দেশের আইনের প্রতি সেনাবাহিনীর সর্বোচ্চ সমর্থন রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম।
রোববার (৯ নভেম্বর) দুপুরে ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে চানখারপুলে ছয় হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সেনা আইন নিয়ে জানতে চাইলে প্রসিকিউটর বলেন, এটার জবাব আমরা শুরুতেই দিয়েছি। চিফ প্রসিকিউটর স্যারও দিয়েছেন। এ ছাড়া সেনা সদর দপ্তরের প্রথম ও পরবর্তী দিনের সংবাদ সম্মেলন থেকে প্রতীয়মান হয় যে, দেশের আইন এবং আদালতের ওপর সেনাবাহিনীর সর্বোচ্চ সমর্থন রয়েছে। এর প্রমাণ- নির্ধারিত তারিখের দিন তারা নিজেদের কর্মকর্তাদের ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করেছেন। আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে সহায়তা করায় প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে সেনাবাহিনীকে আমরা ধন্যবাদ জানিয়েছি।
আইনি ব্যাখ্যা দিয়ে গাজী এমএইচ তামিম বলেন, দুটো আইনই দেশের স্পেশাল ল’ (বিশেষ আইন)। কিন্তু আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল হলো এমন একটি আইন, যেটি সংবিধানের প্রথম সংশোধনী দিয়ে প্রটেক্টেড (সুরক্ষিত) করা হয়েছে। বলা হয়েছে যে, এই আইন বাংলাদেশের প্রযোজ্য সব আইনের ওপর প্রাধান্য পাবে। সংবিধানের সঙ্গেও যদি এই আইন সাংঘর্ষিক হয় কোনো ক্ষেত্রে, তাহলে সংবিধান সেখানে সাইলেন্স হয়ে যাবে। অর্থাৎ এই আইনটি প্রাধান্য পাবে। এই আইন প্রাধান্য পাবে বলে ৭৩-এ-তে বলে দেওয়া আছে। অতএব এখানে সেনা আইন বা অন্য কোনো আইনে বিচারের সুযোগ নেই। ট্রাইব্যুনালের আইনেই বিচার হবে।
এদিকে, আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনামলে টিএফআই-জেআইসি সেলে গুমের দুই মামলাসহ জুলাই-আগস্টে রাজধানীর রামপুরায় ২৮ হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তাদের হয়ে আইনি লড়াই করতে চান না বলে ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেছেন আইনজীবী ব্যারিস্টার এম সরওয়ার। এ দিন সকালে ওকালতনামা থেকে নিজের নাম প্রত্যাহারের আবেদনের পর তা মঞ্জুর করেন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদের নেতৃত্বাধীন দুই সদস্যের বিচারিক প্যানেল। ফলে ওকালতনামা থেকে তার নাম প্রত্যাহার হয়।
গত ২২ অক্টোবর তিন মামলায় ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠান ট্রাইব্যুনাল। ওইদিন আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী সরওয়ার। এর পরদিনই তিনি সমালোচনার মুখে পড়েন।
উল্লেখ্য, গুমের দুই মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ২৩ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল। রামপুরায় ২৮ হত্যা মামলার শুনানি হবে ২৪ নভেম্বর।
টিজে/এসএন