৭৪ বলে সেঞ্চুরি, ১০৩ বলে দুইশ আর হ্যাটট্রিক ছক্কা মেরে ১৩২ বলে ছুঁয়েছেন তিনশ। অস্ট্রেলিয়ার ক্লাব ক্রিকেটে ট্রিপল সেঞ্চুরি করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন হারজাস সিং। ৩৫ ছক্কা ও ১৪ চারে ১৪১ বলে বাঁহাতি ব্যাটারের ৩১৪ রানের ইনিংসে ৫০ ওভারে ৪ উইকেটে ৪৭৪ রান তোলে ওয়েস্টার্ন সাবার্বস। সিডনি ক্রিকেট ক্লাবকে ২৮৭ আটকে দিয়ে সহজেই ম্যাচ জিতে নিয়েছে হারজাসে ওয়েস্টার্ন।
নিউ সাউথ ওয়েলস ফার্স্ট গ্রেড ক্রিকেটে ওয়েস্টার্নের হয়ে খেলছেন হারজাস। অ্যাশফিল্ডের প্রাটেন পার্কে ইনিংসের ১১তম ওভারে তিন নম্বরে ব্যাটিং করতে নামেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। শুরুটা অবশ্য ছিল ধীরগতির। প্রথম চার বলে রানই নিতে পারেননি তিনি। পঞ্চম বলে প্রথম রানের দেখা পান হারজাস। ইনিংসের ১৮তম ওভারে হান্টার হলের বিপক্ষে ১৪ রান নেন তিনি। ২০তম ওভারে গিয়ে ৩৩ বলে পেয়েছেন হাফ সেঞ্চুরির দেখা।
পঞ্চাশ ছোঁয়ার পর একটু ধীরগতিতে ব্যাটিং করতে থাকেন হারজাস। ৭৪ বলে তিন অঙ্ক ছুঁয়েছেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। অর্থাৎ পঞ্চাশ থেকে একশতে যেতে ৪১ বল খেলতে হয়েছে তাকে। সেঞ্চুরির পরই অবশ্য তাণ্ডব চালাতে থাকেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলিয়ান এই ব্যাটার। পরের দুই ওভারে ডেভিস ও হলকে পাঁচটি ছক্কা ও একটি চার মেরেছেন তিনি। ৩৭তম ওভারে থমাস মালেনের উপর ঝড় বইয়ে দেন তিনি। সেই ওভারে মেরেছেন পাঁচটি ছক্কা।
বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে মাত্র ১০৩ বলে ডাবল সেঞ্চুরি ছুঁয়েছেন হারজাস। অর্থাৎ একশ থেকে দুইশ করতে মাত্র ২৯ বল খেলেছেন তিনি। শেষের ১০ ওভারেও ঝড়ো ব্যাটিং করতে থাকেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। ইনিংসের শেষ ওভারে যখন ব্যাটিং করছিলেন তখন ১২৯ বলে ২৮৩ রানে অপরাজিত ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার হয়ে যুব বিশ্বকাপ জেতা এই ব্যাটার। প্রথম তিন বলেই ছক্কা মেরে ১৩২ বলে ট্রিপল সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন হারজাস।
শেষ পর্যন্ত ৩৫ ছক্কা ও ১৪ চারে ১৪১ বলে ৩১৪ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। যেখানে ২৬৬ রানই এসেছে বাউন্ডারি থেকে। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটের স্বীকৃতি না থাকায় ভারতের নারায়ণ জাগাদিশানের ২৭৭ রানের রেকর্ড ভাঙা হলো না অজি ব্যাটারের। এমনকি ভিক্টর ট্রাম্পার ও ফিল জ্যাককেও ছাড়িয়ে যেতে পারেননি হারজাস। ১৯০৩ সালে পাডিংটনের হয়ে রেডফার্নের বিপক্ষে ৩৩৫ রানের ইনিংস খেলেছিলেন ট্রাম্পার।
নিউ সাউথ ওয়েলস ফার্স্ট গ্রেড ক্রিকেটে এটিই সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের ইনিংস। দুইয়ে আছেন ফিল জ্যাক। ২০০৭ সালে সাদারল্যান্ডের হয়ে ২৫৭ বলে ৩২১ রানের ইনিংস খেলেছিলেন নর্থ সিডনির বিপক্ষে। যার ফলে হারজাসের ইনিংসটি টুর্নামেন্টের তৃতীয় ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ। হারজাসের ওমন ইনিংসের দিনে ওয়েস্টার্নের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৭ রান করেছেন জো ক্লার্ক।
২০০৫ সালে সিডনিতে জন্ম নেয়া হারজাসের বাবা-মা দুজনই ভারতীয়। তবে বাঁহাতি ব্যাটারের জন্ম ও বেড়ে ওঠা অস্ট্রেলিয়াতে। গত বছর অজিদের হয়ে যুব বিশ্বকাপও জিতেছেন তিনি। ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে চার নম্বরে নেমে ৬৪ বলে ৫৫ রানের ইনিংস খেলে অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপ জয়ে অবদান রেখেছিলেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে মিডিয়াম পেস বোলিংও করেন হারজাস।
এসএস/টিকে