নোয়াখালী জেলাকে স্বতন্ত্র প্রশাসনিক বিভাগ ঘোষণার দাবিতে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে জেলা শহর মাইজদী। সাধারণ জনতা মিছিল ও ব্লকেড কর্মসূচি পালন করেছে।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) জুমার নামাজ পরে নোয়াখালী জেলা জামে মসজিদ থেকে হাজার হাজার মুসল্লি মিছিল বের করে। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে সুপার মার্কেটের সামনে ব্লকেড কর্মসূচি পালন করে শেষ হয়।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনীসহ আশপাশের জেলাকে নিয়ে স্বতন্ত্র নোয়াখালী বিভাগ ঘোষণার দাবি জানায়। তাদের এ দাবি বাস্তবায়ন না হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন হেফাজতে ইসলাম নোয়াখালী জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা ইয়াছিন আরাফাত, নোয়াখালী জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন খান, জাস্টিস ফর জুলাইয়ের সদস্যসচিব ইয়াসির আরাফাত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক যুগ্ম সদস্যসচিব মেহেদী হাসান সীমান্ত ও সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মামুনুর রশীদ তুষারসহ অনেকেই।
এ সময়ে হাজার হাজার আন্দোলনকারীসহ নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়ন সমন্বয় কমিটি, নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়ন সংগ্রাম পরিষদ এবং সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
এতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন নেতাকর্মীরা অংশ নেন।
জেলা শহর মাইজদীতে এক ঘণ্টার ব্লকেড কর্মসূচির কারণে নোয়াখালী-কুমিল্লা, নোয়াখালী-ফেনী সড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। প্রায় এক ঘণ্টা স্থায়ী এ ব্লকেডের ফলে ওই সময় সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ থাকে।
বক্তারা জানান, দেশের প্রাচীনতম জেলার একটি নোয়াখালী।
দেশের বৈদেশিক মুদ্রার বড় অংশ জোগান দেয় নোয়াখালীর অধিবাসীরা। প্রাচীন এ জেলাকে বিভাগ ঘোষণার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে বৃহত্তর এ জেলার মানুষ। কিন্তু সম্প্রতি ষড়যন্ত্রমূলকভাবে পার্শ্ববর্তী জেলা কুমিল্লার সঙ্গে নোয়াখালী অঞ্চলকে যুক্ত করে নতুন বিভাগ করা হচ্ছে বলে তারা জেনেছেন। এটি কখনোই হতে দেবে না বৃহত্তর নোয়াখালীর প্রায় এক কোটি মানুষ। তারা অবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত বাতিল করে নোয়াখালী বিভাগ করার দীর্ঘদিনের এ দাবি সময়ের প্রয়োজনে এখন যৌক্তিক বলে মনে করে।
নোয়াখালী শুধুমাত্র একটি জেলা নয়, এটি একটি ঐতিহ্যবাহী জনপদ। যা প্রশাসনিক, অর্থনেতিক ও ভৌগোলিক দিক থেকে অনেক আগেই বিভাগ হওয়ার সব যোগ্যতা অর্জন করেছে। নোয়াখালী বিভাগের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। রাষ্ট্র যদি আঞ্চলিক স্বার্থে এর ভাষা বোঝে তবে নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়ন খুব বেশি দূরে নয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার নোয়াখালীর চাটখিলে ও সোনাইমুড়ীতে ব্লকেড, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ হয়েছে।
আইকে/টিকে