জাতিসংঘে এরদোয়ান

গাজায় যুদ্ধ নয়, চলছে গণহত্যা

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় যুদ্ধ নয় বরং ইসরায়েলের গণহত্যা চলছে। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে দেওয়া আবেগঘন ভাষণে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান এমনই অভিযোগ করেছেন।

একইসঙ্গে বিশ্ব সম্প্রদায়কে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন তুরস্কের এই প্রেসিডেন্ট। মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড।

মঙ্গলবার নিউইয়র্কে দেওয়া বক্তব্যে এরদোয়ান বলেন, “আমাদের চোখের সামনে গাজায় ৭০০ দিনেরও বেশি সময় ধরে গণহত্যা চলছে। গত ২৩ মাসে ইসরায়েল প্রতি ঘণ্টায় একটি শিশুকে হত্যা করেছে। এগুলো সংখ্যা নয়, প্রতিটি একটি জীবন, একজন নির্দোষ মানুষ।”

তিনি বলেন, আধুনিক ইতিহাসে এমন মানবিক বিপর্যয় আর ঘটেনি। মাত্র দুই বা তিন বছরের শিশুদের অজ্ঞান করার ওষুধ ছাড়াই অঙ্গচ্ছেদ করতে হচ্ছে। বিশ্ব নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “এটি মানবতার সর্বনিম্ন পর্যায়। গাজায় কোনো যুদ্ধ নেই; এখানে দুই পক্ষ নেই। এটি একতরফা আগ্রাসন, গণহত্যা, ব্যাপক হত্যাযজ্ঞের নীতি।”

এদিকে এরদোয়ান ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়া দেশগুলোকে ধন্যবাদ জানান এবং অন্যদের দ্রুত পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানান। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস নিউইয়র্কে উপস্থিত না থাকলেও তুরস্ক “ফিলিস্তিনি জনগণের পক্ষ থেকে কথা বলছে, যাদের কণ্ঠ রুদ্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।”

তিনি অবিলম্বে গাজায় যুদ্ধবিরতি, বাধাহীন মানবিক সহায়তা পৌঁছানো এবং ইসরায়েলের “গণহত্যাকারী চক্রকে” জবাবদিহির আওতায় আনার দাবি জানান। এরদোয়ান অভিযোগ করেন, ইসরায়েল কেবল গাজা বা দখলকৃত পশ্চিম তীরেই সীমাবদ্ধ নয়; সিরিয়া, ইরান, ইয়েমেন, লেবানন ও কাতারেও তাদের আগ্রাসন ছড়িয়ে পড়ছে। আর এটি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি।

বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে এরদোয়ান বলেন, মানবতার খাতিরে আজ অত্যাচারিত ফিলিস্তিনিদের পাশে দৃঢ়ভাবে দাঁড়াতে হবে। তার ভাষায়, ইসরায়েলি হামলা নারীর অধিকার, শিশুর অধিকার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, সমতা ও ন্যায়বিচারসহ সবচেয়ে মৌলিক মানবাধিকারগুলোকেও মুছে দিয়েছে।

তিনি প্রশ্ন রাখেন, “শিশুরা যখন ক্ষুধা ও ওষুধের অভাবে মারা যায়, তখন সেই বিশ্বে শান্তি থাকতে পারে? গত শতকে মানবতা এমন নৃশংসতা প্রত্যক্ষ করেনি।”

পিএ/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
বড় চমক রেখে অ্যাশেজ স্কোয়াডের দল ঘোষণা করল ইংল্যান্ড Sep 24, 2025
img
ডার্ক ওয়েবে ৩ লাখ পাকিস্তানি হজযাত্রীর ডেটা ফাঁস Sep 24, 2025
img
তাহসানের বিদায়ে অভিমানী প্রসূন আজাদ Sep 24, 2025
img
শ্রীলঙ্কার টিকে থাকার সমীকরণ এখন বাংলাদেশের হাতে Sep 24, 2025
img
হত্যা মামলায় সাবেক মন্ত্রী কামরুল রিমান্ডে, সোলায়মান গ্রেপ্তার Sep 24, 2025
img
কনের সাজে ধরা দিলেন অভিনেত্রী তানিয়া বৃষ্টি Sep 24, 2025
img
অভিনেতা নয়, বাবুর্চি হতে চেয়েছিলেন অভিনেতা ধানুশ Sep 24, 2025
img
আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ, আজ ভারতের সামনে বড় পরীক্ষা Sep 24, 2025
img
প্রথম ঘণ্টায় ডিএসই-তে লেনদেন ১৩৯ কোটি টাকা Sep 24, 2025
img
আগামী নির্বাচন সম্পর্কে বিশ্বকে অবহিত করবেন প্রধান উপদেষ্টা : প্রেস সচিব Sep 24, 2025
img
সৌদির ঐতিহ্যবাহী পোশাকে রোনালদো Sep 24, 2025
img

মানবতাবিরোধী অপরাধ

শেখ হাসিনাসহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবেন এ মামলার বিশেষ তদন্ত কর্মকর্তা Sep 24, 2025
img
২৪ সেপ্টেম্বর পালন করা হয় ‘মীনা দিবস’ Sep 24, 2025
আপনি কি হাদিসে জিব্রাইল চিনেন? | ইসলামিক প্রশ্নোত্তর Sep 24, 2025
img
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে আরও ১৯ জনকে বিএসএফের পুশ ইন Sep 24, 2025
img
রুপার দামেও নতুন রেকর্ড, ভরি কত? Sep 24, 2025
img
নিউইয়র্কে ইরানি কূটনীতিকদের জন্য কেনাকাটায় মার্কিন নিষেধাজ্ঞা Sep 24, 2025
img
গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করলেই নোবেল শান্তি পুরস্কার, ট্রাম্পকে জানালেন ম্যাক্রোঁ Sep 24, 2025
img
জাতীয় পুরস্কারের তালিকায় শাহরুখের সঙ্গে আর কারা ছিলেন? Sep 24, 2025
img
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে প্যারিসের মেয়রের সাক্ষাৎ Sep 24, 2025