দেশে নিত্য নতুন নাটক চলছে মন্তব্য করে সাবেক সংসদ সদস্য ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক গোলাম মাওলা রনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগে হবে নাকি একটা গণভোট হবে? এই দুটো বিষয় নিয়ে যেভাবে তর্ক-বিতর্ক চলছে, একই সঙ্গে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের যে পদ্ধতি সেখানে গতানুগতিকভাবে আমরা যেভাবে বিগত দিনে ভোট দিয়ে আসছি সেইভাবে হবে? নাকি পিআর পদ্ধতি অর্থাৎ রাজনৈতিক দলগুলো সারা বাংলাদেশে তাদের প্রার্থী ঘোষণা না করে শুধু দলের প্রতীক দেবে আর প্রার্থীরা সেই দলের পকেটে থাকবে?’
নিজের ইউটিউব চ্যানেলে দেওয়া ভিডিওবার্তা তিনি বলেন, ‘পিআর পদ্ধতির যে রাজনীতি, নেপাল বা ধরুন ইসরায়েলে কোনো দেশেই আসলে এখন পর্যন্ত ভালো ফলাফল আনতে পারেনি।
এখন সেই পিআর পদ্ধতির ভূত আমাদের দেশে চেপে বসেছে। আবার আরেকটি বিষয় দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ। উচ্চকক্ষ সংসদ, নিম্নকক্ষ সংসদ; যেমন ব্রিটেনের লর্ডসভার মত করে আমাদের একটা উচ্চকক্ষ থাকবে। ভারতে যেমন বিধানসভা এবং লোকসভা।’
‘যারা জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হবেন পিআর পদ্ধতিতে, তারা নিম্নকক্ষে থাকবেন। আর উচ্চকক্ষ লর্ডসভাতে এই রায়বাহাদুর খান, বাহাদুর লর্ড মানে প্রত্যেকটা দলের কিছু লোকজন থাকেন, যারা টাকা দেন, পয়সা দেন বা একটু ভাবসাব দেখান। তাদেরকে লর্ড সভাতে স্থান দেওয়া হবে।
এটা অনেকটা রাজকীয় ব্যাপার। ভারতের মতো, ইংল্যান্ডের মতো। কিন্তু বাংলাদেশে আসলে ওরকম লর্ড, রায় বাহাদুর, খান বাহাদুর, আছে আমি দেখি না।’
রনি বলেন, ‘এসব বিষয় নিয়ে গত এক বছরে বাংলাদেশ যতটা নাটকীয়ভাবে পরিবর্তন হয়েছে, গত ১০০ বছরে এভাবে এত অল্প সময়ের মধ্যে পরিবর্তিত হয়নি।
আমরা এই গত এক বছরে পতনের অতল গহ্বরে পৌঁছে গেছি। এই সময়টিতে যে বিতর্কগুলো হচ্ছে, সেই বিতর্কগুলো আমার দৃষ্টিতে একেবারে অপ্রয়োজনীয়। এগুলো করারই দরকার ছিল না।’
‘যে কাজগুলো করার চেষ্টা করা হচ্ছে, যে প্রশ্নগুলো উত্থাপন করা হচ্ছে এগুলো মূলত জনগণকে ঠকানোর জন্য, প্রতারণা করার জন্য এবং নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য। অধিকন্তু যে কাজগুলো তারা এই গত এক বছর যাবত করার চেষ্টা করছে এবং এর পেছনে হাজার হাজার কোটি টাকা তারা খরচ করে ফেলেছে, তার দুই পয়সার মূল্য হবে না।’
রনি বলেন, ‘আমাদের প্রধান উপদেষ্টা ১৪-১৫ বার দেশের বাইরে গেছেন। এতে আপনার আমার কী উপকার হয়েছে, দেশের কী উপকার হয়েছে। এরকম অনেক কিছু হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এই যে ঐক্যমত কমিশনের বৈঠক হচ্ছে, সবাই দল বেঁধে যাচ্ছে, খাবার খাচ্ছে, ফাইভ স্টার হোটেল থেকে খাবার যাচ্ছে। সেখানে এসির মধ্যে বসে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত যে সকল খাজুরে আলাপ গালগল্প করছে, লিখে রাখেন আগামীতে যারাই ক্ষমতায় আসবে, তারা এর একটাও বাস্তবায়ন করবে না। অথচ এর জন্য আমরা কত কিছু নষ্ট করলাম। আর এই সময়ের মধ্যে কত রাস্তা খানা খন্দকে ভরে গেছে। কত এলাকা বিদ্যুৎহীন।’
‘তারপরে ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন হবে, না এপ্রিলে হবে, ড. ইউনূস কতদিন ক্ষমতায় থাকবেন, তিনি কি ফেব্রুয়ারি মাসে চলে যাবেন, নাকি আরো পাঁচ বছর থাকবেন, নাকি আরো ১০ বছর, ৫০ বছর থাকবেন; এই জিনিসগুলো আমরা বিতর্কের একেবারে সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠিয়ে দিচ্ছি।’
কেএন/এসএন