এমন দুর্বলতা রাষ্ট্রীয় সক্ষমতা নিয়ে বড় প্রশ্ন তোলে : জাহেদ উর রহমান

ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো সেকশনে ভয়াবহ আগুন লাগার ঘটনা প্রসঙ্গে রাজনৈতিক বিশ্লেষক জাহেদ উর রহমান বলেছেন, বিমানবন্দরের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থার এমন দুর্বলতা আমাদের রাষ্ট্রীয় সক্ষমতা নিয়ে বড় প্রশ্ন তোলে। যদি এটি দুর্ঘটনাও হয়ে থাকে, তাহলে প্রশ্ন আসে আগুন এত দীর্ঘ সময় জ্বলে কিভাবে। আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যদি ফায়ার হাইড্র্যান্ট না থাকে, তাহলে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ির পানি শেষ হয়ে গেলে দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। এটি স্পষ্টভাবে চরম অব্যবস্থাপনা ও অবহেলার প্রমাণ।

নিজের ইউটিউব চ্যানেল জাহেদস টেইক-এ এসে এ বিষয়ে তিনি কথা বলেন। জাহেদ উর রহমান আরো বলেন, এই ঘটনায় নানা রকম জল্পনা শুরু হয়েছে। বিশেষ করে সবচেয়ে বেশি আলোচিত হচ্ছে, এটি কি শুধুই দুর্ঘটনা, না কি কোনো ষড়যন্ত্র।

তিনি বলেন, এখনো ক্ষয়ক্ষতির পুরো চিত্র পরিষ্কার নয়। তবে একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অন্তত ৫০০ জন রপ্তানিকারকের বিভিন্ন পণ্য ওই কার্গোতে ছিল। এসবের মধ্যে কিছু নমুনা পুড়ে যাওয়ায় গুরুত্বপূর্ণ বায়ারদের কাছে সময়মতো ডেলিভারি দিতে না পারার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এর ফলে কেউ কেউ তাদের অর্ডার হারাতে পারেন। কেউ হয়তো বিমানপথে উচ্চমূল্যে পণ্য পাঠাতে বাধ্য হবেন।

এর প্রভাব সরাসরি রপ্তানি খাতে পড়বে। কেউ কেউ বলছেন, এতে এক বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। যদিও এটা পুরোপুরি পণ্য পুড়ে যাওয়ার অর্থ নয়, বরং সম্ভাব্য ক্ষতির দিক।

তিনি আরো বলেন, মাত্র তিন দিনের ব্যবধানে তিনটি বড় অগ্নিকাণ্ড হয়েছে। একটি মিরপুরে, একটি চট্টগ্রামের ইপিজেডে ও সর্বশেষ শাহজালাল বিমানবন্দরে।

তিনটির সাথেই গার্মেন্টস বা রপ্তানি খাত জড়িত। এটি নিছক কাকতালীয়, নাকি পরিকল্পিত সেই প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই উঠে আসছে।

তিনি বলেন, নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে, বাংলাদেশ ধীরে ধীরে একটি স্থিতিশীল অবস্থার দিকে এগোচ্ছে। কিন্তু এই স্থিতিশীলতা অনেকেরই পছন্দ নয়। যেমন ভারত, আওয়ামী লীগ ও বেশকিছু নৈরাজ্যবাদী গোষ্ঠী, যারা চায় না দেশ স্থিতিশীল হোক। কারণ, অস্থিরতা থাকলে তারা নিজেদের প্রভাব খাটাতে পারে, ক্ষমতার কাছাকাছি থাকতে পারে। এই কারণে কোনো ঘটনা ঘটলে, যেমন অগ্নিকাণ্ড বা বিশৃঙ্খলা সেটিকে ষড়যন্ত্র হিসেবেই বিবেচনা করা উচিত।

তিনি আরো বলেন, সরকার বলছে তারা তদন্ত করছে, ষড়যন্ত্রের সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে শুধু সরকারের ওপর নির্ভর করলেই চলবে না। নাগরিকদেরও সরব ও সচেতন হতে হবে। একটা জাতির অভ্যন্তরীণ ঐক্য দুর্বল হলে বাইরের বা ভেতরের ষড়যন্ত্র সহজ হয়। রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকতেই পারে, কিন্তু শত্রুতা নয়; এখন ঐক্য জরুরি।

কেএন/টিকে

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ব্যথা ভুলে ফ্লোরে দিতিপ্রিয়া, বন্ধুর মতো পাশে জীতু Oct 19, 2025
img
শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার মতো কোনো শক্তি নেই : ফারুক Oct 19, 2025
img
অনেক দিন রান না পেলে মনে সন্দেহ ঢুকে পড়ে: ল্যাবুশেন Oct 19, 2025
img
অক্টোবরের ১৮ দিনে দেশে রেমিট্যান্স এলো ১৫৭ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলার Oct 19, 2025
গ্রহণযোগ্যতা কমছে বাংলাদেশি পাসপোর্টের Oct 19, 2025
img
ধর্ম অবমাননা মামলায় নর্থ সাউথ শিক্ষার্থী অপূর্ব পালের স্বীকারোক্তি Oct 19, 2025
img
দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে টহল ও নজরদারি জোরদার Oct 19, 2025
img
গাজা যুদ্ধের নাম 'মুক্তিযুদ্ধ' করার প্রস্তাব নেতানিয়াহুর Oct 19, 2025
img
পরিমাপের ক্ষেত্রে মানসম্মত পরিসংখ্যানের গুরুত্ব অপরিসীম: প্রধান উপদেষ্টা Oct 19, 2025
img
শিক্ষার্থীদের জন্য প্রাথমিক চিকিৎসার প্রশিক্ষণ চালু করছে ডাকসু Oct 19, 2025
img
সারাদেশে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সচিবালয়ে ডাকা হলো জরুরি বৈঠক Oct 19, 2025
img
কার্গো ভিলেজের আগুন পুরোপুরি নির্বাপণ: ফায়ার সার্ভিস পরিচালক Oct 19, 2025
img
দীপাবলির অনুষ্ঠানে বাঙালি পোশাকে নজর কাড়লেন সাইফ Oct 19, 2025
img
স্টার্কের ‘বুলেট বল’ ১৭৬.৫ কিমি! Oct 19, 2025
img
শিল্প-সাহিত্যকে নোংরা রাজনীতির বাইরে রাখতে হবে : বেবী নাজনীন Oct 19, 2025
img
আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করতে পারবে না : ইসি আনোয়ারুল Oct 19, 2025
img
রাঘব-পরিণীতির ঘরে এলো নতুন অতিথি Oct 19, 2025
img
শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠকে আশ্বাস দিলেন মির্জা ফখরুল Oct 19, 2025
img
ইসিকে গনিমতের মাল হিসেবে ভাগ করে নিয়েছে : নাসিরুদ্দীন পাটোয়ারী Oct 19, 2025
img
শিগগিরই এনসিপি জুলাই সনদে স্বাক্ষর করবে, আশাবাদী রিজওয়ানা Oct 19, 2025