নীলফামারীর সৈয়দপুরে লায়ন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা বিমানবন্দর সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। সোমবার (২৭ অক্টোবর) বিকেলে এই বিক্ষোভের কারণে কিছু সময়ের জন্য যান চলাচল বন্ধ থাকে এবং ঢাকাগামী বিমানের যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েন।
বিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, লায়ন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষকরা গত ৮ সেপ্টেম্বর শিক্ষক ফোরাম -এর ব্যানারে ১৬ দফা দাবিতে বিদ্যালয়ের সভাপতি শাফিয়ার রহমানকে লিখিত আবেদন দেন। দাবিগুলোর মধ্যে ছিল পূর্ণাঙ্গ অধ্যক্ষ নিয়োগ ও প্রফিডেন্ট ফান্ড চালু করা। কিন্তু সভাপতি বিষয়টি গুরুত্ব না দিয়ে উল্টো দুই জ্যেষ্ঠ শিক্ষককে শোকজ নোটিশ দেন।
এ ঘটনায় শিক্ষকরা ২১ সেপ্টেম্বর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগে সভাপতির নিয়োগ বাণিজ্য ও পাঁচ লাখ টাকা আত্মসাতসহ একাধিক দুর্নীতির বিষয় উল্লেখ করা হয়। পরে ২৪ সেপ্টেম্বর শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে সড়ক অবরোধ করলে ইউএনওর হস্তক্ষেপে সভাপতি শফিয়ার রহমান ও অধ্যক্ষ মশিউর রহমানকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
একই সভায় ইউএনও নূর-ই-আলম সিদ্দিকীকে কলেজ পরিচালনা পর্ষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং জ্যেষ্ঠ শিক্ষক মজিবর রহমান চৌধুরী মুকুলকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে ঘোষণা করেন লায়ন্স ক্লাব সভাপতি জাকির হোসেন মেনন। তবে সেই সিদ্ধান্তের অনুমোদন প্রক্রিয়া আটকে আছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যার ফলে সেপ্টেম্বর মাসের বেতন–ভাতা বন্ধ হয়ে গেছে শিক্ষক-কর্মচারীদের।
লায়ন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক রবিউল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়টি লায়ন্স ক্লাব দ্বারা পরিচালিত হয়। সভাপতি ও অধ্যক্ষ দীর্ঘদিন দায়িত্বে থেকে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি করেছেন। আমরা প্রতিবাদ করায় বেতন বন্ধ করে দিয়েছেন। আরেক শিক্ষক আসাদুজ্জামান স্বাধীন বলেন, লায়ন্স ক্লাবের সভাপতি ১৭০ শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন বন্ধ রেখেছেন। প্রশাসনও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। পরিবার নিয়ে আমরা মানবেতর জীবনযাপন করছি।
শিক্ষার্থী মাহিম বলে, আমাদের শিক্ষকদের বেতন দিতে হবে, সব দাবি মেনে নিতে হবে। শিক্ষকদের দাবি না মানা হলে বিক্ষোভ চলমান থাকবে।
শিক্ষার্থী সুমাইয়ার দাবি, অনিয়ম-দুর্নীতি করে শিক্ষকদের ওপর অত্যাচার চলছে। আমরা সড়ক অবরোধ করেছি সভাপতি ও অধ্যক্ষকে অপসারণের দাবিতে। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে লায়ন্স ক্লাবের সভাপতি জাকির হোসেন মেনন বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। নীলফামারী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান বলেন, বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ইউটি/টিএ