রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি জঙ্গি বিমান এবং মার্কিন বিমান বাহিনীর একদল সশস্ত্র সৈন্য চট্টগ্রামে অবতরণ করেছেন। এই সংক্রান্ত নানা প্রতিবেদন সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের পক্ষ থেকে এবং আমাদের দেশীয় গণমাধ্যমের পক্ষ থেকে পরিবেশন করা হচ্ছে। খবরের মোদ্দা কথা হলো, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং মার্কিন সশস্ত্র বাহিনী বা সেনাবাহিনীর মধ্যে বিভিন্ন সময় দ্বিপাক্ষিক যে কোঅপারেশনগুলো চলছে, তারই ধারাবাহিকতায় মার্কিন বিমান বাহিনীর একটি চৌকশ গ্রুপ বাংলাদেশে এসেছে এবং বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বা সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে একটি যৌথ মহড়া করার জন্য।’
রনি বলেন, ‘এই ধরনের যৌথ মহড়া বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর কারণ হলো, মার্কিন সেনাবাহিনী পৃথিবীর সবচেয়ে চৌকশ এবং অত্যাধুনিক একটি সেনাবাহিনী। যারা রণক্ষেত্রে নানা রকম ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্টে তাদের যে চৌকশ অভিজ্ঞতা রয়েছে, অভিনব পদ্ধতি এবং কৌশল তারা অবলম্বন করে, সেই বিষয়গুলো বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে হাতে কলমে বা সশস্ত্র বাহিনীকে হাতে কলমে শেখানোর জন্য তারা এসেছে। এটা আমাদের একটা বিরাট সৌভাগ্যের বিষয়। যদি এ ধরনের একটি প্রশিক্ষণ আমেরিকাতে গিয়ে নিতে হতো আমাদের সশস্ত্র বাহিনীকে, সেক্ষেত্রে হয়তো শত শত কোটি ডলার সেখানে খরচ হয়ে যেত।
রনি বলেন, ‘আমাদের দেশ, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব এবং আমাদের সেনাবাহিনীর উপকারের জন্য এই কাজগুলো করা হচ্ছে বলে যে প্রচারণা চালানো হচ্ছে, সেই প্রচার প্রচারণার বিপক্ষে কিছু বাজে লোক এবং কিছু গুজব সৃষ্টিকারী মানুষ নানারকম গুজব ছড়াচ্ছে। সেই বিষয়গুলো সরকারের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এর ফলে সরকারের পক্ষ থেকে আবার আরেকটি সতর্ক বার্তা জারি করা হচ্ছে যে, এগুলো নিয়ে যে গুজব ছড়ানো হয়েছে তা সঠিক নয়।’
তিনি আরো বলেন, ‘যে গুজবগুলো ছড়ানো হচ্ছে সেগুলো হলো- ড. ইউনূস সরকার ক্ষমতায় আসার পরে এত ঘন ঘন আমেরিকার সৈন্য বাংলাদেশে আসছে। যারা এই গুজব ছড়াচ্ছেন তাদের বক্তব্য হলো, বর্তমান সরকার বাংলাদেশের সর্বনাশ করেছে। বাংলাদেশকে একটা মার্কিন ঘাটি বানানোর জন্য তারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রামে যেসব বিচ্ছিন্নতাবাদী গ্রুপ রয়েছে তারা এই সময়টিতে অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তারা গুজব ছড়াচ্ছে, আমেরিকা বঙ্গোপসাগরে এবং নাফ নদীর মোহনাতে একটি ঘাঁটি করবে।
বাংলাদেশে যে রোহিঙ্গা সংকট সৃষ্টি করে আরাকান রাজ্যকে আরাকান আর্মির হাতে তুলে দিয়েছে। এছাড়া সরাসরি একটা মার্কিন বলয় তৈরি করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও গুজব ছাড়ানো হচ্ছে। আবার গুজব ছাড়ানো হচ্ছে সেন্টমার্টিনে মার্কিন ঘাটি হবে।’
রনি বলেন, ‘আমাদের দেশের মানুষ ভীষণরকম গুজবপ্রিয়। অনেক সময় গুজবকে মাথায় করে নেচে সত্যকে কবরে পাঠিয়ে দেয়। ফলে আমাদের দেশে কখনো কখনো সত্যের চাইতে মিথ্যা কথা বা গুজব খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। এই মুহূর্তে আমাদের সামাজিক মাধ্যম গুজবের একটা কারখানা এবং এটা আমাদের পুরো জাতির যে চরিত্র এটাকে শেষ করে দিয়েছে। এখন একটা বিকৃত রুচির কাজ আমাদের সামাজিক মাধ্যমে চলছে। এর ফলে পুরো সমাজের মধ্যে একটা অস্থিরতা তৈরি হয়ে গেছে।’
এসএস/এসএন