বিআরডিবি'র কর্মচারীদের গণঅনশন

শতভাগ বেতন-ভাতা, চাকরি স্থায়ীকরণসহ তিন দফা দাবিতে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের (বিআরডিবি) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গণঅনশন কর্মসূচি পালন করছে। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড কর্মচারী সংসদ-সিবিএ এই ব্যানারে ১৮ দিন ধরে এ কর্মসূচী পালন করছেন তারা।

কর্মসূচিতে সংগঠনটির সভাপতি আবদুর রাজ্জাক, সাধারণ সম্পাদক মফিজুল ইসলাম, সহ-সভাপতি আলী আজগর মোল্লা, এমএ বারি দুলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল কবির খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক একেএম রফিক, লুবনা নাজরিন উপস্থিত রয়েছেন।

সংগঠনটির সভাপতি আবদুর রাজ্জাক বাংলাদেশ টাইমসকে বলেন, দাবি আদায়ের জন্য আমরা গত এপ্রিল থেকে বিআরডিবি সদর দপ্তরে (পল্লী ভবন) আন্দোলন করেছি। কিন্তু কর্তৃপক্ষের টনক নড়েনি। এ অবস্থায় আমাদের লাগাতার গণঅনশনে অংশ নেয়া ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না।

তিনি বলেন, ১৮ দিন চলে যাচ্ছে আজকে। তবে এখানে এখনও বিআরডিবির ডিজি, সচিব, কোনো মন্ত্রী আসেনি। সবাই শুধু আশ্বাস দিচ্ছে। কিন্তু বাস্তবায়নে এগিয়ে আসছে না। আমরা ফোন দিলে তারা বলেন, এসব নিয়ে আমরা অতিদ্রুত কাজ করবো।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মফিজুল ইসলাম জানান, দাবি বাস্তবায়নের জন্য ১ সেপ্টেম্বর থেকে টানা ৬৭ দিন পল্লী ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছি। কোনো কাজ না হওয়ায় সংবাদ সম্মেলন করে ঘোষণা দিয়ে গণঅনশন কর্মসূচি পালন করছি।

প্রকল্পভুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের আহবায়ক মো. আব্দুল ওয়াহেদ বলেন, দীর্ঘ ২০ বছর ধরে ১৫ টি প্রকল্পের অধীনে ৮ হাজার কর্মকর্তা কর্মচারী চাকরি করছি। নিয়োগের সময় বলা হয়েছিল, ৫ বছর চাকরি করার পর স্থায়ীকরণ করা হবে। কিন্তু ২০ বছর অতিবাহিত হলেও সেই কথার বাস্তবায়ন হয়নি।

তিনি বলেন, এমনকি গত ২ বছর ধরে বেতন দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এখন কোন উপায় না দেখে আমরা আন্দোলন করতে বাধ্য হয়েছি। আমাদের এই আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। 

সংগঠনটির সাবেক নেতা জহুরুল ইসলাম বলেন, আমাদের দাবি তিনটা হলো, চাকরি স্থায়ীকরণ করা। স্থায়ীকরণের পূর্ব পর্যন্ত শতভাগ বেতন-ভাতার ব্যবস্থা করা। দারিদ্র বিমোচনে বিআরডিবির কার্যক্রমকে আরো সম্প্রসারিত করার জন্য বঙ্গবন্ধু পল্লী উন্নয়ন অধিদপ্তর ঘোষণা দেওয়া।

তিনি আরো বলেন, এর আগে সরকারের পক্ষ থেকে বেতন ভাতা দেওয়া হলেও গত ৩ বছর ধরে বিআরডিবির কিছু কর্মকর্তার যোগসাজশে তাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে দুই থেকে তিন বছর ধরে বেতন ভাতা না পেয়ে বিআরডিবির কর্মচারীরা মানবেতর জীবনযাপন করছে। তবে ৮ হাজার কর্মীর মধ্যে ৩০০ থেকে ৩৫০ কর্মীকে ঠিকই বেতন দেওয়া হচ্ছে। এটা এক ধরনের বৈষম্য। যে কারণে বাধ্য হয়ে রাজপথে নেমেছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়বো না।

এ বিষয় জানতে চাইলে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক মো. গিয়াস উদ্দিন আহমেদ বলেন, তারা মানবেতর জীবন যাপন করছে। আমরা সেটা বুঝতে পারছি। আমরা আলোচনা করেছি যে বিষয়টি কিভাবে সমাধান করা যায়।

তিনি বলেন, তাদের নিয়োগের আগেই বলা হয়েছিলো যে, প্রকল্প থেকে যদি লাভ আসে তাহলে তাদের বেতন প্রদান করা হবে। ‍কিন্তু অধিকাংশ প্রকল্প লাভের মুখ দেখেনি, যে কারণে বেতন বন্ধ রয়েছে। এটা দীর্ঘদিনের সমস্যা। আমি চাইলে একদিনে সমাধান করতে পারবো না। তবে কিছু কিছু এলাকায় বেতন দেওয়া হচ্ছে।

আন্দোলনকে ভিত্তিহীন উল্লেখ করে মহাপরিচালক বলেন, যারা আন্দোলন করছে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যারা আন্দোলন করছে তাদের কোন সংগঠন নেই। আসলে একটি মহল সুবিধা নেওয়ার জন্য এই আন্দোলন করাচ্ছে। 

 

টাইমস/টিআর/এইচইউ

Share this news on: