জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেছেন, জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে এক বছরেই দেশ ঘুরে দাঁড়াবে। জামায়াতে ইসলামী রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজ দমনের মাধ্যমে দেশেকে সমৃদ্ধশালী করে তোলা হবে।
আজ (শনিবার) ঢাকা-৮ সংসদীয় এলাকার রমনা থানার আলেম, মসজিদের খতিব ও ইমামদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি ঢাকা-৮ সংসদীয় এলাকা থেকে দুর্নীতি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ মুক্ত করে এই এলাকাকে শান্তির নীড় হিসেবে গড়ে তুলতে স্থানীয়দের ঐক্যবদ্ধ করতে আলেমসমাজের সহযোগিতা ও সমর্থন কামনা করেন।
হেলাল উদ্দিন বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসনামলে আলেমগণ কুরআন ও হাদিসের কথা বলতে পারেনি। তাদের কণ্ঠরোধ করা হয়েছে। জুলুম-নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। ছাত্র-জনতার মাধ্যমে আল্লাহ ফ্যাসিবাদের পতনের মাধ্যমে কথা বলার স্বাধীনতা ও পরিবেশ সৃষ্টি করে দিয়েছেন। কিন্তু একটি দল সেই স্বাধীনতা ও পরিবেশ নষ্ট করছে। ৫ আগস্ট পরবর্তী ওই দলের নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগের ভূমিকা আর্বিভূত হয়েছে। তারা আলেমদের কণ্ঠরোধ করতে চায়, আলেমদের মসজিদ থেকে বের করে দিতে চায়। এরা ক্ষমতায় বসলে আওয়ামী লীগের চেয়েও ভয়াবহ পরিস্থিত সৃষ্টি করবে।
ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, জুলাই সনদ মানুষের মুক্তির সনদ, নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের সনদ। তাই জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির বিকল্প নেই। পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পিআর পদ্ধতি হচ্ছে প্রতিটি ভোটের মূল্যায়ন করার উত্তম পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে ভোট হলে লাখ-লাখ ভোট পচে চাওয়ার সুযোগ নেই। প্রতিটি ভোটের যথাযথ হিসাব হবে। যেখানে চলমান পদ্ধতিতে একজন প্রার্থী ১ লাখ ভোট পেলে তার প্রতিদ্বন্দ্বী অপর প্রার্থী যদি ১ লাখ ১ ভোট পায়, তাহলে মাত্র ১ ভোট বেশি পাওয়া প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। অপর দিকে ১ লাখ ভোটারের মতামতের কোনো মূল্যায়ন হয় না। ওই ১ লাখ ভোট বাতিল হয়ে যায়। এই ব্যবস্থায় কখনো জনগণের সরকার গঠিত হয়নি, হতে পারে না। পিআর পদ্ধতির মাধ্যমেই জনগণের সরকার গঠিত হয়, হওয়া সম্ভব। তাই জুলাই সনদে পিআর পদ্ধতির প্রস্তাব রেখে গণভোটের আয়োজনের দাবি জানান ড. হেলাল উদ্দিন। তিনি বলেন, গণভোটে জনগণ যেই রায় দেবে জামায়াতে ইসলামী সেই রায় মেনে নেবে।
তিনি আরও বলেন, ‘অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সকলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতকরণ’, ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা’ এবং ‘স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ’ করা না হলে আবারও ফ্যাসিবাদে উত্থান ঘটবে।
রমনা থানা জামায়াতের আমির আতিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বিশেষ আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন মতিঝিল মিসবাহুল উমুল কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ ড. মহিউদ্দিন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য ও ওলামা বিভাগের সভাপতি অধ্যক্ষ মোশাররফ হোসেন, জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহকারী প্রচার সম্পাদক ও ঢাকা সিটি করর্পোরেশনের ১৯ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আবদুস সাত্তার সুমন।
ইএ/টিকে