জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন এবং জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটসহ পাঁচ দফা দাবিতে নতুন কর্মসূচি দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলনসহ আটটি দল। তিন দিনের কর্মসূচির মধ্যে ফ্যাসিবাদী শক্তির নাশকতা প্রতিরোধ এবং জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে সমাবেশ রয়েছে। এছাড়া দাবি আদায় না হলে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সামনে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান কর্মসূচিরও আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছে।
বৈঠকের পর নতুন কর্মসূচির বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন ৮টি ইসলামপন্থী দলের নেতারা।
বুধবার (১২ নভেম্বর) দুপুর ১টায় রাজধানীর পল্টনে আল-ফালাহ মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে কর্মসূচি ঘোষণা করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।
এর আগে দলগুলোর শীর্ষস্থানীয় নেতারা বৈঠক করেন। দলগুলো হলো- বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস, নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি। বৈঠকে কর্মসূচির বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত হয় সেগুলো ঘোষণা করেন অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) ফ্যাসিবাদী শক্তির নাশকতা ও অপতৎপরতা প্রতিরোধে ৮ দলের নেতৃবৃন্দ সর্বস্তরের জনশক্তিসহ দেশব্যাপী রাজপথে অবস্থান করবে। একই সাথে ফ্যাসিবাদ-বিরোধী সকল শক্তিকে আমরা রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) পাঁচ দফা দাবিতে দেশব্যাপী জেলা ও মহানগর পর্যায়ে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি জানান, রোববার (১৬ নভেম্বর) বেলা ১১টায় আন্দোলনরত ৮ দলের শীর্ষ নেতাদের বৈঠক হবে। বৈঠক শেষে দুপুর সাড়ে ১২টায় আল-ফালাহ মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করবেন। তার আগে দাবিগুলো মেনে নেয়া না হলে ওই সংবাদ সম্মেলন থেকে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সামনে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
এদিকে গতকাল মঙ্গলবার পাঁচ দফা দাবিতে চার মাস ধরে আন্দোলন থাকা আটটি দল সমাবেশ করেন। রাজধানীর পল্টনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই গণভোট আয়োজনের দাবির ব্যাপারে অনড় অবস্থান ব্যক্ত করেন নেতারা। গণভোটের মাধ্যমে জুলাই সনদের আইনিভিত্তি দেওয়া না হলে দেশে সংসদ নির্বাচনও অনুষ্ঠিত হবে না বলে সতর্ক করেন তারা।
জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেন, যারা জুলাই বিপ্লব মানবেন না, তাদের জন্য ছাব্বিশ সালে কোনো নির্বাচন নাই। ছাব্বিশের নির্বাচন দেখতে হলে আগে জুলাই বিপ্লবের স্বীকৃতি লাগবে। আর জুলাই বিপ্লবের স্বীকৃতি দিতে হবে। জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিতেই হবে। এই আইনি ভিত্তি ছাড়া কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠান হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
দলগুলোর পাঁচটি দাবি হলো—
১. জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি এবং নভেম্বরের মধ্যেই গণভোট আয়োজন;
২. আগামী জাতীয় নির্বাচনে উভয়কক্ষে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি চালু;
৩. সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করে অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন;
৪. আওয়ামী লীগ সরকারের জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা,
৫. জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা।
এসএন