বলিউডের প্রবীণ অভিনেতা ও পরিচালক গোবর্ধন আসরানি মারা গেছেন। আজ সোমবার (২০ অক্টোবর) মুম্বাইয়ে দীর্ঘ অসুস্থতার পর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে মুম্বাইয়ের সান্তাক্রুজ শ্মশানে।
আসরানির সহকারী বাবুভাই ভারতের গণমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে-কে জানান, ‘আসরানি সাহেবকে চার দিন আগে জুহুর ভারতীয় আরোগ্য নিধি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। চিকিৎসকেরা বলেছিলেন, তার ফুসফুসে পানি জমেছিল। আজ বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। শেষকৃত্যও ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।’
পরিবার দ্রুত দাফন সম্পন্ন করার কারণ জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আসরানি সাহেব জীবিত থাকতেই তার স্ত্রী মঞ্জুকে বলে গিয়েছিলেন যেন তার মৃত্যুকে কোনো আয়োজনের বিষয় না করা হয়। তাই পরিবার সংবাদটি প্রকাশ করে শেষকৃত্য সম্পন্ন হওয়ার পর।’
জয়পুরে জন্ম নেওয়া এই অভিনেতা সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুল থেকে শিক্ষাগ্রহণ করেন। পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি ৩৫০টিরও বেশি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। তার অভিনয়জীবন ভারতীয় সিনেমার কৌতুক ও সহ-অভিনয়ের জগতে এক অনন্য অধ্যায় হিসেবে স্থান পেয়েছে।
১৯৭০-এর দশক ছিল আসরানির সোনালি সময়। সে সময় তিনি ‘মেরে অপনে’, ‘কোশিশ’, ‘বাবার্চি’, ‘পরিচয়’, ‘অভিমান’, ‘চুপকে চুপকে’, ‘ছোটিসি বাত’-এর মতো একাধিক জনপ্রিয় চলচ্চিত্রে অভিনয় করে দর্শকের মনে জায়গা করে নেন। ১৯৭৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত কালজয়ী ছবি শোলে-তে জেলারের চরিত্রে তাঁর অভিনয় আজও ভারতীয় চলচ্চিত্র ইতিহাসের স্মরণীয় অধ্যায়।
শুধু অভিনেতা হিসেবেই নয়, পরিচালক হিসেবেও আসরানি রেখে গেছেন সাফল্যের ছাপ। ১৯৭৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত চলা মুরারি হিরো বান্নে ছবিতে তিনি নিজে নায়ক, পরিচালক ও চিত্রনাট্যকারের ভূমিকায় ছিলেন। এছাড়া সালাম মেমসাব (১৯৭৯) সহ একাধিক সিনেমা পরিচালনা করেন তিনি।
আসরানি গুজরাটি চলচ্চিত্র শিল্পেও সফলতা অর্জন করেন। ১৯৭০ ও ৮০-এর দশকে তিনি গুজরাটি সিনেমার জনপ্রিয় মুখে পরিণত হন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতেও তিনি ধমাল সিরিজসহ বেশ কিছু কমেডি ছবিতে অভিনয় করেন।
তবে তার সবচেয়ে বিখ্যাত চরিত্র রয়ে গেছে শোলে ছবির সেই জেলারের ভূমিকাই, যা ভারতীয় চলচ্চিত্রপ্রেমীদের কাছে আজও অবিস্মরণীয়।
এদিকে, গত ১৫ অক্টোবর মারা গেছেন আরেক বলিউড তারকা পঙ্কজ ধির। পাঁচদিনের মধ্যে আরেক প্রখ্যাত তারকার মৃত্যুতে শোক নেমে এসেছে গোটা বলিউডেই।
আইকে/ টিএ