রাজশাহীর পদ্মা নদীর তীরে মিথেন গ্যাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। গোদাগাড়ী উপজেলার প্রেমতলীতে কয়েক দিন ধরে নদীর পানি ও তীরের বালু থেকে গ্যাসের বুদবুদ উঠছিল। শনিবার (১ নভেম্বর) তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানকারী রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানী লিমিটেডের (বাপেক্স) কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মিথেন গ্যাসের আশানুরূপ উপস্থিতি নিশ্চিত করেছেন। তারা পরীক্ষার জন্য ৩ বোতল গ্যাসও সংগ্রহ করেছেন।
জানা গেছে, শনিবার দুপুরে বাপেক্সের ব্যবস্থাপক (জিওলজি) ও ভূতাত্ত্বিক জরিপ দলের প্রধান এসএম নাফিফুন আরহাম, উপব্যবস্থাপক ইমামুল ইসলাম এবং পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের (পিজিসিএল) ব্যবস্থাপক রাসেল কবীর প্রেমতলীর পদ্মাপাড় পরিদর্শনে যান। তাদের সঙ্গে ছিলেন গোদাগাড়ীর ইউএনও ফয়সাল আহমেদ ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শামসুল ইসলাম।
বাপেক্সের দলটি গ্যাস ডিটেক্টরের মাধ্যমে পরীক্ষা চালিয়ে মিথেন গ্যাসের উপস্থিতি শনাক্ত করে। পরে তারা বুদবুদের উৎসস্থল থেকে তিন বোতল গ্যাস সংগ্রহ করেন। দলটি নদীর তীর ও সংলগ্ন পানিতে অন্তত ৫০টি স্থান থেকে গ্যাসের বুদবুদ উঠতে দেখেন। এরপর প্রায় ১০০ ফুট দূরে নদীর অপর পাড়েও নৌকাযোগে গিয়ে তারা কয়েকটি স্থানে একই ধরনের বুদবুদ লক্ষ্য করেন।
গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফয়সাল আহমেদ বলেন, বাপেক্স নিশ্চিত করেছে এখানে মিথেন গ্যাসের উপস্থিতি রয়েছে। এ কারণে স্থানটি সংরক্ষিত ঘোষণা করা হয়েছে। সেখানে কাউকে প্রবেশ করতে নিষেধ করা হয়েছে। বাপেক্স পরবর্তী কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
বাপেক্সের ভূতাত্ত্বিক জরিপ দলের প্রধান এসএম নাফিফুন আরহাম বলেন, আমরা ডিটেক্টরের মাধ্যমে মিথেন গ্যাসের আশানুরূপ উপস্থিতি পেয়েছি। বুদবুদের স্থান থেকে তিন বোতল গ্যাস সংগ্রহ করা হয়েছে। এগুলো ল্যাবে পরীক্ষা করা হবে। তারপর জানা যাবে এটি প্রকৃত খনিজ গ্যাস কি না, নাকি গাছপালা ও জৈব পদার্থ পচে তৈরি গ্যাস। পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, এই এলাকায় আগে সিসমিক সার্ভে (ভূকম্পন জরিপ) হয়েছে কি না সেটিও আমরা যাচাই করব। সিসমিক সার্ভের মাধ্যমে মাটির নিচে কোথায় গ্যাস জমে আছে, তা মানচিত্র আকারে বোঝা যায়। যদি আগে এমন জরিপ না হয়ে থাকে, তাহলে নতুন করে করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। পর্যাপ্ত গ্যাসের মজুদ থাকলে ভবিষ্যতে অবশ্যই উত্তোলন করা হবে।
আরপি/টিকে