বাংলাবান্ধা সীমান্তে উদ্বোধন করা হয়েছে দেশের সর্বোচ্চ পতাকাস্ট্যান্ড। ১১৭ ফুট উচ্চতায় এখন প্রতিদিন উড়বে রক্তে অর্জিত গৌরবের প্রতীক লাল-সবুজের পতাকা।
উত্তরের শেষ প্রান্তে অবস্থিত পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা আজ ইতিহাসের সাক্ষী হলো। উদ্বোধন করা হয়েছে দেশের সবচেয়ে উঁচু পতাকাস্ট্যান্ড, যেখানে আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তোলন করা হয়েছে ৩০ ফুট বাই ১৮ ফুট আয়তনের বিশাল জাতীয় পতাকা। জাতীয় সংগীতের সুরে সুরে যখন পতাকা উড়তে শুরু করে, তখন চারপাশে উপস্থিত হাজারো মানুষের চোখে ফুটে ওঠে গর্ব ও আবেগের ঝিলিক।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা, রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা এবং স্থানীয় জনগণ। বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করে পতাকাটি উদ্বোধনস্থলে নিয়ে আসা হয়। ফলক উন্মোচন ও বেলুন উড়িয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয় পতাকাস্ট্যান্ডের। পরে উপজেলা প্রশাসন পতাকা ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব হস্তান্তর করে বিজিবির হাতে।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, দেশের পতাকা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কোনো প্রকার আধিপত্যবাদ মেনে নেওয়া হবে না। ঐক্যবদ্ধভাবে দেশ গড়ার প্রত্যয়ও ব্যক্ত করেন তারা। স্কুলশিক্ষক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমার দেশের পতাকা সবচেয়ে উঁচুতে উড়ছে—এর চেয়ে আনন্দের মুহূর্ত আর কিছু হতে পারে না। আমরা আজ এক ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী।’
এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি যারা আধিপত্যবাদের দৃষ্টিতে তাকাবে, তাদের আমরা রক্ত দিয়ে প্রতিরোধ করব। পৃথিবীর কোনো শক্তিই আমাদের মাথানত করাতে পারবে না।’
পঞ্চগড় ১৮ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘এই গৌরবের পতাকা সমুন্নত রাখতে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ।’ জেলা প্রশাসক সাবেত আলী বলেন, ‘স্থানীয় জনগণের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে নির্মিত দেশের সর্বোচ্চ এই পতাকাস্ট্যান্ড আমাদের গর্বের প্রতীক। এটি শুধু একটি স্থাপনা নয়, স্বাধীনতার চেতনা ও জাতীয় মর্যাদার প্রতিফলন।’
বাংলাবান্ধার আকাশে এখন প্রতিদিনই উড়বে গৌরব, ত্যাগ আর স্বাধীনতার প্রতীক লাল-সবুজের পতাকা।
আইকে/টিএ