সিনেমা ছেড়ে সন্ন্যাসে, ধর্মপরায়ণ হল ঐশ্বরিয়ার প্রতিদ্বন্দ্বী

নব্বইয়ের দশকে মডেলিং ও অভিনয়ের জগতে আলোড়ন তোলা বরখা মদন একসময় ছিলেন বলিউডের অন্যতম পরিচিত মুখ। সুস্মিতা সেন ও ঐশ্বরিয়া রাইয়ের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে তাকে দেখা হতো এবং নিজেকে প্রমাণ করেছিলেন অনেকবার। কিন্তু ২০১২ সালে তিনি সকলকে অবাক করে দিয়ে গ্ল্যামার ও সিনেমার ঝলমলে দুনিয়া ছেড়ে শান্তি ও ধ্যানমগ্ন জীবনের পথ বেছে নেন। বর্তমানে তিনি একজন বৌদ্ধ সন্ন্যাসিনী।

পাঞ্জাব প্রদেশের জন্ম নেওয়া বরখা শৈশব থেকেই নাচ, শিল্প এবং আধ্যাত্মিকতার প্রতি গভীর আগ্রহী ছিলেন। ১৯৯৪ সালে ‘ফেমিনা মিস ইন্ডিয়া’ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে যদিও মূল খেতাবটি পাননি, তবে তিনি ‘মিস ট্যুরিজম ইন্ডিয়া’ খেতাব অর্জন করেন এবং আন্তর্জাতিক মিস ট্যুরিজম প্রতিযোগিতায় তৃতীয় রানার-আপ হন। এই সাফল্য তাকে মডেলিং জগতে পরিচিতি এনে দেয়।

এরপর তিনি নিয়মিত বিজ্ঞাপন, র‍্যাম্প শো ও প্রিন্ট ক্যাম্পেইনে কাজ করতে থাকেন।

১৯৯৬ সালে অক্ষয় কুমার, রেখা ও রাভিনা ট্যান্ডনের সঙ্গে ‘খিলাড়িদের খিলাড়ি’ ছবির মাধ্যমে বলিউডে অভিষেক ঘটে বরখা মদনের। যদিও ছবিতে তার ভূমিকা ছিল ছোট, তবে তার সৌন্দর্য ও সাবলীল অভিনয়ে দর্শকরা মুগ্ধ হন। পরবর্তীতে তিনি একাধিক হিন্দি চলচ্চিত্র এবং টেলিভিশন ধারাবাহিকে কাজ করেছেন, বিশেষ করে রাম গোপাল বর্মা পরিচালিত হরর থ্রিলার ‘ভূত’ (২০০৩)-এ তার অভিনয় ব্যাপক প্রশংসিত হয়।



অভিনয়ের পাশাপাশি, বরখা নিজস্ব প্রযোজনা সংস্থা ‘গোল্ডেন গেট এলএলসি’ প্রতিষ্ঠা করেন এবং ‘সোচ লো’ ও ‘সুরখাব’ নামে দুটি চলচ্চিত্র প্রযোজনা করেন। তবে, তার জীবনে এক গভীর পরিবর্তন আসে যখন ধ্যান ও আধ্যাত্মিকতার প্রতি তার আগ্রহ বাড়তে থাকে। ২০১২ সালে তিনি দক্ষিণ ভারতের সেরা জে মঠে লামা জোপা রিনপোচের তত্ত্বাবধানে বৌদ্ধ ভিক্ষুণী হন। তার নতুন নাম দেওয়া হয় ভেনারেবল গ্যালটেন সামতেন, যার অর্থ ‘যিনি শান্তিতে বাস করেন’।

আজকাল বরখা মদন নিয়মিত ধ্যান শিবির, আধ্যাত্মিক আলোচনা এবং মানবিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করছেন। তার এই রূপান্তর এবং আধ্যাত্মিক যাত্রা বহু মানুষকে অনুপ্রাণিত করছে এবং তাকে অনুসরণ করে অনেকেই নিজের জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছেন।

এমকে/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
‘অবৈধ অনুপ্রবেশে’ ভারতে আটক ৩৪ বাংলাদেশি নাগরিক Oct 10, 2025
img
‘না বলা’ অনেক কথা বলবেন নোবেল Oct 10, 2025
img
বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সুখবর দিলেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম Oct 10, 2025
img
আগে গণভোট পরে সংসদ নির্বাচন, দাবি খেলাফত মজলিসের Oct 10, 2025
রাকসুতে আচরণবিধি সবাই নিজেদের মতো বানিয়ে ফেলছে: জিএস প্রার্থী সালাউদ্দিন Oct 10, 2025
img
আর্জেন্টিনার পরের ম্যাচে দলে জায়গা হবে না মেসির Oct 10, 2025
img
রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলায় কিয়েভজুড়ে বিদ্যুৎ বিপর্যয় Oct 10, 2025
img
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ৩০৮ Oct 10, 2025
img
জুবিনের মৃত্যুর পরও সিঁদুর পরছেন স্ত্রী গরিমা! Oct 10, 2025
img
ট্রাম্প কেন নোবেল পেলেন না, জানাল নোবেল কমিটি Oct 10, 2025
ম্যাচ হারায় অনেক কষ্ট পেয়েছি, শেষের গোলটা আশা করিনি Oct 10, 2025
'মাছ চাষ করলেও তোমার কিছু মাছ খাইতে পারবা'! Oct 10, 2025
img
খাট-সোফা ছাড়াই বিয়ে সেরেছিলেন অপু বিশ্বাস! Oct 10, 2025
“গাজীপুর থেকে এসেছেন জনসংযোগে যোগ দিতে - হাদির আবেগঘন প্রতিক্রিয়া” Oct 10, 2025
img
পিআর নিয়ে জাতির রায় আমরা গ্রহণ করব: গোলাম পরওয়ার Oct 10, 2025
img
৩৩০ গুণ বেতন পেয়ে চাকরি ছাড়েন কর্মী, আদালত দিলো তার পক্ষেই রায় Oct 10, 2025
img

ট্রাম্পের দাবি

ইরানের সঙ্গে এবার কাজ করবে যুক্তরাষ্ট্র Oct 10, 2025
img
দেশের অধিকাংশ মানুষ পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চায়: মিয়া গোলাম পরওয়ার Oct 10, 2025
img
৪৯তম বিশেষ বিসিএস: লিখিতে উত্তীর্ণদের মৌখিক পরীক্ষা ২৬ অক্টোবর Oct 10, 2025
img
শান্তিতে নোবেল পুরষ্কার পাওয়া হল না ট্রাম্পের Oct 10, 2025