এবারের এশিয়া কাপে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের বড় প্রাপ্তি সাইফ হাসান। অন্য ব্যাটারদের অধারাবাহিকতা ও অফফর্ম ছাপিয়ে নিজেকে নতুন করে গড়া এই ডানহাতি ব্যাটার ৪৪.৫০ গড়ে রান করেন। আফগানিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে এক ফিফটির পর প্রথমবার ওয়ানডে দলেও ডাক পান সাইফ। তবে থিতু হয়েও বড় ইনিংস খেলতে পারছিলেন না। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে গতকাল খেললেন ওয়ানডেতে নিজের সর্বোচ্চ রানের ইনিংস।
সৌম্য সরকারের সঙ্গে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে সাইফ হাসানের জুটি ছিল দারুণ বোঝাপড়ার মিশ্রণ। চোখ ধাঁধানো সব শট তো খেলেছেন–ই। লং অন কিংবা ডিপ মিডে যেমন উড়িয়ে সীমানাছাড়া করেছেন, তেমনি বাউন্ডারি পেয়েছেন রিভার্স সুইপেও। যদিও নিজের ষষ্ঠ ওয়ানডেতে সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়েও সাইফ আউট হয়েছেন ৮০ রানে। ৭২ বলে তিনি ইনিংসটি সাজিয়েছেন ৬টি করে চার-ছক্কায়। পরে জানা যায়, তিনি ব্যাট করেছেন গায়ে জ্বর নিয়ে।
ওয়ানডেতে মিরপুরে বাংলাদেশকে সর্বোচ্চ ১৭৬ রানের উদ্বোধনী জুটি এনে দিয়েছেন সাইফ-সৌম্য। এক টিভি চ্যানেলকে দেওয়া মন্তব্যে সৌম্য’র প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন সাইফ, ‘দাদা (সৌম্য) আমাকে অনেক সাহায্য করেছেন। আমি তিনদিন ধরে ঠান্ডা-জ্বরে ভুগছিলাম। আমি অনেকবারই দাদার সঙ্গে খেলেছি, ‘এ’ দল এবং রংপুরের (বিপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজি রংপুর রাইডার্স) হয়ে। তার সঙ্গে ব্যাট করতে আমি সবসময়ই ভালো অনুভব করি।’
একইসঙ্গে সেঞ্চুরি না পাওয়ায় আক্ষেপও করেছেন ২৬ বছর বয়সী ডানহাতি ব্যাটার, ‘অবশ্যই, সেঞ্চুরির জন্য আক্ষেপ তো আছেই। আমরা দুজনেই সেট হয়েছি, আমি এবং দাদা খুব স্বস্তির সঙ্গে খেলছিলাম। তবে সবকিছুর ওপর গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে– আমরা দলের জন্য অবদান রাখতে পেরেছি এবং ম্যাচটাও জিতেছি। ভবিষ্যতে এমন (সেঞ্চুরি) সুযোগ পেলে অবশ্যই তা কাজে লাগানোর চেষ্টা করব।’
সৌম্য নিজেও আউট হয়েছেন নার্ভাস নাইনটিতে। ৮৬ বলে ৭ চার ও ৪ ছক্কায় ৯১ রান করা এই ব্যাটারও প্রশংসা করলেন সাইফের, ‘সে (সাইফ) খুবই ভালো ব্যাট করেছে। তার শট সিলেকশন খুব ভালো ছিল এবং যখনই সে কোথাও সমস্যা মনে করেছে, ততবারই আলোচনা করে নেয়। যদিও তার শ্বাস নিতে সমস্যা হচ্ছিল। ফলে যেভাবে যে লম্বা সময় টিকে থেকে ব্যাট করেছে, তাকে অবশ্যই আমাদের কৃতিত্ব দেওয়া উচিত।’
উদ্বোধনী জুটিতে ১৭৬ রান করার পর মিডল অর্ডারে কিছুটা হোঁচট খায় বাংলাদেশ। তবে নাজমুল হোসেন শান্ত’র ৪৪ ও তাওহীদ হৃদয়ের ২৮ রানে ভর করে স্বাগতিকরা ২৯৬ রানের বড় পুঁজি পেয়ে যায়। লক্ষ্য তাড়ায় নেমে বাংলাদেশের স্পিনারদের ঘূর্ণিতে দিশেহারা ছিল উইন্ডিজ ব্যাটিং লাইনআপ। নাসুম আহমেদ ও রিশাদ হোসেন ৩টি করে এবং তানভীর ইসলাম ও মেহেদী মিরাজ ২টি করে উইকেট নিয়ে সফরকারীদের ১১৭ রানেই গুটিয়ে দেন। ফলে ১৭৯ রানের বিশাল জয়ে ২-১ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজ জিতল বাংলাদেশ।
আইকে/ টিকে