বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ অভিযোগ করেছেন, সরাসরি নির্বাচনে জয়ের সম্ভাবনা না থাকায় কিছু রাজনৈতিক দল নির্বাচন বিলম্বিত করে ক্ষমতার স্বাদ নিতে চাইছে। তিনি বলেন, ‘এসব দল প্রশাসন, বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন ব্যাংকে নিজেদের লোক বসিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সুযোগ ভোগ করছে, যা গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকারবিরোধী।’
শনিবার (৮ নভেম্বর) রাজধানীর তোপখানা রোড অবস্থিত বিএমএ ভবন অডিটরিয়ামে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) আয়োজিত ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস এবং বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক আলোচনাসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘জনগণের স্বাধীন ভোটাধিকারের পরিবর্তে কিছু দল নতুন ফর্মুলা দিতে চাইছে।
প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (পিআর) পদ্ধতি বা গণভোটের কথা বলা হচ্ছে। যা জনগণ বোঝে না এবং এতে তাদের স্বাধীন ভোটাধিকার খর্ব হবে। গণভোটের কোনো সাংবিধানিক ভিত্তি নেই। জনগণকে বলা হচ্ছে হ্যাঁ বা না বলো।
এতে তাদের স্বাধীন মতপ্রকাশের সুযোগ সীমিত হয়। আমরা সবাই একটি সনদে স্বাক্ষর করেছি যে নির্বাচনের পর সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলে আমরা সেই সনদ বাস্তবায়ন করব। তাহলে আবার গণভোটের প্রয়োজন কোথায়? সব রাজনৈতিক দল একসঙ্গে বসে ২৮ দফা বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছে একটি ‘জুলাই সনদ’ তৈরি করলে সেটিই ৫ আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের যৌক্তিক পরিণতি হতো।’
অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে বিএনপি সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরামের এই সদস্য বলেন, ‘যারা এখন সংস্কার প্রস্তাব দিচ্ছেন, তাদের অনেকে বিদেশ থেকে আমদানীকৃত।
তাদের জনগণের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। এভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা গণতন্ত্রের পরিপন্থী। আমরা চাই, একটি সঠিক, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। জনগণ যদি বাধাহীনভাবে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে পারে, ইনশাআল্লাহ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য বাস্তবায়িত হবে।’
তিনি বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জনগণ ভারতীয় আধিপত্যবাদ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য উদ্যোগ নিয়েছিল।
একইভাবে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট দেশের সাধারণ মানুষ, ছাত্রসমাজ, রাজনৈতিক কর্মী ও ব্যবসায়ীরা আধিপত্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটিয়েছে। দুটি ঘটনাই আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে জনগণের সংগ্রামের বিজয়।’
সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশীদ, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাড. সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার এবং বিএনপির সহ-স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. পারভেজ আলম কাকন প্রমুখ।
ইএ/টিকে