ইনোভিশন কনসাল্টিংয়ের জরিপ

আওয়ামী লীগকে ১৮.৮% মানুষ ভোট দেবে, খুবই ইন্টারেস্টিং : মাসুদ কামাল

বেসরকারি ব্যবস্থাপনা পরামর্শক সংস্থা ইনোভিশন কনসাল্টিং পরিচালিত ‘জনগণের নির্বাচন ভাবনা’ জরিপের সেপ্টেম্বর পর্বের ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, যারা ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনে কাকে ভোট দেবেন সে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং তা প্রকাশ করেছেন, তাদের ১৮ দশমিক ৮ শতাংশ উত্তরদাতা আওয়ামী লীগকে ভোট দেওয়ার কথা বলেছেন। গত মার্চে প্রথম পর্বের জরিপে এই হার ছিল ১৪ শতাংশ। এ নিয়ে কথা বলেছেন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মাসুদ কামাল। আওয়ামী লীগকে ভোট দেওয়ার তথ্যটি খুবই ইন্টারেস্টিং লেগেছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

মাসুদ কামাল বলেন, আওয়ামী লীগ কিন্তু নির্বাচন অংশ নিতে পারবে বলে এখনো মনে হচ্ছে না। তাদের প্রতি পছন্দ দেখিয়েছে ১৮ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ। এটা কিন্তু একটা খুবই লক্ষণীয় প্রবণতা।

যে দলটা নাই, যে দলটাকে সমর্থন করলে আপনার নানা রকম হেনস্তার শিকার হতে পারেন, সেই দলের প্রতি এত প্রতিকূলতার মধ্যেও ১৮ দশমিক ৮ মানুষ বলেছে তারা থাকলে আমরা তাদেরকে ভোট দিব।

খুবই ইন্টারেস্টিং। আওয়ামী লীগকে কি নির্বাচন করতে দেওয়া উচিত? এটাও প্রশ্নের মধ্যে ছিল। দেখা গেছে যে প্রায় অর্ধেক মানে ৪৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, তারা মনে করেন আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া উচিত। আর এর বিপরীত দিকে ৪৫ দশমিক ৫৮ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করেন, বিচার হওয়ার আগে আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া উচিত নয়।

লক্ষ করুন, এখানেও কিন্তু অল্প ব্যবধান হলেও বেশিরভাগ লোক কিন্তু বলেছেন যে আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া উচিত।

বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) ‘কথা’ নামের নিজের ইউটিউব চ্যানেলে এসব কথা বলেন তিনি।

গত ২ সেপ্টেম্বর থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই জরিপ চালানো হয়, তাতে অংশ নেন ১০ হাজার ৪১৩ জন ভোটার। দেশের ৬৪ জেলার ৫২১টি ওয়ার্ডে এ জরিপ পরিচালনা করে ইনোভিশন কনসাল্টিং। মোট ১০ হাজার ৪১৩ জন ভোটার সেপ্টেম্বরের 'জনগণের নির্বাচন ভাবনা' জরিপে অংশগ্রহণ করলেও তাদের মধ্যে ৫ হাজার ৬৭৩ জন ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনে কাকে ভোট দেবেন সে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং তা জরিপের মধ্যে প্রকাশ করেছেন।

ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগকে ভোট দিতে আগ্রহীদের হার বাড়লেও ভোটের মাঠে থাকা বেশিরভাগ দলের ক্ষেত্রে তা কমেছে। সমর্থনে সবচেয়ে এগিয়ে আছে বিএনপি, জরিপে ৪১ দশমিক ৩০ শতাংশ উত্তরদাতা বিএনপিকে ভোট দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।

এ জরিপের স্যাম্পলিং নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে মাসুদ কামাল বলেন, এই যে ১০ হাজার ৪১৩ জন- সবাই কিন্তু ১৮ বছরের বেশি বয়স্ক। এখানে গ্রামের লোক ছিল, মানে ঢাকার বাইরের লোক ছিল, আবার ঢাকার লোকও ছিল। একটা ব্যালেন্স তারা করেছে। ওই স্যাম্পলিংটা খুব ভালো হয়েছে।

আমি স্যাম্পলিংটাকে ভালোই বলব।

তিনি বলেন, তারা (ইনোভিশন কনসাল্টিং) গত ছয় মাস আগে মার্চ মাসে জরিপ করেছিল। তখন তারা বলছে যে ওই সময় আওয়ামী লীগের প্রতি যে সমর্থন ছিল, বর্তমানে তার সমর্থন আগের তুলনায় বেড়েছে। এটাও কিন্তু জরিপের একটা ইন্টারেস্টিং ফিচার। মানে এখন আবার আওয়ামী লীগের প্রতি তাদের সমর্থন বাড়ছে। জামায়াত এবং বিএনপির প্রতি সামান্য কিছু কমেছে। তারা দেখেছে যে একেকটা বিভাগে একেক ধরনের প্রবণতা।

যেমন বিএনপি ছয়টা বিভাগে এগিয়ে আছে। জামায়াত এগিয়ে আছে রংপুর বিভাগে এবং আওয়ামী লীগ এগিয়ে আছে বরিশাল বিভাগে। এই যে ফিগারগুলো, খুবই ইন্টারেস্টিং। ইন্টারেস্টিং মানে কি, এই ফিগারগুলোকে দেখে ফিগারটার টেন্ডেন্সিটা- যে মানুষ আসলে কি চাচ্ছে এখন, এই মুহূর্তে- এটা দেখে কিন্তু অনেকগুলো সিদ্ধান্ত উপনীত হতে পারবেন এবং ধারণাও নিতে পারবেন। আমার কাছে যে জিনিসটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে, সেই জিনিসটা হলো- উনাদেরকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, আপনার নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সময় ভোট দেওয়ার সময় কি কি বিবেচনা করেন? মার্কা না কি ওই প্রার্থীর যোগ্যতা? না কি প্রার্থীর উন্নয়ন কর্মকাণ্ড- এগুলো নানা কিছু।

আলোচনার শেষের দিকে নিজের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত একটি জরিপের তথ্য দিয়ে তিনি দেখান যে তার জরিপ ও ইনোভিশন কনসাল্টিং পরিচালিত জরিপের ফলাফলে ভিন্নতা রয়েছে। এ সময় তিনি বলেন, জরিপ জরিপই। জরিপে আস্থা রাখা নিরাপদ না। আপনারা জরিপের উপর আস্থা রাইখেন না। ইনোভিশনের উপর রাইখেন না, আমার উপরও রাইখেন না, কোনো সমস্যা নাই। তবে টেন্ডেন্সিগুলো মাথায় রাইখেন।

এমআর 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
দক্ষিণ কোরিয়ায় জনশক্তি রপ্তানি বাড়াতে চান উপদেষ্টা আসিফ নজরুল Nov 14, 2025
img
গণভোট ও নির্বাচন একসঙ্গে হওয়া প্রসঙ্গের ব্যাখ্যা দিলেন মির্জা গালিব Nov 14, 2025
img
'যে সৎ কাজটা তোমাকে ভয় দেখায়, সেটাই করো' Nov 14, 2025
img
“যে বিষয়ে কিছুই জানি না, সেখানে যাব না। অন্তত লোক হাসাতে চাই না” Nov 14, 2025
img
কুমিল্লার দেবিদ্বার থেকেই নির্বাচন করব: হাসনাত আবদুল্লাহ Nov 14, 2025
img
নোয়াখালীতে জামায়াত প্রার্থীর গণসংযোগ, যুবদলের হামলার অভিযোগ Nov 14, 2025
img
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাবেক নেতা আটক Nov 14, 2025
img
আর্জেন্টিনার অনুশীলনে স্পেনে বিশাল জনসমাগম, মেসির কৃতজ্ঞতা প্রকাশ Nov 14, 2025
img
ইমাম প্রশিক্ষণে সৌদি সরকারের সহায়তার আশ্বাস Nov 14, 2025
img
আজ থেকে শুরু খালেদা জিয়ার পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা Nov 14, 2025
img
আমি ব্যর্থ হয়েছি, জোড় হাতে ক্ষমা চাইছি: শাওন Nov 14, 2025
img
দেশের ৪ বিভাগে নতুন কমিশনার Nov 14, 2025
img
আড়াইহাজারে বিএনপি-আওয়ামী লীগ দফায় দফায় সংঘর্ষে আহত ১৫ Nov 13, 2025
img
এই ফলাফলে খুশি নই, হতাশাজনক: ক্যাবরেরা Nov 13, 2025
img
আরো ১৪ জেলায় নতুন ডিসি Nov 13, 2025
img
ভারত ম্যাচের আগে হামজাকে নিয়ে দুঃসংবাদ Nov 13, 2025
img
প্রশাসন নিশ্চুপ থাকলে পরিস্থিতি আরও জটিল হবে: গয়েশ্বর Nov 13, 2025
img

অ্যাটর্নি জেনারেল

ধর্ম যার যার উৎসব সবার, এই বিশ্বাস থেকে বিজয়া পুনর্মিলনীতে এসেছি Nov 13, 2025
img
'দর্শকের উন্মাদনাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য আমি প্রচুর স্বার্থত্যাগ করি' Nov 13, 2025
img
একই দিনে গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন জাতির সঙ্গে তামাশা: রেজাউল করীম Nov 13, 2025