তিন মাসে সৌদি আরব থেকে এলো ১.২৩ বিলিয়ন ডলার

দেশের অর্থনীতির প্রধান সূচকগুলোর মধ্যে এ মুহূর্তে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছে রেমিটেন্স বা প্রবাসী আয়। বলা যায়, সঙ্কটে পড়া বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা ঘুরিয়ে যাচ্ছে রেমিটেন্স। তবে এই প্রবাসী আয়ের উৎসে দেখা গিয়েছিল ব্যতিক্রম, তা এখন আবার আগের জায়গায় ফিরেছে।

সৌদি আরবকে পেছনে ফলে গত দুই অর্থ বছরে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স এসেছিল দেশে। এই দুই দেশকে ডিঙিয়ে আবার সেই সৌদি থেকে সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স আসছে; দ্বিতীয় স্থানে চলে এসেছে যুক্তরাজ্য। মালয়েশিয়া থেকেও আগের চেয়ে বেশি রেমিটেন্স আসছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক গত বৃহস্পতিবার রেমিটেন্স প্রবাহের দেশভিত্তিক যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যায়, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের প্রথম তিন মাসে অর্থাৎ প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ৭৫৮ কোটি ৫৬ লাখ ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা, যা গত অর্থ বছরের একই সময়ের চেয়ে ১৬ শতাংশ বেশি।

এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১২৩ কোটি ১০ লাখ (১.২৩ বিলিয়ন) ডলার এসেছে সৌদি আরব থেকে। হিসাব বলছে, এই তিন মাসে মোট রেমিটেন্সের ১৬ দশমিক ২৩ শতাংশই এসেছে সৌদি থেকে। আর গত বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বরের চেয়ে বেশি এসেছে ৪৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ।

২০২৪-২৫ অর্থ বছরের এই তিন মাসে সৌদিতে অবস্থানরত প্রবাসীরা ৮৫ কোটি ৮৮ লাখ ডলার দেশে পাঠিয়েছিলেন।

সৌদি আরবের ধারেকাছেও নেই অন্য দেশগুলো। জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিটেন্স এসেছে যুক্তরাজ্য থেকে, ৯২ কোটি ৪৫ লাখ ডলার। গত অর্থ বছরের একই সময়ের চেয়ে বেশি এসেছে ৬৫ দশমিক ৮০ শতাংশ। গত বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বরে এসেছিল ৫৬ কোটি ডলার।

আমিরাত থেকে এসেছে ৮৮ কোটি ৩৮ লাখ ডলার; কমেছে ১৪ দশমিক ৩৭ শতাংশ। গত অর্থ বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বরে এসেছিল ১০৩ কোটি ২১ লাখ (১.০৩ বিলিয়ন) ডলার।

মালয়েশিয়া থেকে এসেছে ৮২ কোটি ৩ লাখ ডলার। গত বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বরে এসেছিল ৫৭ কোটি ৩৭ লাখ ডলার। বেড়েছে ৪৩ শতাংশ।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে চলতি ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) এসেছে ৬২ কোটি ৭৪ লাখ ডলার। গত বছরের একই সময়ে এসেছিল ৯২ কোটি ৩ লাখ ডলার। কমেছে ৩২ শতাংশ।

অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে গত অর্থ বছরে ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন (তিন হাজার ৩৩ কোটি) ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা; যা ছিল আগের অর্থ বছরের চেয়ে প্রায় ২৭ শতাংশ বেশি।

এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স এসেছিল বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে; মোট রেমিটেন্সের ১৬ শতাংশই এসেছিল দেশটি থেকে। সেখানে অবস্থানরত প্রবাসীরা ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে ৪৭৩ কোটি ৩১ লাখ (৪.৭৩ বিলিয়ন) ডলার পাঠিয়েছিলেন, যা ছিল ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের চেয়ে ৬০ শতাংশ বেশি।

তার আগের অর্থ বছরে (২০২৩-২৪) সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স এসেছিল সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) থেকে, ৪৬০ কোটি (৪.৬০ বিলিয়ন) ডলার।

কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র বা আমিরাত থেকে রেমিটেন্সের সেই চমক আর নেই; এক ধাক্কায় যুক্তরাষ্ট্র নেমে এসেছে পঞ্চম স্থানে; আমিরাত তৃতীয় স্থানে। আবার সেই সৌদি আরব থেকেই এখন বেশি রেমিটেন্স আসছে। দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে যুক্তরাজ্য। মালয়েশিয়া যুক্তরাষ্ট্রকে পেছনে ফেলে চতুর্থ স্থানে উঠে এসেছে।

১৯৭৪-৭৫ অর্থ বছর থেকে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিটেন্স আসা শুরু হয় বাংলাদেশে। ওই বছরে মাত্র ১ কোটি ১৮ লাখ ডলার পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। এখন সেই রেমিটেন্স আড়াই হাজার গুণের বেশি বেড়ে ৩৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।

এই ৫০ বছরে দুই বার ছাড়া (২০২৩-২৪ ও ২০২৪-২৫ অর্থ বছর) প্রতিবারই সৌদি আরব থেকে সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স এসেছে দেশে। সে কারণে ‘রেমিটেন্স মানেই সৌদি’ কথাটি প্রচলিতই হয়ে গিয়েছিল। কারণ, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার সৌদি আরব।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে সৌদি আরব থেকে ৪২ কোটি ৬৪ লাখ ডলার রেমিটেন্স এসেছিল দেশে। আমিরাত থেকে এসেছিল ২৮ কোটি ৩৮ লাখ ডলার।

যুক্তরাজ্য থেকে আসে ২৮ কোটি ২৫ লাখ ডলার। মালয়েশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসে যথাক্রমে ২৬ কোটি ৬৯ লাখ ও ২২ কোটি ২২ লাখ ডলার।

দ্বিতীয় মাস আগস্টে সৌদি আরব থেকে এসেছে ৩৯ কোটি ৭৬ লাখ ডলার। আমিরাত থেকে এসেছিল ২৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার। যুক্তরাজ্য থেকে আসে ২৭ কোটি ৯৫ কোটি ডলার। মালয়েশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসে যথাক্রমে ২৭ কোটি ৬৪ লাখ ও ২৩ কোটি ১৬ লাখ ডলার।

তৃতীয় মাস সেপ্টেম্বরে সৌদি আরব থেকে এসেছে ৪০ কোটি ৯৬ লাখ ডলার। আমিরাত থেকে এসেছে ৩৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার। যুক্তরাজ্য থেকে আসে ৩৬ কোটি ৬৫ কোটি ডলার। মালয়েশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসে যথাক্রমে ২৭ কোটি ৩৯ লাখ ও ১৭ কোটি ৩৭ লাখ ডলার।

শুধু এই তিন মাস নয়, গত ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের শেষের তিন মাসও (এপ্রিল, মে ও জুন) সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স এসেছে সৌদি আরব থেকে। জুন মাসে দেশটিতে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা ৪৬ কোটি ৯০ লাখ ডলার দেশে পাঠান। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৬ কোটি ২০ লাখ ডলার আসে যুক্তরাজ্য থেকে। মালয়েশিয়া থেকে আসে তৃতীয় সর্বোচ্চ, ৩৫ কোটি ৮৮ লাখ ডলার। সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে আসে ৩২ কোটি ৩৯ লাখ ডলার।

যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসে ২৩ কোটি ৮১ লাখ ডলার।

মে মাসে সৌদি আরব থেকে আসে ৫৩ কোটি ৩৪ লাখ ডলার। আরব আমিরাত থেকে এসেছে ৩৫ কোটি ১৫ লাখ ডলার। যুক্তরাজ্য থেকে এসেছে ৩৪ কোটি ৬৮ লাখ ডলার। মালয়েশিয়া থেকে এসেছে ৩৪ কোটি ৪ লাখ ডলার। আর যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২২ কোটি ৩৬ লাখ ডলার রেমিটেন্স এসেছে।

এপ্রিল মাসে সৌদি আরব থেকে এসেছিল ৪৯ কোটি ১৪ লাখ ডলার। আরব আমিরাত থেকে এসেছিল ৩৭ কোটি ২২ লাখ ডলার। যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছে ৩৩ কোটি ৭ লাখ ডলার। যুক্তরাজ্য থেকে এসেছে ২৯ কোটি ৪১ লাখ ডলার। আর মালয়েশিয়া থেকে এসেছিল ২১ কোটি লাখ ডলার।

অথচ ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের আগের মাসগুলোতে (জুলাই থেকে মার্চ) সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স এসেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে; ধারেকাছেও ছিল না সৌদি আরব।

যেমন- গত মার্চ মাসে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকারী প্রবাসীরা ৫৪ কোটি ৬১ লাখ ডলার দেশে পাঠিয়েছিলেন। সৌদি আরবের প্রবাসীরারা পাঠিয়েছিলেন ৪৪ কোটি ৮৪ লাখ ডলার।

শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, জুলাই থেকে মার্চ- এই নয় মাসে সৌদি আরবের চেয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকেও বেশি রেমিটেন্স এসেছিল দেশে। এমনকি কোনও কোনও মাসে যুক্তরাজ্য থেকেও সৌদির চেয়ে বেশি রেমিটেন্স এসেছিল।

১৭ কোটি মানুষের বাংলাদেশে দেড় কোটির বেশি মানুষ নানা কাজে ছড়িয়ে রয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সৌদি আরবে। মধ্যপ্রাচ্যের এই এক দেশেই ৫০ লাখের মতো বাংলাদেশির কর্মসংস্থান। ফলে রেমিটেন্সও সেই দেশ থেকেই আসত বেশি।

দুই বছর আগে হঠাৎ করেই সৌদি আরব পেছনে পড়ে যায়। ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে রেমিটেন্সে শীর্ষে উঠে আসে মধ্যপ্রাচ্যেরই আরেক দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত। আমিরাত থেকে ৪৬০ কোটি (৪.৬০ বিলিয়ন) ডলার আসার বিপরীতে সৌদি প্রবাসীরা পাঠান ২৭৪ কোটি (২.৭৪ বিলিয়ন) ডলার।

ওই অর্থ বছরে যুক্তরাষ্ট্রেরও পেছনে পড়ে যায় সৌদি আরব। যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে রেমিটেন্স আসে ২৯৬ কোটি (২.৯৬ বিলিয়ন) ডলার।

২০২৪-২৫ অর্থ বছরের জুলাই থেকে মার্চ সময়ে সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স আসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। গত মার্চ মাসে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকারী প্রবাসীরা যেখানে ৫৪ কোটি ৬১ লাখ ডলার দেশে পাঠান, সেখানে সৌদি প্রবাসীরা পাঠান ৪৪ কোটি ৮৪ লাখ ডলার।

শেষের তিন মাসের (এপ্রিল-জুন) চমকে গত ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে পেছনে ফেলে সৌদি আরব। এই আর্থিক বছরে আরব আমিরাত থেকে এসেছিল ৪১৬ কোটি ৩৯ লাখ (৪.১৬ বিলিয়ন) ডলার। আর সৌদি আরব থেকে এসেছিল ৪২৬ কোটি ৯০ লাখ (৪.২৬ বিলিয়ন) ডলার।

তবে নয় মাসের (জুলাই-মার্চ) উল্লম্ফনের কারণে গত অর্থ বছরে সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স এসেছিল যুক্তরাষ্ট্র থেকে; ৪৭৩ কোটি ৩০ লাখ (৪.৭৩ বিলিয়ন) ডলার।

এছাড়া ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে যুক্তরাজ্য থেকে ২৯৭ কোটি ৭৩ লাখ (২.৯৮ বিলিয়ন) ডলার ও মালয়েশিয়া থেকে ২৬৫ কোটি ৬৯ লাখ (২.৬৫ বিলিয়ন) ডলার রেমিটেন্স এসেছিল দেশে।

সৌদি আরবের হঠাৎ করেই পিছিয়ে পড়া, তারপর আবার আগের স্থানে ফিরে আসা নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান সকাল সন্ধ্যাকে বলেন, “সৌদি আরবে সবচেয়ে বেশি প্রবাসী অবস্থান করেন, সেখান থেকে বেশি রেমিটেন্স আসবে- এটাই তো স্বাভাবিক। বছরের পর বছর তাই তো হয়ে আসছে। মাঝে পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে সৌদি আরব পেছনে পড়ে গিয়েছিল। এখন সেটা ঠিক করা হয়েছে। তাই সৌদি থেকে বেশি রেমিটেন্স আসছে।”

বিষয়টির ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, “এখন থেকে ব্যাংকগুলোকে যে দেশের রেমিটেন্স, সেই দেশের আয় হিসাবে দেখানোর নির্দেশনা যথাযথভাবে মেনে চলতে বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যে কারণে পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়েছে।”
চলতি বছরের মার্চে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি নির্দেশনা দেয়, যাতে প্রতিটি ব্যাংককে প্রকৃত উৎস দেশ অনুযায়ী রেমিটেন্স হিসাব করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। ওই নির্দেশনার কারণে সৌদি আরবের রেমিটেন্স এখন সৌদি আরবের খাতায়ই উঠছে; মাঝে যার ব্যত্যয় ঘটেছিল।

প্রবাসীদের পাঠানো অর্থ আনুষ্ঠানিক চ্যানেলে সরাসরি ব্যাংক কিংবা এক্সচেঞ্জ হাউস- এই দুই মাধ্যমে দেশে আসে। এক্সচেঞ্জ হাউসের সংগ্রহ করা রেমিটেন্স ব্যাংকগুলো কিনে নিয়ে সুবিধাভোগীকে টাকা পরিশোধ করে। দেশের মোট রেমিটেন্সের বেশি অংশ আসে এক্সচেঞ্জ হাউসের মাধ্যমে।

যেসব দেশের এক্সচেঞ্জ হাউসের মাধ্যমে বাংলাদেশে রেমিটেন্স আসে এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিবন্ধিত কোম্পানি বেশি। ফলে প্রবাসীরা কোন দেশ থেকে অর্থ পাঠাচ্ছেন, তা না দেখিয়ে এক্সচেঞ্জ হাউসের নিবন্ধিত দেশ থেকে দেখানো হচ্ছিল। যে কারণে সৌদি আরব থেকে পাঠানো অর্থও যুক্তরাষ্ট্র ও আমিরাতের নামে আসত।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা উদাহরণ দিয়ে বলেন, বাংলাদেশি কোনও ব্যাংক হয়ত যুক্তরাষ্ট্রের মালিকানাধীন এক্সচেঞ্জ হাউস থেকে ১০ লাখ ডলার কিনেছে। সেখানে পাঁচ দেশের রেমিটেন্স আছে। এটা দেশভিত্তিক আলাদাভাবে না দেখিয়ে পুরোটাই হয়ত যুক্তরাষ্ট্রের রেমিটেন্স হিসাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে রিপোর্ট দিয়ে আসছিল ওই ব্যাংক।

“এতে প্রকৃত চিত্র প্রতিফলিত হতো না। এ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে কথাও উঠেছে। এখন থেকে ব্যাংকগুলোকে দেশভিত্তিক প্রকৃত চিত্রের আলোকে রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে। সব ব্যাংক যথানিয়মে রিপোর্ট করলে আর ভুল রিপোর্টিং হবে না,” বলেন তিনি।

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের (এমটিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশের (এবিবি) সাবেক সভাপতি সৈয়দ মাহবুবুর রহমান সকাল সন্ধ্যাকে বলছিলেন, “গত দুই অর্থ বছরে যুক্তরাষ্ট্র, আরব আমিরাত থেকে প্রবাসী আয় বেড়ে যাওয়া মানে দেশটি থেকে প্রকৃত প্রবাসী আয় বেড়েছে, হয়ত তেমন নয়। অন্যান্য দেশের আয়ও প্রবাসী আয় প্রেরণকারী বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর হাত ঘুরে যুক্তরাষ্ট্র বা আমিরাত থেকে এসেছে। সে কারণে পরিসংখ্যানে ওই দুই দেশ থেকে প্রবাসী আয়ে বড় প্রবৃদ্ধি দেখা গিয়েছল কাগজে-কলমে।”

জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের শীর্ষ শ্রমবাজার সৌদি আরব। ১৯৭৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হওয়া শ্রমশক্তির ৩৬ শতাংশই গেছে দেশটিতে, সংখ্যার দিক থেকে যা ৫০ লাখের বেশি।

সংযুক্ত আরব আমিরাতে ১০ লাখের মতো প্রবাসী কাজ করছেন। আর যুক্তরাষ্ট্রে ৮ লাখের মতো প্রবাসী অবস্থান করছেন। যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত প্রবাসীর সংখ্যা ১০ লাখের মতো।
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮ লাখের বেশি।

টিজে/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ভারতে পা দিয়েই কপিল শর্মার উদ্দেশে প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার কড়ার্বাতা Dec 10, 2025
img
পদত্যাগের পর আসিফ-মাহফুজকে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ পরামর্শ Dec 10, 2025
img
অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ব্রাকসু নির্বাচন Dec 10, 2025
img
সরকারি প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকদের বেতন ১১তম থেকে ১০ম গ্রেডে উন্নীত Dec 10, 2025
img
প্লাস্টিক সার্জারি নিয়ে কঠোর সমালোচনা করলেন কেট উইন্সলেট Dec 10, 2025
img
‘উপদেষ্টা আসিফ জোর করেই আমাকে কুমিল্লার দায়িত্ব দিয়েছেন’ Dec 10, 2025
img
ব্যারিষ্টার ফুয়াদের বিরুদ্ধে নিজ এলাকায় ঝাড়ু মিছিল Dec 10, 2025
img
জানুয়ারি থেকে সরকারি বাসভবন গ্রেসি ম্যানসনে থাকবেন মামদানি Dec 10, 2025
img
ফের আফগানিস্তানে ভূমিকম্পের আঘাত Dec 10, 2025
img
মাংসের চেয়ে আলু বেশি, অনিয়ম ধরে ফেললেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা Dec 10, 2025
img
রাজধানীর কুড়িলে মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীদের সড়ক অবরোধ Dec 10, 2025
img
তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ কার্যকর হবে: প্রেস সচিব Dec 10, 2025
img
১৩ বছর অপেক্ষার পর কলকাতায় এআর রহমানের লাইভ শো Dec 10, 2025
img
প্রধান বিচারপতির সঙ্গে জার্মান রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ Dec 10, 2025
img
৮৮ মিনিটেও রাহুলের মন গলাতে পারলেন না মোদি Dec 10, 2025
img
‘ধুরন্ধর’ নিয়ে উঠল নারীবিদ্বেষের অভিযোগ, অভিনেত্রীর বক্তব্যে মনে পড়ছে ‘অ্যানিম্যাল’? Dec 10, 2025
img
দেশকে স্বনির্ভর করতে রাজস্ব দিন : চসিক মেয়র Dec 10, 2025
img
ধানের শীষকে জেতানোর বিকল্প নেই: তারেক রহমান Dec 10, 2025
img
আস্থাহীনতা দূর করার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনেরই : দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য Dec 10, 2025
img
মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ের ঘটনায় গৃহকর্মী আয়েশার স্বামীর মন্তব্য Dec 10, 2025