আগামী নির্বাচনে বাংলাদেম জামায়াতে ইসলামী কোন জোট গঠন করবে না বলে জানিয়েছেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান। বুধবার (০৫ নভেম্বর) সকালে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ কথা জানান তিনি। এর আগে তিনি সকাল সোয়া ৮টায় ইউএস-বাংলার একটি ফ্লাইটে ওসমানী এয়ারপোর্টে এসে পৌঁছান।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আগামী নির্বাচনে জামায়াত কোন জোট গঠন করবে না, তবে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের দেশপ্রেমিক গণতান্ত্রিক শক্তির সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতা হতে পারে। আর এই সমঝোতার স্বার্থে জামায়াত ঘোষিত সংসদ সদস্য প্রার্থী তালিকায়ও অনেক পরিবর্তন আসতে পারে।
তিনি বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় নির্বাচন হওয়া উচিত। দ্রুত নির্বাচন না হলে দেশে নানা ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে। তবে এর আগে গণভোটের মাধ্যমে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিতে হবে। আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশ নেয়ার কোন সুযোগ নেই। পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন জামায়াতের শ্রেষ্ঠ দাবি। তাই পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন সাধারণ মানুষ সমর্থন দেবে বলে বিশ্বাস করি।
জামায়াত আমির আরও বলেন, গত দেড় দশকে দেশে কোনো নির্বাচন হয়নি। এবার হবে তাৎপর্যপূর্ণ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। এই নির্বাচনের মাধ্যমে দুর্নীতিমুক্ত নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।
সাম্প্রতিক বিদেশ সফরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, বিদেশে প্রবাসীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছে। প্রবাসী বাংলাদেশীরা তাদের বুকের উষ্ণতা ও ভালোবাসা নিয়েই এগিয়ে এসেছেন। তাদের বুকভরা ভালোবাসায় আমি আপ্লুত। তাদের আকাশ সমান প্রত্যাশা এ জাতির কাছে। তারাও জাতি বিনির্মাণে অবদান রাখতে চান। এ জাতির কাছে তাদের পাওয়ার কিছু নেই। তারা একটু সম্মান চান। প্রবাসীদের সীমাহীন অবদান থাকার পরও আমরা তাদের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করতে এখনো পেরে উঠছি না।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, নানাবিধ কারণে ইসির বেঁধে দেয়া ৩০ অক্টোবরের মধ্যে অনেক প্রবাসী বাংলাদেশী ভোটার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারেননি। বিদেশে আমাদের লাখ লাখ প্রবাসী রয়েছেন। সবাই যাতে ভোটার হতে পারেন সে কারণেই আমরা ইসিকে আরো কমপক্ষে ১৫ দিন সময় বাড়িয়ে দেয়ার কথা বলেছি। প্রবাসী বাংলাদেশীরা এদেশের অর্থনীতিকে সচল রাখেন সবসময়। আল্লাহর ইচ্ছায় জামায়াত ক্ষমতায় গেলে প্রবাসী বাংলাদেশীদের সংখ্যার আনুপাতিক হারে সরকারে তাদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা হবে।
আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে আসবে কিনা এক প্রশ্নের জবাবে জামায়াত আমির বলেন, আওয়ামী লীগই তো নির্বাচন চায় না। তারা তো গত দেড় দশক সুযোগ পেয়েও নির্বাচন না করে জোর করে নির্বাচনের নামে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রেখেছিল। এদেশের কোটি কোটি তরুণ গত ১৫ বছর ভোট দিতে পারেনি। জনগণ আওয়ামী লীগের মতো দলকে নির্বাচনে মেনে নেবে না।
সিলেটের ব্যাপারে তিনি বলেন, আমাদের সিলেটে নানা সমস্যা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। বিশেষ করে ঢাকার সাথে সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে চরম দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। এটি দ্রুত সমাধানের জন্য জামায়াতের প্রতিনিধি দল সড়ক ও যোগাযোগ উপদেষ্টার সাথে দেখা করেছেন। এই সমস্যার দ্রত সমাধান চেয়েছেন। এছাড়া সিলেটের নানা সমস্যা নিয়ে সরকারের উচ্চ মহলে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। সিলেটের অধিকারের প্রশ্নে আমরা পিছিয়ে কখনো থাকবো না।
কেএন/টিএ