জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মাসুদ কামাল বলেছেন, বুধবার দিন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে গোল টেবিল বৈঠক হয়েছিল। সেই গোল টেবিল বৈঠকের আয়োজক ছিল ‘সব প্রাণ’ নামের সংগঠন। সেখানে ড. ইউনূসের সরকার আসার পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বা মানবাধিকার যে পরিস্থিতি সেটা কেমন ছিল? তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ওখানে ‘অধিকার’ যে সংগঠনটা আছে, তার একজন গবেষক অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন এবং সেখানে বলা হয়েছে যে, আসলে বাস্তবতাটা কি, দেশটা ভালো নয়, সেটা নানা তথ্য প্রমাণ দিয়ে বোঝানো হয়েছে।
সেখানে প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন এবং তিনি বরাবর যা করেন, সবকিছু উড়িয়ে দেন এবং সরকারের পক্ষে যতটা পারেন বলেন এবং মানে অনেকটা উনাকে দেখলে, তার কথাবার্তা শুনলে আমার মাঝেমাঝে বিগত সরকারের ওবায়দুল কাদের অথবা হাছান মাহমুদের কথা মনে পড়ে যায়।
যা-ই হোক, উনি বলেছেন, বাংলাদেশের গণমাধ্যম এখন বেশি বেশি স্বাধীনতা ভোগ করছে। যেহেতু পত্রিকাগুলো অনেক রকম স্বাধীনতা পাচ্ছে, কাজেই তারা যা ইচ্ছা তা-ই লেখে। উনার মূল বক্তব্য এটাই। কিন্তু যে সমস্ত কথা-বার্তা লেখা হয়েছে, এগুলো আসলে পত্রিকা থেকে নেওয়া। কাজেই পত্রিকা বিশ্বাস করা যায় না। বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি আসলে অনেক ভাল। এই হলো তার মোদ্দা কথা।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) ‘কথা’ নামের নিজের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত এক ভিডিওতে এসব কথা বলেন তিনি।
মাসুদ কামাল বলেন, শফিকুল আলম এসব কথা বলে চলে যাওয়ার পর সেখানে আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন। এরমধ্যে গুম কমিশনের একজন সদস্য নূর খান, তিনি সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেছেন যে উনার (প্রেসসচিব) কথায় আমি অসুস্থবোধ করছি। তিনি যে অভিযোগটা দিয়ে গেলেন, মানবাধিকার সংগঠনগুলো সব পরিসংখ্যান নেয় পত্রিকা থেকে, সরকারের প্রশাসন যে রিপোর্ট করে সেটি সত্য, আর মানবাধিকারকর্মী এবং সাংবাদিকরাও যে রিপোর্ট করেন সেটার সত্যতা নিয়ে তিনি (প্রেসসচিব) প্রশ্ন তুলেছেন।
এটা দুর্ভাগ্যজনক যে অন্তর্বর্তী সরকারের একজন প্রতিনিধির কাছ থেকে এ ধরনের বয়ান শুনতে হল।
তিনি বলেন, বেসিক কথা হলো শফিকুল আলম মনে করতেছেন পত্রিকাগুলো ভুল না কি, তাহলে উনার যে সঠিক তথ্যটা- এটার সোর্সটা কী? পুলিশ, অথবা সরকারি প্রতিষ্ঠান! তো সরকারি প্রতিষ্ঠান সঠিক বলে এবং পত্রিকাগুলো ভুল বলে, গণমাধ্যমগুলো ভুল বলে- এই যে বয়ানটা উনি দিচ্ছেন, এটা কিন্তু আগের সরকারও দিতো, এই হাছান মাহমুদ দিতো, ওবায়দুল কাদেরও দিতো। আমরা আসলে কী পরিবর্তন আনলাম, বুঝতে পারলাম না। আমরা হাছান মাহমুদ, ওবায়দুল কাদেরকে ব্লেন্ডার করে শফিকুল আলমকে পেয়েছি। জানি না, এই জাতির মধ্যে কী আছে।
ইউটি/টিকে