নির্বাচনের আগে গণভোটে অনড় অবস্থানে জামায়াত

জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজনের বিষয়ে অনড় অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের বলেন, নির্বাচন যদি সুষ্ঠু না হয়, গণভোটও সুষ্ঠু হবে না। তাই গণভোট আগে হওয়াই যুক্তিযুক্ত।

বুধবার (৮ অক্টোবর) রাতে ফরেন সার্ভিস একাডেমির মিলনায়তনে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকের বিরতিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

ডা. তাহের বলেন, গণভোটের বিষয়ে সবাই একমত। নভেম্বরের মধ্যেই গণভোটটা আলাদাভাবে হয়ে যাওয়া দরকার। কিছু বিষয়ে আমাদের মতভিন্নতা থাকলেও গণভোট নিয়ে এখন আর কোনো বিরোধ নেই। জুলাই চার্টারের যে সংস্কার প্রস্তাব রয়েছে, সেটি গণভোটের মাধ্যমেই গৃহীত বা বাতিল হবে।

তিনি বলেন, অনেকেই বলেছেন, গণভোট এবং জাতীয় নির্বাচন একসাথে হয় বা একসাথে হলে ভালো হয়। আমরা বলেছি না, গণভোট একটি আলাদা বিষয়, জাতীয় নির্বাচন একটি আলাদা বিষয় এবং দুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। গণভোটটি হবে আমাদের সমস্ত সংস্কার— জুলাই সনদ হিসেবে যেটাকে আমরা একটি প্যাকেজ হিসেবে বিবেচনা করছি। সেটাকে নিয়ে গণভোট হবে। সুতরাং গণভোটটা আগেই হয়ে যাওয়া দরকার। জনগণ যদি গ্রহণ করে, সেই গণভোটের ভিত্তিতেই পরবর্তী প্রক্রিয়াগুলো হবে, নির্বাচন হবে। আর জনগণ যদি বাতিল করে দেয়, তাহলে তো সেটা এখানে শেষ হয়ে যাবে। সুতরাং বিষয়টা খুব স্পষ্ট হবে। নির্বাচনের আগেই গণভোট হবে এবং নির্বাচন তার ভিত্তিতে হবে।

দুইটি নির্বাচন একসাথে হলে ভালোর চেয়ে মন্দ বেশি জানিয়ে তিনি বলেন, মন্দ দিকটা হচ্ছে জুলাই চার্টারে এমন কিছু ইস্যু আছে, যা আগামী নির্বাচনের একটি বিষয়বস্তু হবে। যেমন আপার হাউজের একটি সাবজেক্ট আছে। আপার হাউসের যদি আমরা গণভোটটা গ্রহণ করি, তাহলে আপার হাউস তো আগামী নির্বাচনের সময় এটা নির্বাচনের একটি অংশ হবে। যদি আপনি একই দিন করেন, তাহলে আপার হাউজ কী হবে, কী হবে না, টিকবে কি টিকবে না, দরকার আছে কি নাই, জনগণ গ্রহণ করবে কি করবে না—এটা তো অনির্ধারিত রয়ে গেল।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে জাতীয় নির্বাচনে তো এইরকম ঘটনা ঘটেছে অতীতে। গণভোটের যে রায়, সে রায়ও তো স্থগিত হয়ে যাবে। এজন্য দুইটিকে একাকার করলে একটার ভাগ্যের সঙ্গে আরেকটার ভাগ্য মিলে যাবে। সুতরাং নির্বাচন যদি প্রশ্নবোধক হয়, তাহলে আপনার গণভোটের চার্টারও প্রশ্নবোধক হয়ে যাবে। অথচ সংশোধনীর ব্যাপারে জুলাই চার্টারের ব্যাপারে আমরা সকলে একমত আছি। সেখানে একটা টেকনিক্যাল প্রবলেম আছে।

ডাকসু ও জাকসু নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, আমরা আশা করছি, নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। সম্প্রতি দুটি ছোট নির্বাচন হয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটি হয়েছে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় আরেকটি হয়েছে। দেখেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাত তিনটা-চারটা পর্যন্ত আমাদের টেনশনে ঘুম আসেনি। কারণ সেখানে ধাক্কা মারা, মিছিল করা ও অভিযোগের ঘটনা ঘটেছে। নির্বাচনটা সুষ্ঠুভাবে হওয়ার পরেও সহজে মেনে নেওয়ার যে মানসিকতা, এটা কিন্তু আমরা দেখিনি। জাহাঙ্গীরনগর নির্বাচনে ৪৮ ঘণ্টা পরে রায় দিয়েছে। ঠিক আছে না?

তিনি বলেন, আমাদের অবস্থান হচ্ছে গণভোট হবে—এ ব্যাপারে আমরা সবাই একমত। কিন্তু গণভোটটি নভেম্বরের শেষের দিকে যদি হওয়া যায়, কারণ আমাদের কাছে রেকর্ড আছে, বাংলাদেশেই ১৯ দিনের ব্যবধানেও গণভোট হয়েছে। এক মাসের ব্যবধানেও গণভোট হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন হবে এবং নভেম্বরের ভিতরেই জুলাই চার্টারের ওপরে আমাদের গণভোট হবে।

ইএ/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
বাংলাদেশে বাস করে মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করা কাম্য নয় : কাদের সিদ্দিকী Nov 23, 2025
img
ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিএনপি নেতাদের সৌজন্য সাক্ষাৎ Nov 23, 2025
img
পাকিস্তানের সিন্ধ অঞ্চল একদিন ভারতের অংশ হবে : রাজনাথ সিং Nov 23, 2025
img
হাসিনা আত্মসমর্পণ করলে আ. লীগের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হতে পারে : মঞ্জু Nov 23, 2025
img
বন্দর চুক্তি নিয়ে গোপনীয়তা উদ্বেগজনক : বাংলাদেশ ন্যাপ Nov 23, 2025
img
সাড়ে ৮ ঘণ্টা পর ঢাকা-ময়মনসিংহে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক Nov 23, 2025
img
শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে চবি ছাত্রদলের ৩ নেতাকে শোকজ Nov 23, 2025
img
দেশে যেকোনো সময় ৮ মাত্রার ভূমিকম্পের আশঙ্কা Nov 23, 2025
img
হাসপাতালে ভর্তি বেগম খালেদা জিয়া Nov 23, 2025
img
সৌদি আরবে গ্রেপ্তার ২২ হাজারের বেশি প্রবাসী Nov 23, 2025
img
নারীর অন্তর্জ্ঞান নিয়ে হৃদয়ছোঁয়া বার্তা দিলেন রাশ্মিকা Nov 23, 2025
img
প্রকৃত ইতিহাস জানার অধিকার থেকে নতুন প্রজন্মকে বঞ্চিত করলে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হবে না: সোহেল তাজ Nov 23, 2025
img
মাদকের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আওয়াজ তুলতে হবে : এ্যানি Nov 23, 2025
img
বক্স অফিসে সাড়া জাগিয়ে প্রথম দিনেই আয় ৬১৪ কোটি টাকা Nov 23, 2025
img
ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে জামায়াত আমিরের বৈঠক Nov 23, 2025
img
বাংলাদেশে বর্তমানে কানাডার বিনিয়োগ দাঁড়িয়েছে ১৩২ মিলিয়ন ডলারে Nov 23, 2025
img
ফাইনালে পাকিস্তানের বিপক্ষে টস জিতে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ Nov 23, 2025
img
উইকেট শিকারে হেরাথের রেকর্ড স্পর্শ তাইজুলের Nov 23, 2025
img
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভারতীয় ৬ টন আলু জব্দ Nov 23, 2025
img
মনগড়া মতবাদে গড়া সমাজ শান্তি-সম্মান দিতে পারবে না : জামায়াত আমির Nov 23, 2025