চট্টগ্রাম বন্দরের বহুল প্রতীক্ষিত বে টার্মিনাল ২০৩০ সালের মধ্যে অপারেশনে যাবে বলে জানিয়েছেন বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মুনিরুজ্জামান।
সোমবার (৩ নভেম্বর) চট্টগ্রাম বন্দর অডিটোরিয়ামে ‘জেনারেল মার্কেট এনগেজমেন্ট কনফারেন্স ফর দ্য বে টার্মিনাল মেরিন ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
রিয়ার অ্যাডমিরাল মুনিরুজ্জামান বলেন, বে টার্মিনালের নকশা ও প্রস্তুতিমূলক কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। দেশি ও বিদেশি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা শেষ হয়েছে। প্রকল্পটি সম্পূর্ণ পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) কাঠামোয় বাস্তবায়ন করা হবে।
টার্মিনালটি চালু হলে দেশের বাণিজ্য, অর্থনীতি ও আমদানি-রপ্তানি খাতে এক নতুন অধ্যায় সূচিত হবে উল্লেখ করে বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, বে টার্মিনাল চালু হলে বড় জাহাজ সরাসরি চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়তে পারবে। এতে রপ্তানি সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে, জাহাজ আগমনের সময় কমবে এবং পণ্যের পরিবহন ব্যয় হ্রাস পাবে। বর্তমানে টার্মিনাল না থাকায় প্রতিদিন প্রায় এক মিলিয়ন ডলার ক্ষতি হচ্ছে বলে তিনি জানান।
রিয়ার অ্যাডমিরাল মুনিরুজ্জামান বলেন, আমরা চাই বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার রিজিওনাল ম্যানুফ্যাকচারিং হাবে পরিণত হোক। এর জন্য ২৪ ঘণ্টা চ্যানেল অপারেশন, বড় জাহাজ চলাচল ও আন্তর্জাতিক মানের দক্ষ অপারেশন নিশ্চিত করা জরুরি। সে লক্ষ্যেই বে-টার্মিনাল নির্মাণ করা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রকৌশল) কমডোর কাওছার রশিদ বলেন, বন্দরের ক্রমবর্ধমান চাপ কমাতে বে-টার্মিনাল এখন সময়ের দাবি। প্রকল্পের আওতায় সাগরে ব্রেকওয়াটার ও নেভিগেশন চ্যানেল নির্মাণ, টার্মিনাল এলাকায় রেল ও সড়ক সংযোগ, কনটেইনার ইয়ার্ড, জেটি ও আধুনিক অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে। ‘বে টার্মিনাল মেরিন ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট’ ২০২৫ সালের এপ্রিল থেকে ২০৩১ সালের জুন পর্যন্ত বাস্তবায়িত হবে। প্রকল্পটি নগরের উত্তর হালিশহরের আনন্দবাজার এলাকায় গড়ে তোলা হবে।
বন্দর কর্তৃপক্ষের হিসাবে, বে টার্মিনাল চালু হলে বছরে অন্তত ৩০ লাখ টিইইউস (২০ ফুট দৈর্ঘ্যের একক) কনটেইনার হ্যান্ডলিং সম্ভব হবে, যা বর্তমান সক্ষমতার প্রায় দ্বিগুণ।
মতবিনিময় সভায় দেশি-বিদেশি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, বন্দর ব্যবহারকারী সংগঠনের নেতা, প্রকৌশলী ও পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা অংশ নেন।
টিএম/টিএ