জাতিসংঘ সফরে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সফরসঙ্গী প্রসঙ্গে জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজ বলেছেন, ‘বাহ, কী চমৎকার। যেহেতু বিএনপির দুজন আছে। আর জামায়াত ও এনসিপির একজন করে। জামায়াত ও এনসিপি বিশাল দল হিসেবে পিছায়ে পড়ে।
সুতরাং তারা বলছে, না, একজন হলে হবে না। আমাদেরও দুজন করে যেতে হবে এবং সেটা মেনে নিয়েই ড. ইউনূস তাদের নিয়ে যাচ্ছেন। এখানে আসলে কোনো পলিটিকস নেই। এটা এটা কি মামুর বাড়ির আবদার।
এটার জবাবদিহি কী?’
রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) ইউটিউবের ভয়েস বাংলার এক বার্তায় এসব কথা বলেন তিনি।
মোস্তফা ফিরোজ বলেন, ‘আমরা শেখ হাসিনার সময়ও এ রকম অনেক প্রশ্ন তুলেছিলাম। এই যে প্লেন ভরে ভরে নিয়ে যায়, কেন নিয়ে যায়? কার অর্থ? রাষ্ট্রের অর্থ? ব্যক্তিগত অর্থ? কী স্বার্থ আছে? জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বাংলাদেশ কী এমন ভূমিকা রাখবে? এই ধরনের ভ্রমণে একটু ভালো লাগছিল যে ঠিক আছে, চারজন যাচ্ছে। নিশ্চয়ই রাজনৈতিক যে বিবাদ-বিরোধ ও বনিবনা সেটা মিটমাট হোক।
কিন্তু এখন এই সামান্যতেও কম্পিটিশন।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপির হুমায়ুন কবির ও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রথম দফায় ছিলেন। জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের আর এনসিপির আখতার হোসেন। এখন তারা বলতেছে যে না, ওদের দুজন কেন? এরপর আরো দুজনকে যুক্ত করা হয়। আবার সবচেয়ে বড় কথা হলো, ড. মুহাম্মদ ইউনূস কি এই তিনটিকেই ফ্যাক্টর মনে করেন? তাহলে এর বাইরে ইসলামী আন্দোলন নয় কেন? মামুনুল হকের খেলাফত মজলিস, হেফাজত কেন নয়?’
তিনি আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতিতে দলের চেয়ে বড় কথা হলো, কিছু ব্যক্তি আছে, কিছু মনন আছে।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস একা। তার তো আর দল নেই। তার মেধা, তার প্রজ্ঞা এ রকম প্রজ্ঞাসম্পন্ন আরো রাজনীতিবিদ আছেন। কেন তাহলে নুরুল হক নুরের দল বঞ্চিত হলো? কেন মাহমদুর রহমান মান্না নেই? কেন আ স ম আব্দুর রব নেই? কেন জোনায়েদ সাকি নেই? কেন এবি পার্টির মুজিবুর রহমান মঞ্জু নেই? এই প্রশ্নগুলো যদি ওঠে?’
তিনি বলেন, ‘পরিবর্তন হলো সত্য। পটপরিবর্তন হলো। কিন্তু ওই ধারা একই। ওই কম্পিটিশন আগের মতো। শেখ হাসিনার সঙ্গে যাওয়ার জন্য কম্পিটিশন। রাষ্ট্রের অর্থ যাচ্ছে এখানেও তাই। কেন, কী কারণে? এই তিন দুগুণে ছয়জন যাবেন কোন রীতিতে? কী হবে ওখানে গিয়ে? কি ডোনাল্ড ট্রাম্প ডেকে যুদ্ধের মতো নাকি যুদ্ধবিরতি দেবে? নাকি বলবে, আপনারা পিআর বাদ দেন। আপনারা ক্ষমতায় থাকেন, নাকি ওই পিআর আর নন-পিআর যে দ্বন্দ্ব, সেটা মেটাবে? জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পথনির্দেশা দেবে? অদ্ভুত ব্যাপার, মানে এগুলো কোন আদর্শিক অবস্থান থেকে এই সফর? যেটা হওয়া উচিত ছিল না, তা-ই হচ্ছে। ফলে ঘুরেফিরে কিন্তু সেই এক। যেই লাউ, সেই কদু। আগের আমলেও যা যা হচ্ছে, এই আমলও তাই তাই হচ্ছে।’
পিএ/টিএ