২৬ সেপ্টেম্বর শুক্রবার শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার ফুটবল লিগ। বাফুফে গতকাল আসন্ন লিগের প্রথম লেগের ফিকশ্চার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেছে। প্রকাশিত ফিকশ্চারে আপত্তি তুলে লিগের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব পরিবর্তনের দাবি তুলেছে। আজ মোহামেডান ক্লাবের ডিরেক্টর ইন চার্জ কাজী ফিরোজ রশীদ বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল বরাবর এই সংক্রান্ত চিঠি দেন।
বাফুফেকে দেয়া চিঠিতে মোহামেডান উল্লেখ করেছে, ‘কোনো রুপ আলোচনা ব্যতিরেকে করা আসন্ন ফুটবল মৌসুমের ফিকশ্চার ফরম্যাট পদ্ধতি ত্রুটিপূর্ণ, সামঞ্জস্যহীন বলে আমাদের কাছে মনে হয়েছে। আমরা স্বচ্ছ, অনুমোদিত, গ্রহণযোগ্য ফিকশ্চার ফরম্যাট পদ্ধতি বাফুফের নিকট আশা করি।’ ফিকশ্চার ফরম্যাট পরিবর্তন ছাড়াও লিগ কমিটির পুর্নবিন্যাস চেয়েছে মোহামেডান।
মোহামেডান ক্লাবের ম্যনেজার ইমতিয়াজ আহমেদ নকীব ফিকশ্চারের ত্রুটি নিয়ে বলেন, ‘বিগত মৌসুমের মাঝপথেই আমরা বলেছিলাম সবার সামনে ফিকশ্চার করার। কোন সফটওয়্যারের মাধ্যমে কিভাবে ফিকশ্চার হয় আমরা কেউ জানি না। এরপরও এবার সব ক্লাবকে না জানিয়ে ফিকশ্চার করা অবশ্যই কোনো বিশেষ দলের স্বার্থ রক্ষার্থে এবং প্রকাশিত ফিকশ্চারে একটি দল অতিরিক্ত সুবিধা পাচ্ছে বলে আমাদের কাছে মনে হচ্ছে।’
চ্যাম্পিয়নশীপ লিগ থেকে রানার্স-আপ হয়ে প্রিমিয়ারে উঠেছে আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ। সেই ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলী বলেন, ‘ফেডারেশন আমাদের সরাসরি ফিকশ্চার দিয়েছে। কোন ছকে কিভাবে ফিকশ্চার হয়েছে এটা আমাদের জানা নেই।’ লিগের ফিকশ্চার এখন ঘরোয়া ফুটবলের যেন নতুন গোলকধাঁধা। কোন ফরম্যাট, কোন সফটওয়্যারে হয় ক্লাবগুলো তো বটেই, লিগ কমিটির অনেকেই জানেন না। গতকাল প্রকাশিত ফিকশ্চার নিয়ে লিগ কমিটির একাধিক কর্মকর্তা সুনির্দিষ্ট কোনো ব্যখ্যাও দিতে পারেননি। মূলত তারা পদ্ধতি সম্পর্কে অবগতও নন।
চ্যাম্পিয়ন দল সর্বনিম্ন দলের সঙ্গে প্রথম ম্যাচ খেলে। অন্য দলগুলোকেও ক্রম অনুযায়ী খেলার সূচি বাংলাদেশেও ছিল। পাতানো বা সমঝোতার ম্যাচ এড়াতে গত দুই মৌসুম সফটওয়্যারের মাধ্যমে ফিকশ্চার হচ্ছে। এতে চ্যাম্পিয়ন দলকে প্রথম ম্যাচ ষষ্ঠ-সপ্তম স্থানের দলের সঙ্গেও খেলতে হয়। গত মৌসুমে লিগে চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংস লিগের প্রথম ম্যাচ খেলেছিল এর আগের মৌসুমে সপ্তম স্থানে থাকা চট্টগ্রাম আবাহনীর বিপক্ষে।
বাফুফেকে দেয়া মোহামেডানের চিঠি
এবার লিগের চ্যাম্পিয়ন মোহামেডানকে প্রথম ম্যাচ খেলতে হবে গত আসরে লিগে ষষ্ঠ হওয়া ফর্টিজের বিপক্ষে। গত লিগে চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংস দ্বিতীয় ম্যাচেই রানার্স আপ মোহামেডানের মুখোমুখি হয়েছিল। এবার চ্যাম্পিয়ন মোহামেডানের দ্বিতীয় রাউন্ডের প্রতিপক্ষ সপ্তম স্থানে থাকা বাংলাদেশ পুলিশ। প্রতি রাউন্ডেই বিভিন্ন বিচ্যুতি ধরা পড়েছে মোহামেডানের চোখে।
মোহামেডান শুধু ফিকশ্চার নয়, লিগ কমিটিরও পরিবর্তন চেয়েছে। বাফুফে সভাপতি বরাবর চিঠিতে ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটি লিখেছে, ‘দেশের ফুটবলের উন্নয়নের স্বার্থে বর্তমান লিগ কমিটির পুনর্বিন্যাস অথবা বিলুপ্ত সাধন করে নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য এবং বাস্তবসম্মত ফুটবল বান্ধব লীগ কমিটি করা প্রয়োজন।’
মোহামেডানের ম্যানেজার নকীব লিগ কমিটির চেয়ারম্যানকে প্রশ্নের কাঠগড়ায় ফেলে বলেন, ‘ফেডারেশন সম্প্রতি নিয়ম করেছে বাফুফে নির্বাহী এবং স্ট্যান্ডিং কমিটির কোনো সদস্য ক্লাবের ডাগ আউটে দাঁড়াতে পারবে না। এজন্য আমি কম্পিটিশন ও জেলা লিগ কমিটিতে থেকে পদত্যাগ করেছি। আমার প্রশ্ন একজন ক্লাবের সভাপতি কিভাবে তাহলে লিগ কমিটির চেয়ারম্যান থাকেন? মোহামেডান ক্লাবের পক্ষ থেকে লিগ কমিটি পুর্নগঠনের দাবি জানানো হয়েছে।’
বাফুফে সিনিয়র সহ-সভাপতি ইমরুল হাসান লিগ কমিটির চেয়ারম্যান। তিনি আবার বসুন্ধরা কিংসেরও সভাপতি। কাজী সালাউদ্দিনের শেষ মেয়াদে শেষ বছরে সালাউদ্দিনের বদলে ইমরুল হাসানকে যখন লিগ কমিটির চেয়ারম্যান করা হয় তখনই স্বার্থের সংঘাত প্রশ্ন উঠেছিল। তাবিথ আউয়াল সভাপতি হওয়ার পরও এক শীর্ষ ক্লাবের সভাপতিকেই লিগ কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে রেখেছেন।
ইএ/এসএন