অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে ব্যাংক ঋণ নেওয়ার নামে ৩১ কোটি ৬৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, তার স্ত্রী ইউসিবি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান রুকমিলা জামানসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে চার মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) দুদকের চট্টগ্রাম কার্যালয়ে মামলাগুলো দায়ের করা হয়েছে।
৮ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে প্রথম মামলার বাদী হয়েছেন সংস্থাটির উপ-পরিচালক মশিউর রহমান। ৯ কোটি ৯৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা আত্মসাৎ মামলার বাদী দুদকের সহকারী পরিচালক মো. মাইনুদ্দিন আহমেদ। ৫ কোটি ২০ লাখ টাকা আত্নসাৎ মামলার বাদী দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক মো. সজীব আহমেদ এবং ৮ কোটি ৫০ লাখ ২৯ হাজার টাকা আত্মসাৎ মামলার বাদী দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক মো. রুবেল হোসেন।
মামলাগুলোর অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে বশির আহমেদের প্রতিষ্ঠান বি অ্যান্ড বি ইলেকট্রনিক্স এর কর্মচারী মোস্তাফিজুর রহমান ও সিন্ডিকেট সদস্য মো. আবুল কালামের সহায়তায় কৌশলে গ্রামের সহজ-সরল কৃষক ও খণ্ডকালীন শ্রমিক নুরুল বশর, মোহাম্মদ আয়ুব, মো. ইউনুছ ও মো. ফরিদুল আলমের ব্যক্তিগত তথ্য (এনআইডি, ছবি ইত্যাদি) সংগ্রহ করে লুটপাট করেছেন।
অভিযোগে বলা হয়, অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গের মাধ্যমে এসব ভুয়া তথ্য ব্যবহার করে অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নামে ব্যাংক হিসাব খুলে ঋণ অনুমোদন করানো হয়। পেরে অনুমোদিত ঋণের ৩১ কোটি ৬৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে আত্মসাৎ করা হয়।
মামলার আসামিরা হলেন- সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এবং তার স্ত্রী রুকমিলা জামান, ইউসিবিএল ও ইউসিবি পিএলসি-এর এক্সিকিউটিভ কমিটির সদস্য এবং সাবেক পরিচালক বশির আহমেদ, এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান ও সাবেক পরিচালক আনিসুজ্জামান চৌধুরী, এভিপি ও অপারেশন ম্যানেজার মো. আব্দুল আউয়াল, এক্সিকিউটিভ অফিসার মো. আবু বকর খান, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার জামাল উদ্দিন, এভিপি জিয়াউল করিম খান এবং একই শাখার ভিপি ও শাখা প্রধান মো. জাহিদ হায়দার।
এছাড়া আরামিট পিএলসি সংশ্লিষ্ট দুই ব্যবসায়ী মডেল ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ মিছাবাহুল আলম, ক্লাসিক ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী ও এজিএম মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, আলোক ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী প্রদীপ কুমার বিশ্বাস, বি অ্যান্ড বি ইলেকট্রনিক্স-এর কর্মচারী মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান এবং দিদারুল আলমকেও আসামি করা হয়েছে।
একইসঙ্গে ইউসিবিএল ও ইউসিবি পিএলসির এক্সিকিউটিভ কমিটির আরও কয়েকজন সাবেক পরিচালক বজল আহমেদ বাবুল (সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান), এম এ সবুর, ইউনুছ আহমদ, নুরুল ইসলাম চৌধুরী ও আসিফুজ্জামান চৌধুরীর নামও মামলার আসামি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ১৮৬০-এর ৪০৬/৪০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১০৯ ধারাসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারা ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২-এর ৪(২)(৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
আরপি/টিকে