অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রহমান বরাবরই নিজের আধ্যাত্মিক দিক নিয়ে খোলাখুলি কথা বলেছেন। কিন্তু খুব কম মানুষই জানেন, আজ যে নামে তাকে সারা বিশ্ব চেনে, সেই নামটি দিয়েছিলেন এক হিন্দু জ্যোতিষী; আর তার আদি নাম ছিলো ‘দিলীপ কুমার’।
শোনা যায়, হিন্দু পরিবারেই জন্ম নিয়েছিলেন এ আর রহমান। জন্মসূত্রেই তার নাম রাখা হয় ‘দিলীপ কুমার’। বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে এটি শিল্পী নিজেই জানিয়েছেন, তার জীবনীতেও পাওয়া গেছে এমন তথ্য। রহমান জানিয়েছেন, তার পিতার মৃত্যুর পর এবং একটি সুফি আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতার প্রভাবে তিনি ও তার পরিবার ১৯৮০-এর দশকের শেষ দিকে ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন।
রহমান যখন তার পুরো পরিবারের সঙ্গে ধর্মান্তরিত হন, তখনই নাম পরিবর্তন করে রাখেন এ আর রহমান। আর এই নামটি রেখেছিলেন একজন হিন্দু জ্যোতিষী।
এক সাক্ষাৎকারে রহমান বলেছিলেন, “সত্যি কথা বলতে কী, নিজের নামটা কখনোই আমার ভালো লাগত না। মহান অভিনেতা দিলীপ কুমারের প্রতি পরম শ্রদ্ধা রেখেও বলছি, আমার নামটা যেন আমার নিজের সঙ্গে মানাত না।”
রহমান জানান, একদিন তার মা ছোট বোনের বিয়ের ব্যাপারে কথা বলার জন্য তাকে নিয়ে যান এক জ্যোতিষীর কাছে। সেই সাক্ষাৎই বদলে দেয় রহমানের জীবন। রহমানের ভাষায়, “আমরা তখন সুফিবাদের পথে হাঁটতে শুরু করেছি। সেই সময় আমি নাম পাল্টানোর কথাও ভাবছিলাম। জ্যোতিষী আমাকে দেখে বললেন, ‘এই ছেলেটা খুব ইন্টারেস্টিং।’ এরপরই তিনি দুটি নাম প্রস্তাব করেন— ‘আবদুল রহমান’ আর ‘আবদুল রহিম’। আমি সঙ্গে সঙ্গে ‘রহমান’ নামটাই ভালোবেসে ফেলি।”
অবশ্য সেখানেই থামেননি সুরকারের মা। তার এক অন্তর্দৃষ্টি থেকেই আসে ছেলের নামের প্রথম অংশ -‘আল্লাহরাখা’। এ প্রসঙ্গে রহমান বলেন, “মা-ই বলেছিলেন, ‘আল্লাহরাখা যোগ কর- অর্থাৎ যাকে আল্লাহ রক্ষা করেন।’ সেভাবেই শুরু হয় আমার নতুন পরিচয়, এ আর রহমান।”
১৯৬৭ সালের ৬ জানুয়ারি ভারতের চেন্নাইয়ে জন্ম এ আর রহমানের। নব্বইয়ের দশকের শুরুতে তামিল সিনেমার মাধ্যমে সংগীত জগতে পথচলা শুরু তার। এরপর বলিউডসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অসংখ্য জনপ্রিয় সুর উপহার দিয়েছেন তিনি; চলচ্চিত্রের জন্য পেয়েছেন অস্কার ও গ্র্যামি পুরস্কার। ভারত সরকারের পক্ষ থেকে পদ্মভূষণ ও পদ্মশ্রী সম্মানেও ভূষিত হয়েছেন এই শিল্পী।
এসএন