফল করেছিল। তিনি আরও বলেন, ‘যারা এতদিন এ স্বপ্নটি নিয়ে হাসি-ঠাট্টায় মেতেছিলেন তাদেরকে বলছি, 'স্বপ্ন দেখিয়ে সেটা আমরা বাস্তবায়নও করতে পারি।' ইনশাআল্লাহ সকল স্বপ্নই ধীরে ধীরে পূরণ হবে।’
জানা যায়, হাতিয়ার মূল সমস্যা হলো ঝুঁকিপূর্ণ নৌ-পারাপার, যা দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এই ঝুঁকিপূর্ণ নৌ-পারাপার বন্ধ করে একটি নির্ভরযোগ্য ফেরি সার্ভিস চালুর দাবিতে বিভিন্ন সংগঠন এবং হাতিয়ার বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরে মানববন্ধন ও বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে। ফেরি সার্ভিস চালু হলে দ্বীপের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজতর হওয়ার পাশাপাশি অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে বলে আশা করছেন স্থানীয়রা।
হাতিয়ার বাসিন্দা ইউসুফ রেজা বলেন, হাতিয়াবাসীর দীর্ঘদিনের অধরা স্বপ্ন অবশেষে বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। এ অর্জনের জন্য ধন্যবাদ জানাই হাতিয়ার গর্ব আব্দুল হান্নান মাসউদকে। এই স্বপ্ন পূরণের অংশ হতে পেরে আমরা হাতিয়া উপজেলা জাতীয় নাগরিক পার্টি অত্যন্ত গর্বিত। আলহামদুলিল্লাহ, এটি জুলাই আন্দোলনের এক অনন্য ফসল।
সম্মিলিত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সমন্বয়ক মো. আয়াত হোসেন জুয়েল বলেন, ফেরি হাতিয়ার প্রায় ১০ লাখ মানুষের জীবনের সঙ্গে জড়িত। এই বৃহৎ জনগোষ্ঠীর নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করা সাংবিধানিক মৌলিক অধিকার। হাতিয়ার নৌ-পথে যাত্রীদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ, হয়রানি ও জিম্মি করে ভাড়া আদায় এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে। জরুরি রোগী, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, কর্মজীবী ও ব্যবসায়ীরা প্রতিদিনই ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। ফেরি চালু হলে সকল অন্যায় অনিয়মের অবসান হবে।
স্ট্যাটাসের সত্যতা নিশ্চিত করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন, হাতিয়ার যাতায়াত ব্যবস্থা যেন ফিলিস্তিনের গাজার মতো। যেখানে জীবনের কোনো নিরাপত্তা নেই। একজন রোগী বা কোনো গর্ভবতী মায়ের ইমার্জেন্সি নদী পারাপার হতে গিয়ে সন্তান হারাতে হয় এবং মৃত্যুবরণ করতে হয়। সব কিছুর অবসান হবে ইনশাআল্লাহ। স্বপ্ন দেখিয়ে সেটা আমরা বাস্তবায়নও করতে পারি। আমাদের এ যাত্রা অব্যাহত থাকবে।
পিএ/এসএন