মালয়েশিয়ার সেলাঙ্গর রাজ্যের পুলাউ ইন্দাহ শিল্প এলাকায় বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাতে শুরু হওয়া অভিযানে বিভিন্ন অভিবাসন সংক্রান্ত অপরাধে ৬৬২ জন বিদেশি অভিবাসীকে আটক করেছে মালয়েশিয়া ইমিগ্রেশন বিভাগ।
সেলাঙ্গর ইমিগ্রেশন বিভাগের পরিচালক খাইরুল আমিনুস কামারুদিন জানিয়েছেন, গত চার মাস ধরে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযানটি পরিকল্পনা করা হয়। অভিযানে ১০০টিরও বেশি স্থাপনায় অভিযান চালানো হয় এবং ৯টি দোকান ঘিরে ফেলা হয়।
সেলাঙ্গর ইমিগ্রেশন বিভাগ, রয়েল মালয়েশিয়ান পুলিশ, মালয়েশিয়ান মেরিটাইম এনফোর্সমেন্ট এজেন্সি, এয়ার অপারেশনস ফোর্স, রয়েল ক্লাং সিটি কাউন্সিল, জাতীয় নিবন্ধন বিভাগ। মোট ২৪২ জন কর্মকর্তা ও কর্মী এই অভিযান পরিচালনায় অংশ নেন।
পরিচালক জানান, ১,১৩২ জনকে তল্লাশি করে যাদের মধ্যে ৬৬২ জনকে আটক করা হয়। তাদের মধ্যে ৬৪৩ জন পুরুষ ও ১৯ জন নারী, যাদের বয়স ১৬ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে।
আটকদের মধ্যে, ইন্দোনেশিয়া- ৪৩৭ জন, বাংলাদেশ- ১৫০ জন, পাকিস্তান- ৩৫ জন, মিয়ানমার- ৩৬ জন, নেপাল- ২৪ জন, ভারত- ১০ জন।
আটককৃতদের প্রথমে সেলাঙ্গর ইমিগ্রেশন অফিসে নিয়ে যাওয়া হয় নথিপত্র যাচাইয়ের জন্য এবং পরে সেমেনিহ ইমিগ্রেশন ডিপোতে স্থানান্তর করা হয়।
পরিচালক আরও জানান, আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ রয়েছে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- বৈধ পরিচয়পত্র না থাকা, ভিসার শর্ত লঙ্ঘন, নির্ধারিত সময়ের বেশি অবস্থান, ভুয়া বা অচেনা কার্ড ব্যবহার।
এছাড়া একটি অব্যবস্থাপনায় পরিচালিত বিদেশি শ্রমিকদের ডরমেটরি চিহ্নিত করা হয়েছে, যা পরবর্তী তদন্তের জন্য জনশক্তি বিভাগে পাঠানো হয়েছে।
খাইরুল আমিনুস বলেন, আটককৃতদের বিরুদ্ধে ১৯৫৯/৬৩ সালের ইমিগ্রেশন আইন, ১৯৬৬ সালের পাসপোর্ট আইন, ১৯৬৩ সালের ইমিগ্রেশন রেগুলেশন এবং ২০০৭ সালের মানব পাচার ও অভিবাসী চোরাচালান বিরোধী আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আইন লঙ্ঘনের ধরন:
ধারা ৬(১)(সি): বৈধ পাস বা ভ্রমণ নথি না থাকা।
ধারা ১৫(১)(সি): অতিরিক্ত সময় অবস্থান করা।
প্রবিধান ৩৯(বি): পাসের শর্ত ভঙ্গ।
তিনি আরও বলেন, জনসাধারণ এবং নিয়োগকর্তাদের স্মরণ করিয়ে দেওয়া হচ্ছে যে, অবৈধ অভিবাসীদের রক্ষা করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ এবং এর জন্য কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।
তবে কিছু নিয়োগকর্তা তাদের কর্মীদের পাসপোর্ট জমা দিয়ে সহায়তা করেছেন, যা প্রমাণ করে যে সবাই আইন ভঙ্গ করেননি।
পরিচালক জানান, মালয়েশিয়ায় বিদেশি কর্মীদের প্রয়োজন রয়েছে, তবে তাদের অবশ্যই দেশের নির্ধারিত নিয়ম মেনে চলতে হবে এবং বৈধভাবে কাজ করতে হবে।
তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, শুধু পুলাউ ইন্দাহ নয়, বরং সেলাঙ্গর জুড়েই এই ধরনের অভিযান চলমান থাকবে।
কেএন/টিএ