পেশা বদলাচ্ছে কান পরিষ্কারকারীরা

ঢাকার রাস্তাঘাটে মানুষের কান পরিষ্কার করানোর চিত্র নতুন নয়। যুগ যুগ ধরে চলা এই ঐতিহ্য হারিয়ে যাচ্ছে। এখনও রাজধানীর বিভিন্ন পার্কে কান পরিষ্কারকারীদের ফেরি করতে দেখা যায়।

রমনা পার্ক তার মধ্যে একটি। সেখানে কান পরিষ্কারকারীরা নিজস্ব পদ্ধতিতে পথচারীদের কানের পরিচর্যা করে।

সাধারণত কান পরিষ্কারকারীদের কাঁধে একটি ছোট ব্যাগ থাকে। তারা ফেরিওয়ালাদের মতো পথচারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। কান পরিষ্কার করার ক্ষেত্রে তারা দুটি যন্ত্র ব্যবহার করে। একটি চিমটি আরেকটি সালাই।

চিমটি দেখতে লম্বা, সামান্য চ্যাপ্টা। কানের ভেতর থেকে এটি খইল বের করে আনে। আর সালাই খইল বের করার পর কানে তেল মাখাতে ব্যবহৃত হয় ।

বাসু মিয়া একজন কান পরিষ্কার কর্মী। তিনি ৪০ বছর ধরে ওসমানী উদ্যানে এ কাজ করছেন।

মিয়া জানান, তিনি দিনে ৫০০-৬০০ টাকা আয় করেন। এ আয়ে তিনি আট সদস্যের পরিবারের ভরণপোষন করেন।

তিনি বলেন, কানের অনেক ধরনের সমস্যা থাকে, যেগুলো খুব ভয়াবহ। কানে পানি ঢুকলে নানা সমস্যা দেখা দেয়। আমরা সেবাগ্রহীতাদের কোনো ব্যথা না দিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেই।

বর্তমান প্রজন্ম এ পেশাকে কীভাবে দেখেন? এ সম্পর্কে মিয়া বলেন, আমাদের সন্তনরা এ পেশায় আসতে আগ্রহী না। মানুষ এটাকে সম্মানের চোখে দেখে না। অনেক পরিষ্কারকারীই অন্য পেশায় চলে গেছে।

আকতার বিশ্বাস নিয়মিত কান পরিষ্কার করান। তিনি বলেন, আমি নিজেই আমার কান পরিষ্কার করতে পারি। এখানে আসি ভালো সেবা নেয়ার জন্য। তারা ভালো কান পরিষ্কার করতে পারে।

ওসমানী উদ্যানে চা বিক্রি করেন নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, এক দশক আগে অনেক কান পরিষ্কারকারী দেখা যেতো। কিন্তু এখন খুব বেশি একটা দেখা যায় না। আমিও তাদের কাছে কান পরিষ্কার করাই এবং আরাম অনুভব করি।

তিনি আরও বলেন, কান পরিষ্কারকারীরা তাদের পেশা পরিবর্তন করছে। আধুনিক চিকিৎসা সেবা প্রসারের ফলে তারা এ পেশায় আর থাকছে না।

নজরুল বলেন, সবাই এখন সচেতন। সবাই জানে কীভাবে নিজেদের যত্ন নিতে হয়। আর তরুণ প্রজন্ম এ পেশায় মোটেও আগ্রহী নয়। আমি মনে করি, এটি খুবই দুঃখজনক।

Share this news on:

সর্বশেষ

img
নিকুঞ্জের বটতলায় শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ Dec 27, 2025
img
ভোটাধিকার নিশ্চিত হলেই রাষ্ট্রের মালিক হবে জনগণ : হাবিব Dec 27, 2025
img
সংকটকালে দেশ রক্ষায় বিএনপির বিকল্প নেই: রবিউল আলম Dec 27, 2025
img
অঙ্কনের ফিফটি ও জাকেরের ক্যামিওতে লড়াইয়ের পুঁজি পেল নোয়াখালী Dec 27, 2025
img
ঢাকায় জনঘনত্ব আরও বাড়ানো আত্মঘাতী পদক্ষেপ : ড. আদিল Dec 27, 2025
img
জানা গেল তাসনিম জারার পদত্যাগ করার কারণ! Dec 27, 2025
img
আর্জেন্টিনায় ভূপৃষ্টে আঘাত হানল ভূমিকম্প Dec 27, 2025
img
মুস্তাফিজের আইপিএলে অংশগ্রহণে মাঠে ভাঙচুরের হুমকি Dec 27, 2025
img
আওয়ামী লীগ সংখ্যালঘুদের নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে : প্রেসসচিব Dec 27, 2025
img
পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রথম নারী গভর্নর শামশাদ আখতার আর নেই Dec 27, 2025
img
মনোনয়ন না পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন বিএনপি নেতা Dec 27, 2025
img
ওসমান হাদি হত্যার বিচারের দাবিতে উত্তাল চট্টগ্রাম Dec 27, 2025
img
সুকেশের পরে নোরা ফাতেহির জীবনে নতুন প্রেমের আগমন! Dec 27, 2025
img
এনসিপি থেকে পদত্যাগ করলেন তাসনিম জারা Dec 27, 2025
img
চট্টগ্রাম-১০ নয়, অন্য যে আসন থেকে লড়বেন আমীর খসরু Dec 27, 2025
img
কোচ জাকিরের সন্তানদের পড়াশোনার দায়িত্ব নিল ঢাকা ক্যাপিটালস Dec 27, 2025
img
স্বতন্ত্র নির্বাচন করার ঘোষণা দিলেন এনসিপির তাসনিম জারা Dec 27, 2025
img
ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল বাংলাদেশের পাশের দেশ ভারত Dec 27, 2025
img
কেউ বাড়াবাড়ি করলে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না: মিষ্টি জান্নাত Dec 27, 2025
img
সমাবেশের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানে বৃক্ষরোপণ করল বিএনপি Dec 27, 2025